নিলাম ঘরে কলকাতার চোখের মণি

কলকাতা ফ্রাঞ্চাইজি সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও বরুণ চক্রবর্তী এই চারজন খেলোয়াড়কে রেখে বাকিদের ছেড়ে দিয়েছে। সুতরাং ইতোমধ্যে তাঁরা ছক কষা শুরু করে দিয়েছে কাদেরকে তাঁদের দলে প্রয়োজন আগামী মৌসুমের জন্যে কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে। ২০২১ আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে মাত্র ২৭ রানে শিরোপা হারের ক্ষত পূরণে আরেকটি শিরোপা জয়ী দলই করতে চাইবে।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) , বিশ্ব ক্রিকেটে ফাঞ্চাইজ ভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোর মধ্যে সর্বাধিক আলোচিত একটি টুর্নামেন্ট বললে খুব একটা ভুল বলা হয়ে যাবে না। অর্থ, যশ, বিনোদন সব মিলিয়ে আইপিএল যেন একটি কমপ্লিট প্যাকেজ। আইপিএল ২০২২ মৌসুমকে কেন্দ্র করে এবার বসতে চলেছে মেগা-অকশন। দুইটি নতুন দল যুক্ত হওয়ার কারণে এবার আইপিএলে প্রত্যেকটি দল ঢেলে সাজানোর সুযোগ পাবে নিজেদেরকে।

যেহেতু নতুন দুইটি দল যুক্ত হয়েছে সেহেতু তাঁদের জন্যে অধিকাংশ খেলোয়াড়দেরকে সহজলোভ্য করার তাগিদেই আইপিএল গভর্নিং বডি পূর্বের আট দলকে সর্বোচ্চ চারজন খেলোয়াড় রেখে বাকিদেরকে ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ করে নিয়েছে। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দলগুলো মোট ২৭ জন খেলোয়াড়কে রেখে বাকি সবাইকে নিলামের জন্যে ছেড়ে দিয়েছে। ব্যতিক্রম নয় কোলকাতা নাইট রাইডার্সও।

কলকাতা ফ্রাঞ্চাইজি সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও বরুণ চক্রবর্তী এই চারজন খেলোয়াড়কে রেখে বাকিদের ছেড়ে দিয়েছে। সুতরাং ইতোমধ্যে তাঁরা ছক কষা শুরু করে দিয়েছে কাদেরকে তাঁদের দলে প্রয়োজন আগামী মৌসুমের জন্যে কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে। ২০২১ আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে মাত্র ২৭ রানে শিরোপা হারের ক্ষত পূরণে আরেকটি শিরোপা জয়ী দলই করতে চাইবে। আজকে তাই থাকছে তাঁদের তালিকায় থাকা সম্ভাব্য পাঁচ খেলোয়াড়দের নিয়ে আলোচনা।

  • নিতিশ রানা (ভারত)

২০১৮ সালে কোলকাতার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন নিতিশ রানা। এরপর থেকে প্রায় প্রতিটি মৌসুমে ৩০০ এর অধিক রান করে নিজেকে দলে একজন অন্যতম নির্ভরযোগ্য সদ্যসে পরিণত হয়েছেন তিনি। গেলো মৌসুমেও তিনি ১২২ স্ট্রাইকরেটে তিনি ৩৮৩ রান করেছিলেন কোলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে।

কলকাতার ১০০ তম আইপিএল ম্যাচ জয়ে ব্যাট হাতে ৫৬ বলে ৮০ রানের এক দূর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন নিতিশ রানা। যার বদৌলতে দশ রানের জয় পেয়েছিলো কোলকাতা সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে। কোলকাতা নাইট রাইডার্সের নিজেদের মিডেল অর্ডারের এই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে নিশ্চয়ই আবার কিনে নিতে চাইবে ২০২২ মেগা-অকশন থেকে।

  • মোহাম্মদ শামি (ভারত)

মোহাম্মদ শামির আইপিএল ক্যারিয়ারের শুরু হয় কোলকাতা নাইট রাইডার্স দিয়ে। সেই ২০১৩ সালে। যদিও সেটা ছিল খুব স্বল্প সময়ের। তারপর সে পাড়ি জমান দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে। সেখান থেকে ২০১৮ সালের নিলাম থেকে তাঁকে কিনে নেয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

গেল মৌসুমে পাঞ্জাবের হয়েই খেলেছেন মোহাম্মদ শামি। পাঞ্জাবের হয়ে এখন পর্যন্ত শামি মাত্র ৪৬ ম্যাচ থেকে উইকেট নিয়েছেন ৬১টি। তাঁর বোলিং দক্ষতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ খুব একটা নেই। তাছাড়া অভিজ্ঞতাও রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ। কোলকাতার পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যে তাঁকে দলে ভেড়ানোর যথেষ্ট পরিমাণ চেষ্টা করতে পারে কোলকাতা ফ্রাঞ্চাইজি।

  • নিকোলাস পুরান (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

২০২০ সালে বেশ দারুণ এক আইপিএল মৌসুম কাটিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান মারকুটে ব্যাটার নিকোলাস পুরান। ১৪ ম্যাচে তিনি রান করেছিলেন ৩৫৩। তাঁর স্ট্রাইকরেট টাও ছিলো বেশ প্রসংশনীয় ১৬৯.৭১। তবে খুবই হতাশাজনক এক মৌসুমই কেটেছে পুরানের ২০২১ সালের আইপিএলে।

পাঞ্জাব কিংসের হয়ে কেবলমাত্র ৮৫ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন পুরান ১২ ম্যাচ থেকে। কিন্তু অপরদিকে ২০২১ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ব্যাটটা ভালই চালিয়েছিলেন পুরান। ১৬৩.৩৫ স্ট্রাইকরেটে ২৬৩ রান তুলেছিলেন তিনি। সুতরাং দলের লোয়ার মিডেল অর্ডারে তাঁর মতো একজন দ্রুত রান তুলতে সক্ষম একজন ব্যাটারকে দলে ভেড়াতে মড়িয়া হয়ে থাকবে কোলকাতা নাইট রাইডার্স।

  • ক্রিস লিন (অস্ট্রেলিয়া)

কোলকাতার জার্সিতে বেশ ভালই পারফর্ম করা ক্রিস লিন ২০১৯ মৌসুমে ছেড়েছিলেন কোলকাতা শিবির তারপর তিনি যোগ দিয়েছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ডেরায়। তাঁর আর সুনীল নারাইনের ওপেনিং জুঁটি প্রশংসিত হয়েছিল বেশ কয়েকবার। গেলো মৌসুমেও লিন ছিলেন মুম্বাই শিবিরে কিন্তু প্রথম ম্যাচে ৪৯ রান করা সত্ত্বেও তাঁকে পরবর্তীতে আর দেখা যায়নি একাদশে। কিন্তু আইপিএলে তাঁর পরিসংখ্যান যথেষ্ট পরিমাণ সন্তোষজনক।

প্রায় ১৪০ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে তিনি ১৩২৯ রান করেছেন মাত্র ৪২টি আইপিএল ম্যাচ থেকে। তাছাড়া হার্ডহিটার ব্যাটার ক্রিস লিন প্রথম দিকের পাওয়ারপ্লের সুবিধা নিতে বেশ পটু। তাঁকে আবারো দলে চাইবে কোলকাতা নিঃসন্দেহে।

  • জশ হ্যাজেলউড (অস্ট্রেলিয়া)

২০২১ বছরটা বেশ দূর্দান্ত কেটেছে অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার জশ হ্যাজেলউডের। তিনি প্রথমে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে জিতেছেন আইপিএল শিরোপা এরপর নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পেয়েছেন প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাদ। চেন্নাইকে চতুর্থ আইপিএল শিরোপা এনে দিতে বল হাতে যথেষ্ট ভুমিকা রেখেছিলেন হ্যাজেলউড।

নয় ম্যাচে চেন্নাইয়ের হয়ে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। তবে তিনি ব্যাটারদের রানা চাকা স্তিমিত করে রেখেছিলেন পুরো আইপিএল জুড়েই। বলের গতিবিধি পরিবর্তনে বেশ দক্ষ এই বোলার কোলকাতার শিরোপা জয়ের কান্ডারি হতে পারে এবং তাই হয়ত নিলামের দিন তাঁর দিকেও নজড় থাকবে কোলকাতা কর্তৃপক্ষের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...