কাঠগড়ায় আইপিএলও!

ভারতীয় খেলোয়াড়েরা জাতীয় দলের কর্তব্য থেকে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল) বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। বক্তব্যটি ভারতীয় সাবেক খেলোয়াড় ও বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কপিল দেবের। সম্প্রতি টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলকে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এমন মন্তব্য করেছেন কপিল দেব।

ভারত তাঁদের নিজেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে পরপর দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হার দিয়ে। বেশ বড় ব্যবধানে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্টে থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকা ভারত দলের বাদ পড়া নিশ্চিত হয় আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে। নিউজিল্যান্ড উক্ত ম্যাচ জয় পাওয়ায় এক ম্যাচ হাতে থাকতেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় বিরাট কোহলির দল।

‘যখন খেলোয়াড়েরা জাতীয় দলের থেকেও আইপিএলএ খেলাকে গুরুত্ব দেয় তখন আমাদের আর কি বলার থাকে? খেলোয়াড়দের উচিৎ জাতীয় দলে গর্বের সাথে খেলা। আমি তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অবগত নই, তাই আমি বেশি কিছু বলতে পারছি না।’, গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন অভিমত প্রকাশ করেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক কপিল দেব।

যদিও ভারতের কোন ম্যাচের সাথে আইপিএলের কোন ম্যাচের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তবুও করোনা মহামারীর পরিস্থিতির কারণবশত আইপিএলের দ্বিতীয় পর্ব শেষ হতে হতে ঘনিয়ে এসেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। খেলোয়াড়রা বিনা বিরতিতেই খেলতে এসেছিল বিশ্বকাপের মঞ্চে।

কপিল দেব আরো বলেন, ‘আমি মনে করি খেলোয়াড়দের জাতীয় দলকে প্রাধান্য আগে দেওয়া উচিৎ তারপর ফ্রাঞ্চাইজি দলকে। আমি বলছি না যে আইপিএলে খেলো না, কিন্তু বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার দায়িত্ব নিজেদের ক্রিকেট ক্যালেন্ডারকে সঠিকভাবে সাজানো। এই টুর্নামেন্টে আমরা যেই ভুলগুলো করেছি সেগুলো আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষা।’

প্রায় ছয় মাস যাবৎ বায়োবাবলে থাকার মানসিক অবসাদের কথা উল্লেখ করেছিলেন ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরা ও সদ্য সাবেক বোলিং কোচ ভরত অরুণ। এপ্রিলে শুরু হওয়া আইপিএল সমাপ্ত হয় অক্টোবরের মধ্যভাগে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু মাত্র সপ্তাহখানেক আগে। দুইজনই জানিয়েছে বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টের আগে বিরতির বড্ড দরকার ছিলো। এই মানসিক অবসাদই কারণ ভারতের বড় দুই হারের এমনটাই মত দিয়েছিলেন ভরত অরুণ।

কপিল দেবও বলেছেন বিশ্বকাপের আগে বায়োবাবেল থেকে একটা বিরতির প্রয়োজন ছিল পুরো দলের। এছাড়াও তিনি বলেন, ‘এখন ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। এখনই সময় নতুন পরিকল্পনা সাজানোর। এমন নয় যে বিশ্বকাপের সাথে ভারতীয় ক্রিকেটও শেষ হয়ে গেছে।’

২০১২ সালের পর এবারই প্রথম বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ে গেলো ভারত। কপিল দেব এই বিদায়ের জন্যে সকলের দায় আছে বলে মনে করেন। এছাড়াও তিনি মনে করিয়ে দেন যতক্ষণ পর্যন্ত না একজন খেলোয়াড় একটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জিতছেন ততক্ষণ পর্যন্ত সেই খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত সাফল্যের কোন মূল্য থাকে না এবং প্রতি মুহূর্তেই তাঁর খারাপ পারফর্মেন্সের জন্য তাঁকে সমালোচনার শিকার হতে হবে, যেটা স্বাভাবিক। বিসিসিআই সাবেক এই তারকার পরামর্শ অনুসরণ করে হয়ত নতুন করে সাজানোর চেষ্টা চালাবেন নিজেদের ক্রিকেট ক্যালেন্ডারের যাতে করে এমন পরিস্থিতির শিকার দ্বিতীয় দফা ভারত জাতীয় দলকে না হতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link