ইউরোপিয়ান মঞ্চে সেরার দৌড়

প্রতিবার বড় টুর্নামেন্টের আগে ইনজুরি কিংবা নানা সমস্যা মিলিয়ে বড় তারকাদের অনুপস্থিতি দেখা যায়। তাতে করে কিছুটা হলেও রঙ হারায় বড় বড় আসরগুলো। তবে ব্যতিক্রম এবারের ইউরো ২০২০। অবসর ভেঙে ফেরা ইব্রাহিমোভিচ এবং সার্জিও রামোস বাদে খেলছেন সকল তারকা।

প্রতিবার বড় টুর্নামেন্টের আগে ইনজুরি কিংবা নানা সমস্যা মিলিয়ে বড় তারকাদের অনুপস্থিতি দেখা যায়। তাতে করে কিছুটা হলেও রঙ হারায় বড় বড় আসরগুলো। তবে ব্যতিক্রম এবারের ইউরো ২০২০। অবসর ভেঙে ফেরা ইব্রাহিমোভিচ এবং সার্জিও রামোস বাদে খেলছেন সকল তারকা।

তাতে করে দর্শকদের উত্তেজনার পালে যেমন হাওয়া লেগেছে তেমনি বাড়িয়ে দিয়েছে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হবার প্রতিযোগিতা। আসুন দেখে নেয়া যাক কারা হতে পারেন এবারের ইউরোর সেরা খেলোয়াড়।

  • ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল)

জুভেন্টাস শিরোপাহীন থাকলেও রোনালদো কিন্তু গোল করা থামাননি, ২৯ গোল করে একাই টেনেছেন জুভেন্টাসকে। পাশাপাশি নেশন্স লিগেও ছিলেন সমান উজ্জ্বল, পর্তুগালের জার্সিতে গোল পেয়েছেন নিয়মিতই। ১০৪ গোল করা রোনালদো আর মাত্র ৬ গোল পেলেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়বেন। তখন তাঁর পেছনে পড়বেন ইরানের আলী দাইয়ি।

রোনালদো এরই মধ্যে ইউরোর মূল পর্বে সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়া ফুটবলার। এটি হবে দেশের হয়ে তাঁর ইউরোপসেরা হওয়ার পঞ্চম অভিযান। ৩৬ বছর বয়সী রোনালদোর এটাই সম্ভবত শেষ ইউরো, নিজের শেষটাকে তাই এই কিংবদন্তি রাঙিয়ে তুলতে চাইবেন নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে পর্তুগালকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া রোনালদোই তাই টুর্নামেন্ট সেরা হবার সবচেয়ে বড় দাবিদার।

  • কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স)

২০১৮ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর ব্যালন ডি’অরে গোল্ডেন বয়ের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল কিলিয়ান এমবাপ্পেকে। কারণ, বয়স ১৯ হলেও দক্ষতায় তাঁকে তখন আর তরুণদের মধ্যে রাখতে রাজি হননি পুরস্কারদাতারা। সেই এমবাপ্পে তো এখন মহাতারকাই।

পিএসজি কিংবা ফ্রান্স জার্সি বদল হলেও এমবাপ্পের গোল করা থামেনি, গতির ঝড় তুলে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছেন বারবার। মেসি-রোনালদোদের গোধূলি বেলায় তাদের ম্লান করে নিজের রাজত্ব শুরুর জানান দেবার জন্য ইউরোর চেয়ে ভালো সুযোগ বোধহয় আর পাবেন না এমবাপ্পে।

  • আন্তোনিও গ্রিজম্যান (ফ্রান্স)

গত ইউরোর ট্র্যাজিক হিরো আন্তোনিও গ্রিজম্যান। পুরো টুর্নামেন্ট দুর্দান্ত খেলেও ফাইনালে এডার নামক বাঁধার কাছে পরাজিত হন। সান্ত্বনাস্বরূপ টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব জেতেন সেবার। পরে বিশ্বকাপ জিতলেও ইউরোর ক্ষতটা যায়নি গ্রিজম্যানের, সেই ক্ষততে প্রলেপ দেবার মোক্ষম সময় এবার।

তবে গত তিনবছরে বদলে গেছে অনেককিছুই, তাকে পেছনে ফেলে ফ্রান্স দলের মূল তারকা এখন এমবাপ্পে। তবে এবছরের শুরু থেকেই গ্রিজম্যান আছেন দুরন্ত ফর্মে। ফ্রান্সের জার্সিতে গোল পেয়েছেন শেষ দুই ম্যাচেই। দলের মূল তারকা যে তিনিই, কাতার বিশ্বকাপের আগে সমালোচকদের সেটা বুঝিয়ে দিতে এবারের ইউরো গ্রিজম্যানের জন্য সুবর্ণ সুযোগ।

  • হ্যারি কেইন (ইংল্যান্ড)

এবারের ইউরোর সবচেয়ে তারুণ্যনির্ভর দল ইংল্যান্ড। এই তারুণ্যের পতাকা উড়ানো ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক হচ্ছেন হ্যারি কেইন। গত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা কেইনই থ্রি লায়ন্সদের গোলের মূল ভরসা। স্পার্সদের জার্সি গায়ে সর্বশেষ মৌসুমটা কাটিয়েছেন স্বপ্নের মতো।

ইনজুরির কারণে কিছু ম্যাচ মিস করলেও ২৩ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরো ১২টি। আগেই জানিয়েছেন এ মৌসুম শেষেই ছাড়লেন টটেনহ্যাম, দলবদল শুরুর আগে ট্রান্সফার মার্কেটে ঝড় তোলার জন্য এবারের ইউরোই সেরা সুযোগ কেইনের।

  • রোমেলু লুকাকু (বেলজিয়াম)

জুভেন্টাসের টানা এক দশকের আধিপত্য গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরি আ’র শিরোপা জিতেছে ইন্টার মিলান। ২৪ গোল আর ১০ অ্যাসিস্ট করে সেই যাত্রার মূল নায়ক রোমেলু লুকাকু। বেলজিয়ামের ইতিহাসের সবচেয়ে সোনালি প্রজন্মটা এখনো জিততে পারেনি কিছু, গত বিশ্বকাপে আশা জাগিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে সেমি ফাইনালের দুয়ার থেকেই।

বেলজিয়াম ব্যর্থ হলে প্রতিবারই সমালোচকদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন লুকাকু। তাই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার মিশনই এবার লুকাকুর। সমালোচকদের মোক্ষম জবাব ফিরিয়ে দিতে এবারের ইউরো নিজের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার বিকল্প নেই লুকাকুর কাছে।

এদিকে বেলজিয়ামের আরেক তারকা ইডেন হ্যাজার্ডের সাম্প্রতিক ফর্ম ভাল না। তবে, বড় আসরে তিনি যে জ্বলে উঠতে পারেন – সেটাও সবারই জানা। ফলে তাঁর দিকেও নজর রাখতে হবে। আবার খুব আড়ালে থাকবেন না বার্সেলোনার ডাচ সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ঙও।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...