এবার সাদায় রঙিন হবেন রাহানে

ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল শুরু হবে ৭ জুন। অস্ট্রেলিয়া আর ভারত মধ্যকার সেই ফাইনালের জন্য সবার আগে দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ১৫ সদস্যের ঘোষিত সেই দলে সবচেয়ে বড় চমক হয়ে এসেছেন আজিঙ্কা রাহানে। অর্থাৎ প্রায় ১৫ মাস পর আবারো ভারতের সাদা জার্সি গায়ে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ভারতীয় এ ক্রিকেটার।

ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল শুরু হবে ৭ জুন। অস্ট্রেলিয়া আর ভারত মধ্যকার সেই ফাইনালের জন্য সবার আগে দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ১৫ সদস্যের ঘোষিত সেই দলে সবচেয়ে বড় চমক হয়ে এসেছেন আজিঙ্কা রাহানে। অর্থাৎ প্রায় ১৫ মাস পর আবারো ভারতের সাদা জার্সি গায়ে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ভারতীয় এ ক্রিকেটার।

রাহানে ভারতের হয়ে সর্বশেষ টেস্ট টেস্ট খেলেছেন গত বছরের জানুয়ারিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ টেস্টের সে সিরিজের পরই মূলত টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ে যান এ ব্যাটার। তবে রঞ্জি ট্রফি আর আইপিএলে রাহানের ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দ আর অগ্রাহ্য করতে পারেননি ভারতীয় নির্বাচকরা।

অবশ্য মিডল অর্ডারে ইনজুরির কারণে শ্রেয়াস আইয়ার আর ঋষাভ পান্তের দলে না থাকায় একজন অভিজ্ঞ ব্যাটারকে দলে ভেড়ানোই লাগতো ভারতকে। সেই ভাবনায় বহুদিন বাদে আবারো লাল বলের ক্রিকেটে জায়গা পেলেন আজিঙ্কা রাহানে।

রাহানে অবশ্য চলতি মৌসুম জুড়েই দারুণ ফর্মে রয়েছেন। লাল বল কি সাদা বলের ক্রিকেট, ফরম্যাট ভিন্ন হোক— রাহানে ব্যাট হাতে মুনশিয়ানা দেখাচ্ছেন একেবারে ভিন্ন রূপেই। এবারের রঞ্জি ট্রফি খেলেছিলেন মুম্বাইয়ের হয়ে। দলকে নকআউট পর্বের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেননি। কিন্তু ব্যাট হাতে গোটা টুর্নামেন্টেই ছিলেন উজ্জ্বল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩৪ রান আসে রাহানের ব্যাট থেকেই। যার মধ্যে দুটি সেঞ্চুরিও ছিল। সেই সাথে ব্যাট হাতে কতটা ধারাবাহিক ছিল তা বুঝা যায়, ৫৭.৬৩ ব্যাটিং গড়ে।

লঙ্গার ভার্শন ক্রিকেটে না হয় নিজেকে প্রমাণ করলেন। তবে নিজের আমূলে বদলে একদম ভিন্ন এক রূপে আবির্ভূত হন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আর তার জন্য বেছে নেন আইপিএলের মঞ্চ। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে প্রথম দুই একটা সুযোগ পেলেন। কিন্তু যখন সুযোগ পেলেন, তখন নিজেকে মেলে ধরলেন দুর্দান্তভাবে।

শুরুটাই করলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে ২৭ বলে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। এরপরের ম্যাচগুলোতেও রাহানের ব্যাটিংয়ে সেই ঝড়ের রেশ রয়ে গেল। ১৯ বলে ৩১, ২০ বলে ৩৭ এরপর আবারো পঞ্চাশ পেরোনো আরেকটি ইনিংস।

এবার ছাপিয়ে গেলেন আগের ইনিংস গুলোকেও। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে খেললেন ২৯ বলে ৭১ রানের একটি ইনিংস। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত খেলা ৫ ম্যাচে দুই ফিফটিতে ২০৯ রান! গড়টা ৫২.২৫। আর স্ট্রাইকরেটটা আরো ইর্ষণীয়, প্রায় দুইশো, ১৯৯.০৪!

আইপিএলের পারফর্ম্যান্স দেখে টেস্ট দলে সুযোগ—এমন প্রশ্নের উদয় হতেই পারে। তবে পরিসংখ্যান আর পরিস্থিতি দুটোই রাহানের হয়ে কথা বলছে। ফরম্যাটের ভিন্নতা আসলে, সাম্প্রতিক সময়ে রাহানের ব্যাটে তেমন কোনো ভিন্নতা আসেনি। রঞ্জি ট্রফিতেও যিনি ছিলেন সফল, সেই তিনি আইপিএলে এসেও ছোটাচ্ছেন রানফোয়ারা।

তাছাড়া, মিডল অর্ডারে বড় মঞ্চে দুই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারের অনুপস্থিতিতে রাহানে ছাড়া অভিজ্ঞ ব্যাটারই বা কে রয়েছেন এই মুহূর্তে। তাই রাহানেকে দলে অন্তর্ভূক্তি করতে তেমন ভাবতে হয়নি নির্বাচকদের।

টেস্ট ক্যারিয়ারে আর ৬৯ রান যোগ করলেই ৫০০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছে যাবে আজিঙ্কা রাহানে। আসন্ন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে নিশ্চয় নিজের প্রত্যাবর্তনটা এমন একটা মাইলফলকেই রাঙাতে চাইবেন এ ব্যাটার।

তবে তার চেয়ে বড় ব্যাপার হবে, যদি ফাইনালের মঞ্চে ভারত সেই শিরোপাটা জিততে পারে। ব্যক্তিগত অর্জন, সাথে টেস্ট ক্রিকেট রাজত্বে ভারতের সিংহাসনে বসা—এমন কিছুর দিকেই নিশ্চয় চোখ থাকবে রাহানের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...