‘ঘাড় ধরে’ তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে রমিজকে

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে (পিসিবি) সরকারের প্রভাবটা প্রকাশ্য। বিশ্বকাপ জয়ী পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবার পরেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন রমিজ রাজা। ইমরান খানকে হটিয়ে শাহবাজ শরীফের ক্ষমতা গ্রহণের পরেই ধারণা করা হচ্ছিল পদচ্যুত হচ্ছেন রমিজ।

তবে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই রমিজকে সরিয়ে দেননি সাহবাজ। কিছুটা সময় নিয়ে ১৫ মাস পিসিবির দায়িত্ব পালনের পর রমিজ রাজাকে সরিয়ে নাজাম শেঠিকে পিসিবি চেয়ারম্যান মনোনীত করেন শাহবাজ। তবে নিজের পদ হারানোর প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষুদ্ধ রমিজ।

বরখাস্ত হবার পর চুপ থাকলেও সাপ্তাহ না পেরোতেই নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রমিজ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তার পদচ্যুত হবার প্রক্রিয়া নিয়ে। তাঁর সাথে বাজে ব্যবহার করা হয় বলেও জানান রমিজ। রমিজ বলেন, ‘তারা ক্রিকেট বোর্ডে এক প্রকার আক্রমণই করেছে। এমনকি তারা আনার জিনিসপত্র গুলো নেবার সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি। সকাল ৯ টার দিকে ১৭ জনের একটি দল অফিসে আসে। তাদের ভাব দেখে মনে হয়েছিল, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির লোকেরা অফিস তল্লাশি করতে এসেছে।’

তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া নাজাম শেঠিরও কঠোর সমালোচনা করেছেন রমিজ। নাজাম শেঠি আর তার ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেটের প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই বলেও মনে করেন এই পাকিস্তান কিংবদন্তি। রমিজ বলেন, ‘তাদের ক্রিকেটে কোনো আগ্রহ নেই। ক্রিকেট বোর্ড তাদের ক্ষমতার জায়গায় বসায়। তারা চায়, মানুষ তাদের সামনে নত থাকবে।’

মেয়াদ শেষ হবার আগেই বরখাস্ত হওয়ায় নাখোশ রমিজ। এ নিয়েও ক্ষোভ ঝেড়েছেন তিনি, ‘একজন ব্যক্তিকে নিয়ে আসতে আপনারা ক্রিকেট বোর্ডের সংবিধানই পাল্টে ফেললেন। নাজাম শেঠিকে নিয়ে আসতে সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। এমনটা আমি দুনিয়ার আর কোথাও দেখি নি।’

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি হিসেবে মোটামুটি সফলই বলা যায় রমিজকে। মাঠ এবং মাঠের বাইরে ভাল ভাবেই চলছিল পাকিস্তান ক্রিকেট। পাকিস্তানের মাঠে নিয়মিত আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়েছেন এই রমিজ রাজা। এমন পরিস্থিতিতে বরখাস্ত হওয়া নিয়ে ক্ষুদ্ধ হবেন রমিজ এটা অনুমিতই ছিল।

রমিজ বলেন, ‘ক্রিকেট মৌসুমের মাঝখানে যখন অনেক দল পাকিস্তানে আসছে তখন আপনারা এমন কান্ড করলেন। এরপর প্রধান নির্বাচকও বদলে ফেললেন। নির্বাচক হিসেবে মোহাম্মদ ওয়াসিম ভাল না খারাপ সেটা বড় কথা নয়। একজন সাবেক টেস্ট ক্রিকেটারকে শ্রদ্ধার সাথে বিদায় দিতে হবে।’

নিজের সময়কালে পাকিস্তানের মাঠের ক্রিকেটের উন্নতির অনেকটা বাহবা রমিজ পেতেই পারেন। সাদা বলের ক্রিকেটে অনেকটাই বদলে গেছে পাকিস্তান। রমিজের সময়কালে অনুষ্ঠিত দুইটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে খেলে পাকিস্তান। এছাড়াও মাঠের বাইরে ক্রিকেটারদের বেতন ভাতা নিয়ে কিছু সমালোচনা থাকলেও পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়মিত আয়োজিত হয়েছে রমিজের সময়কালে।

বর্তমান চেয়ারম্যান নাজাম শেঠির আচরণে ইতোমধ্যেই বেশ চটেছেন রমিজ, ‘নাজাম শেঠি রাত সোয়া দুইটায় টুইট করে বলল – রমিজ বরখাস্ত হয়েছে। আমি টেস্ট ক্রিকেট খেলেছি,ক্রিকেটই আমার জায়গা। এটা দেখতেও খুব খারাপ লাগে যে ক্রিকেটের বাইরের লোকেরা এসে এমন ভাব করার চেষ্টা করছে যে তারাই ত্রাতা। তাদের আচরণ অ-ক্রিকেটীয়। তারা এখানে আসেই পাদপ্রদীপের আলোয় থাকতে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link