অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট শিকার করেছেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এই নিয়ে ২৬ বারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে ছাড়িয়ে গেলেন অনিল কুম্বলকে। ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার পাঁচ উইকেট শিকারের রেকর্ড এখন তাঁর দখলে।
পিচ ব্যাটারদের জন্য খানিকটা সহায়ক হলেও অশ্বিন বারবারই ভীতি ছড়িয়েছেন প্রতিপক্ষ শিবিরে। প্রথম দিনে ক্রমশই ভয়ংকর হয়ে উঠা ট্রাভিস হেডকে ফিরিয়েছেন। এরপর দ্বিতীয় দিনে অশ্বিনের স্পিন বিষে একে একে নাকাল হয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স ক্যারি, মিশেল স্টার্ক, নাথান লিঁও, টড মারফি। মাত্র ৫৫ টেস্টেই ২৬বার পাঁচ উইকেট শিকার করে অশ্বিন ছাড়িয়ে গেলেন কুম্বলকে। এই নিয়ে এবারের বোর্ডার – গাভাস্কার ট্রফিতে তাঁর উইকেট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ২৪।
দারুণ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও অবশ্য পা মাটিতেই রাখছেন এই তারকা। তিনি বলেন, ‘সবগুলো স্পেলই সমান আমার কাছে। আমি সিরিজের সবগুলো পিচেই বোলিং উপভোগ করেছি। বিশেষ করে যেমন দিল্লিতে পাঁচ কিংবা ছয় উইকেট পাইনি কিন্তু বল খুব সুন্দর যাচ্ছিল। আমি নিজের বোলিংয়ে আরো বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছি, যেমন, বল রিলিজ করায়, কব্জির মোচড়ে। এ পরিবর্তনগুলো আনার কারণ হলো যেন পিচ থেকে আরো বেশি সুবিধা আদায় করতে পারি। বলকে আরো বেশি হাওয়ায় ভাসাতে চেয়েছি যেমনটা সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে করেছিলাম।’
টেস্টে ৪৭২ উইকেট নিয়ে অশ্বিন বর্তমানে ভারতের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। সামনে হাতছানি দিয়ে ডাকছে শীর্ষস্থানে উঠার সুযোগ। ৩৬ বছর বয়সী এই অফস্পিনার অবশ্য উইকেট সংখ্যা নিয়ে ভাবতে চান না। তিনি জানান, ‘আপনি মাত্র তিন উইকেট নিয়ে বোলিং শেষ করে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যেতে পারেন। বেশি শিকার করলে অবশ্যই খুশি হই, তবে অনেক সময় উইকেট না পেলেও খুশি থাকতে হয়।’
অশ্বিনের মতে ম্যাচে ভারত কেমন করবে সেটা নির্ভর করবে তৃতীয় দিনে ব্যাটসম্যানরা কেমন করবে তাঁর উপর। তিনি বলেন, ‘এই ম্যাচ দ্বিতীয় ইনিংসে গড়াবে। কিন্তু তাঁর আগে আমাদের ব্যাটারদের রান করতে হবে এবং বিশেষ করে টপ অর্ডারের কাউকে বড় ইনিংস খেলতে হবে। তৃতীয় দিন পুরোটা তো বটেই, পরের দিনের চা বিরতি পর্যন্ত ব্যাট করা উচিত আমাদের। আমি পুরোটা সময় জুড়ে ড্রেসিংরুমে ব্যাটারদের উৎসাহ দিয়ে যাবো।’
এছাড়া ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া অজি অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনের প্রশংসা করেন এই তারকা। অশ্বিন বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আইপিএলের নিলাম তাঁকে উচ্ছ্বসিত করেছে। সে বুঝতে পেরেছেন ভারতীয় ক্রিকেট আঙ্গিনায় তাঁকে কতোটা উঁচুদরের ক্রিকেটার হিসেবে ভাবা হয়। এই ধরনের ক্রিকেটার প্রতি প্রজন্মে একজন করেই আসে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভারত খুবই আলাদা। আমাদের এখানে এই ধরনের ক্রিকেটার খুব বেশি পাওয়া যায় না। কিন্তু ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াতে এই ধরনের ক্রিকেট প্রতিভাদের অনেক বেশি পরিচর্যা করা হয়। আমি বিশ্বাস করি সামনের দিনগুলোতে ক্যামেরন গ্রিন দুর্দান্ত একজন ক্রিকেটার হয়ে উঠবে।’