বাড়ি ফেরার ডাক

ইংল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার কারণে বাতিল হয় কলপ্যাক চুক্তির প্রথা। যার কারণে এখন থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে বাঁধা নেই রুশো সহ নিজ দেশের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে কলপ্যাক চুক্তিতে আসা বাকি ক্রিকেটারদের। প্রায় ১৬ বছর ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে চালু ছিল কলপ্যাক চুক্তির প্রথা।

কলপ্যাক চুক্তিতে বহু ক্রিকেটার ক্যারিয়ার খুইয়ে বসেন। অনেকেই আর নিজ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারেননি। বিশেষ করে এই তালিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা। কলপ্যাক চুক্তি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই।

ইংল্যান্ডের কাউন্টি লিগে বহুল আলোচিত একটা চুক্তি ব্যবস্থাই হল কলপ্যাক। এই কলপ্যাক চুক্তির ফলে ওই ক্রিকেটারকে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজ দেশের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে হয়। কলপ্যাক চুক্তি যেন ক্রিকেটারদের জন্য এক বিভীষিকার নাম।

এই কলপ্যাক চুক্তিতে নাম লিখিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী তারকা রাইলি রুশো। প্রোটিয়াদের জার্সি গায়ে নিজের সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার রেখেই পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। হয়তো ভাল কিছুর প্রত্যাশা করেছিলেন, বিপুল পরিমাণ অর্থ তো আছেই।

কিন্তু, এই কলপ্যাক চুক্তির কারণে জাতীয় দলে ফেরার রাস্তা অনেকের জন্যই বন্ধ হয়ে যায় – সেটি হয়তো আমলে নেননি রুশো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের সেই সম্ভাবনাটা হয়তো খালি চোখে দেখতে পারেননি। কিংবা অর্থের ঝনঝনানি, আরাম-আয়েশের লোভটা সামলাতে পারেননি রুশো। তাই সব ছেড়ে পাড়ি জমান কাউন্টি খেলতে।

২০১৭ সালে কাউন্টি দল হ্যাম্পাশায়ারের সাথে তিন বছরের কলপ্যাক চুক্তিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বেশ ভালই খেলছিলেন। এরপর হুট করেই কলপ্যাক চুক্তির গ্যাড়াকলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বন্ধ হবার উপক্রম।

তবে, এর মাঝে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে তিনি খেলে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), পাকিস্তান সুপার লিগেও (পিএসএল) খেলেছেন তিনি। এবার ছয় বছর পর আবারও জাতীয় দলে ফিরছেন এই তারকা।

ইংল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার কারণে বাতিল হয় কলপ্যাক চুক্তির প্রথা। যার কারণে এখন থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে বাঁধা নেই রুশো সহ নিজ দেশের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে কলপ্যাক চুক্তিতে আসা বাকি ক্রিকেটারদের। প্রায় ১৬ বছর ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে চালু ছিল কলপ্যাক চুক্তির প্রথা।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রুশোর ক্যারিয়ারের দরজাটা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে একটা আশার আলোর দেখা। আবার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেলেন। সর্বশেষ  ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যাপটাউনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। এরপর ৬ বছর কলপ্যাক চুক্তির কারণে আর জাতীয় দলের ফেরার রাস্তা খুঁজে পাননি এই তারকা।

আসন্ন ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ডাক পেয়েছেন রাইলি রুশো। সব কিছু ঠিক থাকলে ইংলিশদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট  প্রত্যাবর্তন হবে এই মারকুটে তারকার।

এর আগে এই চুক্তিতে নাম তুলেছিলেন মরনে মরকেল, কাইল অ্যাবট, সায়মন হার্মার সহ জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর, কাইল জার্ভিসের মত ক্রিকেটাররা।

প্রায় ৩৩ বছর বয়স। অর্থাৎ ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা তিনি পার করে এসেছেন কাউন্টিতে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলার সুযোগটা ক’দিন পাবেন সেটা অনিশ্চিত। তবে রুশোর সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের অপমৃত্যু হয়েছে সেটা বলাই যায়। এই ৬ বছরে জাতীয় দলের জার্সিতে পাড়ি দিতে পারতেন লম্বা পথ। ভুল-সঠিকের ব্যাপারটা রুশো ভাল জানেন। আপাতত তিনি চাইবেন ক্যারিয়ারের শেষ ভাগটা জাতীয় দলের জার্সিতে আপন রঙে রাঙাতে।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...