অভিষেক ম্যাচেই বেরসিক বৃষ্টির বাধা, ফলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং নামা হয়নি রিঙ্কু সিংয়ের। সেই জেদটা বোধহয় রয়ে গিয়েছিল ভিতরে, তাই তো দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েই তুলোধুনো করেছেন আয়ারল্যান্ডের বোলারদের – জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরষ্কারও।
ভারতের আকাশী-নীল জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন সবারই তো আছে; সেই বহুল আরাধ্য স্বপ্ন ছোঁয়ার মুহূর্তে কিছু করে দেখাতে পারেননি রিঙ্কু সিং। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই জাত চিনিয়েছেন, ২১ বলে ৩৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক মাধ্যম আর গণমাধ্যম দুই জায়গাতেই প্রশংসায় ভাসছেন এই বামহাতি।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করা ভারত বারো ওভারেই দলীয় শতক করে ফেলেছিল। দল যখন বড় সংগ্রহের দিকে এগুচ্ছে সেসময়টাতে পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যাম হিসেবে ক্রিজে আসেন রিঙ্কু সিং।
কিন্তু রান তোলার গতি বাড়ানোর সময়ে দুই সেট ব্যাটার সাঞ্জু স্যামসন আর ঋতুরাজ গায়কোয়াড় পরপর আউট হলে একটু চাপে পড়ে টিম ইন্ডিয়া। তাই তো রিঙ্কু সিং শুরুতেই আক্রমণাত্বক না হয়ে একটু সময় নেন, স্ট্রাইক রোটেট করে নিজেকে মানিয়ে নেন কন্ডিশনের সাথে। একটা পর্যায়ে তাঁর রান ছিল ১৫ বলে ১৫।
এরপরই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কেকেআর তারকা; বেরি ম্যাককার্থির এক ওভারে চার-ছয়ের ফুলঝুরি ছুটিয়ে ১৯ বলেই করে ফেলেন ৩২ রান। পরের ওভারে মার্ক এডেয়ারকেও মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন তিনি। যদিও এর পরের বলে টপ এজে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যেতে হয় তাঁকে, ততক্ষণে অবশ্য কাজের কাজটা করে ফেলেছিলেন।
রিঙ্কু সিংয়ের দুর্দান্ত ক্যামিওতে ভর করে ভারত পৌঁছে গিয়েছিল ১৮৫ রানে; সেই পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। জাসপ্রিত বুমরাহ, প্রাসীদ কৃষ্ণা আর রবি বিষ্ণুই দুইটি করে উইকেট তুলে আইরিশদের আটকে দেন ১৫২ রানেই; আর ৩৩ রানের বড় জয় পায় ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ীরা।
এমন জয়ের পর পুরো ভারত মেতেছে রিঙ্কু সিংয়ের বন্ধনায়। কেউ তাঁর ব্যাটিংয়ে খুঁজে পান নতুন সম্ভাবনা, কারো কাছে তিনি ‘লর্ড’, ‘কিং’। তবে একটা ব্যাপারে সবাই একমত, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অন্তত রিঙ্কু সিংকে নিয়মিত দেখতে চান তাঁরা। সুযোগ পেলে রিঙ্কু সিং নিজেও হয়তো এমন ভালবাসার প্রতিদান দিতে চাইবেন।