ফিটনেসে কেন রিয়াদেরও পেছনে থাকবেন শামিম!

ইয়ো ইয়ো টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এটা নিশ্চয়ই সকলের জানা। কিন্তু সর্বনিম্ন স্কোরটা ছিল কার? সেটা খানিকটা আড়ালেই রয়ে গেছে সম্ভবত। সেটা শামিম হোসেন পাটোয়ারির দখলে। ২১-২২ জনের ফিটনেস টেস্টে তিনি রয়েছেন সবার নিচে।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম সেরা ফিল্ডার হিসেবেই বিবেচনা করা হয় শামিম হোসেন পাটোয়ারিকে। তার ফিল্ডিং দক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার সুযোগ খুব একটা নেই। বেশ ক্ষিপ্রতার সাথে তিনি বল নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিতে পারেন। পাশাপাশি দারুণ সব ক্যাচ লুফে নিতেও তিনি বেশ সিদ্ধহস্ত।

ব্যাট হাতেও বেশ কার্যকর ইনিংস খেলতেও পারদর্শী তিনি। তাইতো বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাত নম্বর পজিশনের সমাধানের একটা বিকল্প বিবেচনা করা হচ্ছে তাকে। অবশ্য তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু রিয়াদ বেশ ব্যাকফুটেই রয়েছেন।

কেননা চারিদিকে চাওড় হয়েছে যে ফিটনেসের দিক থেকে খুব একটা ভাল অবস্থানে নেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সে কথা অনেকাংশেই সত্য। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফিটনেস পরীক্ষার এবারের পাস নম্বর ছিল ১৮.৪। সেই মানদণ্ড থেকে বেশ পিছিয়েই ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার প্রাপ্ত নম্বর, ১৭.৬।

কিন্তু তার থেকে বয়সে বেশ তরুণ, এখনও ২০ এর ঘরে ঘুরপাক খাওয়া শামিম রয়েছে আরও দূরে। ১৬.৫ শামিমের প্রাপ্ত নম্বর। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছেন কেবলই বছর তিনেক হয়েছে। এমন একজন খেলোয়াড় তো এসব ফিটনেস টেস্টে থাকবেন সবার উপরে, তেমনটাই তো প্রত্যাশিত। সেই প্রত্যাশার অবশ্য মান রেখেছেন শামীমের যুব দল সতীর্থ তানজিম হাসান সাকিব।

তিনি হয়েছেন ফিটনেস টেস্টে দ্বিতীয়। ১৯.৫ তার সংগ্রহ। সুতরাং শামিমের ফিটনেসের যথেষ্ট উন্নতি করা প্রয়োজন। হয়ত ক্রিকেটীয় স্কিলে তিনি যথার্থ অবস্থানে রয়েছেন। তবে উন্নতির তো শেষ নেই। কিন্তু ফিটনেসের দিক থেকে বেশ পিছিয়েই আছেন তরুণ এই ক্রিকেটার। অবশ্য তাতে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।

এই ফিটনেস টেস্টে পাস-ফেল খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। কেননা এই পরীক্ষা করাই হয়েছে খেলোয়াড়দের সাম্প্রতিক ফিটনেস লেভেলটা যাচাই করতে। বিশ্বকাপ স্কোয়াড বাছাইয়ের এটাই চূড়ান্ত মানদণ্ড নয়। খেলোয়াড়দের ঠিক কোথায় উন্নতি করা প্রয়োজন, সেই রুপরেখা তৈরি করার উদ্দেশ্যেই এই ইয়ো ইয়ো টেস্টের আয়োজন।

এ নিয়ে বাংলাদেশের ফিটনেস ট্রেইনার নিক লি বলেন, ‘এই টেস্টিং দলে সুযোগ পাওয়া বা বাদ পড়ার কোনো অংশ নয়। এটি স্রেফ আমার, ফিজিও, মেডিকেল টিম, নির্বাচক, প্রধান কোচের বোঝার জন্য যে ক্রিকেটাররা কোন অবস্থায় আছে এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের নিয়ে কেমন কাজ করতে হবে।’

সুতরাং শামীম নিশ্চিতরূপেই ফিটনেসের খানিকটা ঘাটতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তবে তাকে সেটা পূরণ করে ফেলতেই হবে আগামী মাস দু’য়েকের মধ্যে। সেটা করতে তাকে একটু বাড়তি সময় ব্যয় করতে হবে নিজের ফিটনেস ট্রেনিংয়ের উপর। পাশাপাশি স্কিল ট্রেনিংটাও চালিয়ে যেতে হবে সমানতালে।

তবে স্রেফ ফিটনেসের দোহাই দিয়ে মাহমুদউল্লাহকে দল থেকে ছেঁটে ফেলাটা একদমই সমীচীন হবে কি-না, সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। চারিদিকে জোর গুঞ্জন আছে রিয়াদকে বিশ্বকাপ দলে নিতে হেড কোচের অনীহা। আর সেই অনীহার প্রধান কারণই রিয়াদের ফিটনেস। তবে রিয়াদ অন্তত প্রমাণ করেছেন অপেক্ষাকৃত তরুণদের থেকে বেশ ভাল অবস্থানেই রয়েছেন রিয়াদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link