বিশ্বকাপ দল চূড়ান্ত বাংলাদেশের। আপাত দৃষ্টিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বা সৌম্য সরকারদের সুযোগ না থাকলেও পাশার দান পাল্টে যেতে পারে যে কোনো সময়।
বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে দল উড়ে এসেছে বাংলাদেশে; কিউইদের এই দলে অবশ্য নিয়মিত একাদশের কয়েকজন নেই। আবার টাইগার স্কোয়াডেও দেখা গিয়েছে তেমনটা, সাকিব, মুশফিকসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট।
আর তাঁদের অনুপস্থিতিতে সুযোগ পেয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, নুরুল হাসান সোহানের মত ক্রিকেটাররা। সেজন্য বিশ্বকাপ দলেও তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে নানানরকম আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিশ্বকাপ দলে খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
সত্যি বলতে, বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের ১৩ বা ১৪ জনের জায়গা প্রায় নিশ্চিত। কেবল সাত নম্বর ব্যাটার এবং ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে কারা খেলবেন সেই উত্তর জানা বাকি, আর এই দুই পজিশনের জন্য লড়াই হবে সৌম্য, মাহমুদউল্লাহদের মাঝে।
মূলত ইনজুরির শঙ্কা এড়াতে এত বেশি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এছাড়া বিকল্প ক্রিকেটার তৈরি রাখতে রাডারে থাকা খেলোয়াড়দের সুযোগ দিচ্ছে বিসিবি।
এ ব্যাপারে অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘বিশ্বকাপ ভাবনা, বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ মাথায় রেখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কিছু ক্রিকেটারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ-ছয়জন খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেওয়ায় তাদের জায়গায় কাউকে না কাউকে তো নিতে হতো। নির্বাচকরা সেদিক থেকে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের নিয়েছেন।’
তিনি আরো যোগ করেন যে, ‘পেস বোলারদের বিশ্রাম দেওয়া খুবই প্রয়োজন ছিল। প্রায় সব দেশের পেস বোলাররা চোটে পড়ছে। বিশ্বকাপ অনেক লম্বা জার্নি, দেড় মাসের মতো খেলতে হবে। রোটেশন করে ম্যাচ খেলাতে হবে ওয়ার্কলোড ম্যানেজ করতে। এ কারণে বিশ্রাম দেওয়া এবং বিকল্প ক্রিকেটারদের দলে নেওয়া। টুর্নামেন্ট চলাকালেও তো খেলোয়াড় নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।’
এশিয়া কাপে খেললেও বিশ্বকাপ পরিকল্পনা থেকে ইতোমধ্যে ছিটকে পড়েছেন আফিফ হোসেন, শামীম হোসেন এবং নাইম শেখ। এনামুল হক বিজয়কে নিয়েও তেমন একটা ভাবছে না নির্বাচকরা। ওপেনার হিসেবে তাদের নজর দুই তরুণ তানজিদ তামিম এবং জাকির হাসানের দিকে। এছাড়া সৌম্যকেও চোখে চোখে রাখছেন হেড কোচ হাতুরুসিংহে।
আবার মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে একাধিকবার ব্যাটিং বিপর্যয় হওয়ায় অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহর বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। লোয়ার মিডল অর্ডারে সুযোগ মিলতেও পারে তাঁর।
তবে এর আগে পারফর্ম করতে হবে সৌম্য, রিয়াদদের। পারফরম্যান্স নিয়ে জালাল ইউনুসের বলেন, ‘সব কিছু নির্ভর করবে পারফরম্যান্সের ওপর। কেউ ভালো রান করলে গুরুত্ব দেওয়া হবে। পরীক্ষিত পারফর্মাররা আছে; নতুনদেরও দেখা হচ্ছে। এমন না যে শুধু বিশ্বকাপ ভাবনা থেকে এখানে ক্রিকেটার নেওয়া হয়েছে। বিশ্বকাপের পর অনেক খেলা আছে। সেখানে খেলোয়াড় দরকার পড়বে। আমরা চাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলা হোক।’
পরিকল্পনা যেমনই হোক, কিউইদের বিপক্ষে পূর্ণশক্তির স্কোয়াড না দিয়ে বেশ সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এবার খেলোয়াড়রা দায়িত্ব নিয়ে পারফর্ম করলেই স্বার্থক হবে এমন উদ্যোগ।