র‌্যাংক টার্নারের রাজা রোহিত

নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে অসহায় আত্নসমর্পন অস্ট্রেলিয়ার। চিরায়ত স্পিন  বিষে আরো একবার নাকাল অজিরা, হেরেছে ইনিংস এবং ১৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে। মোট ৩০ উইকেটের মাঝে ২৪ টিই তুলে নিয়েছেন দুই দলের স্পিনাররা।

দুই দলের ব্যাটসম্যানরা স্পিনারদের সামনে প্রতিরোধ গড়তে না পারলেও উজ্জ্বল ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দেখিয়েছেন টার্নিং পিচেও সাবলীল ব্যাটিং করার কৌশল, পায়ের ব্যবহারের পাশাপাশি আনঅর্থোডক্স শট আর সুইপে দিশেহারা করেছেন অজি স্পিনারদের। 

প্রথম টেস্টের আগেই পিচ দেখে সবাই বুঝে নিয়েছিলেন স্পিনারদের স্বর্গভুমি হতে যাচ্ছে নাগপুর। অফস্ট্যাম্পের বাইরের ফাটলগুলো জানান দিচ্ছিল বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বধ্যভূমি হিসেবে। অজিদের টপ অর্ডারে চার বাঁহাতি থাকায় এই পরিকল্পনা সাজায় স্বাগতিকরা। তবে রোহিত বাদে ভারতীয় ব্যাটাররাও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি তেমন, অভিষিক্ত টড মারফি একাই তুলে নিয়েছেন সাত উইকেট। 

ম্যাচ শেষে রোহিত বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা ঘরের মাঠে যে ধরনের পিচে খেলেছি, তাতে রান করার ফর্মুলাটা আয়ত্ত্বে আসার কথা। মাঠে নামার আগেই অ্যাপ্রোচ নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা ছিল। মুম্বাইতে এই ধরনের টার্নিং পিচে ব্যাট করে আমি অভ্যস্ত। এই ধরনের পিচে ভালো করতে চাইলে আপনাকে আনঅর্থোডক্স শট খেলার পাশাপাশি পায়ের ব্যবহার জানতে হবে। একই সাথে চাপটা যেন বোলারের উপর থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

রোহিত আরো বলেন, ‘বোলারকে টানা ভালো জায়গায় বল করতে দেয়া যাবে না। আপনাকে ভিন্ন কিছু চিন্তা করতে হবে। সেটা হতে পারে স্টেপ আউট করে বড় শট খেলা কিংবা সুইপ, রিভার্স সুইপের চেষ্টা করা। আপনাকে নিজের শক্তিমত্তা বুঝতে হবে। অন্য কারো দিকে না তাকিয়ে নিজের সেরা খেলাটা খেলতে হবে।’

নতুন বছরের হাইভোল্টেজ সিরিজের শুরুটা ভালো করতে পেরে রোহিত বেশ খুশি। তাছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও ২০২২ সালটা ভালো কাটেনি এই ব্যাটারের। ইনজুরির কারণে আগের বছর কেবল সাদা বলের ক্রিকেটেই মাঠে নেমেছেন।

এই টেস্টে জয়ের ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের জয়ের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১.৬৭ শতাংশে। ৭০.৮৩ জয়ের হার নিয়ে কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়াই তাঁদের চাইতে উপরে আছে। সিরিজের বাকি তিন টেস্টের মাঝে দুইটিতে জয় পেলেই তাঁরা উঠে যাবে তালিকার শীর্ষস্থানে। 

রোহিত বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় এটা অসাধারণ কিছুই বটে। সিরিজের শুরুটা ভালো করা জরুরি ছিল। বিশেষ করে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে উঠতে জয়টা দারুণ ভূমিকা রাখবে। দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে আমি খুশি।’

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণ মেয়াদে তিন ফরম্যাটেই ভারতের  অধিনায়কের দায়িত্ব পান রোহিত শর্মা। কিন্তু এরপরে ইনজুরির কারণে ভারতের হয়ে মাত্র দুইটি টেস্টে মাঠে নামেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বার্মিংহ্যাম টেস্টের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাইরে ছিলেন আঙুলের চোটের কারণে। এমনকি ভারতের সর্বশেষ ১০ টেস্টের আটটিতেই ছিলেন না এই ওপেনার। 

রোহিত জানান, ‘চোটের জন্য বেশ কিছু টেস্ট মিস করা আমার জন্য দুর্ভাগ্যজনক ছিল। তবে ফিরেই দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে আমি খুশি। অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে আমি মাত্র দুটো টেস্ট খেলতে পেরেছি। তবে অতীতেও আমি ইনজুরির শিকার হয়েছিলাম, তাই আমি জানি কি করে ফিরে আসতে হয়। আমরা শুরুটা ভালো করতে চেয়েছিলাম এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরে আমি খুশি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link