রোহিত, এবার তো বিশ্বকাপ জেতার আশায় বুক বাঁধবেই ভারত

প্রায় এক বছর আগে যে সময়টায় রোহিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পজেটিভ ইন্টেন্টের কথা বলছিলেন, আমরা সবাই ভ্রু কুঁচকেছিলাম। প্রথম দশ ওভারে ভারত মেরে খেলবে? ব্যক্তিপুজোর দেশ, যেখানে দলীয় স্বার্থের পাশাপাশি লোকে স্কোরবোর্ডে নিজের নামের পাশেও তিন অঙ্কের রান দেখতে চায়, সেখানে খেলোয়াড়রা ঝুঁকি নিয়ে বড় শট খেলবেন? বারেবারে ব্যর্থ হচ্ছিল ভারত, টি-টোয়েন্টিতে সুরিয়াকুমার যাদব ছাড়া কেউ ধারাবাহিকভাবে বিধ্বংসী ইনিংস খেলতে পারছিলেন না। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে প্রথম একাদশ খুঁজে পেতেই হিমশিম খেতে হচ্ছিল ভারতকে।

অবস্থা বদলাতে শুরু করল তরুণ ব্রিগেড স্পটলাইট পাওয়ার পর থেকে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের কৃতিত্ব কোনওভাবেই খাটো না করেই বলছি, আজ গোটা দল এতটা চাঙ্গা হয়ে মাঠে নামতে পারছে কারন তাদের রিজার্ভ বেঞ্চে বসে রয়েছে ডবল সেঞ্চুরি হাঁকানো ঈশান কিষাণ, একা হাতে ম্যাচের রঙ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখা সুরিয়াকুমার যাদবের মতো খেলোয়াড়রা।

শুভমান গিলের কথা আলাদাভাবে না বললেই নয়, ঠিক যখন থেকে ওপেনিংয়ে গিল ভরসা যোগানো শুরু করেছেন, খেলার ধরন বদলে গিয়েছে রোহিতের। গত এক বছরে প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি ছক্কা মেরেছেন ভারত অধিনায়ক, ভাবা যায়?

সেরা সময়ের ধাওয়ানের সঙ্গে যেভাবে জুটি বাঁধতেন রোহিত, ঠিক যেন সেই সোনালী দিন ফিরে আসছে ধীরে ধীরে৷ বিনা সংকোচে পেসারদের পুল করেছেন, হেসে-খেলে ফ্লিক করছেন গ্যাপের মধ্যে দিয়ে৷ কোহলিও বেশ খানিকটা চাপমুক্ত থাকতে পারছেন। মাঝে চোট-আঘাতের জেরে পুরো শক্তির দলই নামাতে পারেনি ভারত, তখন দেখতাম খোলসের মধ্যে ঢুকে রয়েছেন রোহিত-কোহলি দু’জন। মিডল অর্ডারে কেএল-শ্রেয়স চলে আসায় এখন সেসব চিন্তা সটান আরব সাগরে।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের এই ম্যাচ কার্যত লিটমাস টেস্ট ছিল ভারতের কাছে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে এক লাখের বেশি দর্শকের সামনে এই ম্যাচ হেরে গেলে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম যা লম্ফঝম্প করত, সোশ্যাল মিডিয়ায় টেকা যেত না। যতই পাকিস্তান অখাদ্য ব্যাটিং করে কম রানে অলআউট হয়ে যাক না কেন।

বোলিং লাইন আপে শাহিন শাহ আফ্রিদি-হ্যারিস রাউফ থাকলে ভয়ের চোরাস্রোত থেকেই যায়। শুরুতে শুভমন আউট হয়ে গেলেও যেভাবে রোহিত খেললেন (যে সময় এই প্রতিবেদন লিখছি, অধিনায়ক ব্যাটিং করছেন ৫৪ বলে ৭০ রানে), তাতে গোটাদেশ আরও একবার বিশ্বকাপ জেতার আশায় বুক বাঁধবে না?


কাঁটা ওই এক জায়গাতেই, নক-আউটে রোহিতের এই বিধ্বংসী ফর্ম থাকবে তো? শুভমান-শ্রেয়াস-রাহুলরা ভরসা জোগাতে পারবেন তো? ১৪ অক্টোবর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ১৯ নভেম্বর রাতে নিশ্চয়ই জেনে যাবে গোটাবিশ্ব!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link