একজন বার্সালোনা সমর্থক হিসেবে হয়ত আপনি ভুলে যেতে চাইবেন ১৫ আগস্ট ২০২০ এই দিনটির কথা। নিকট অতীতে বার্সাকে লিসবনে নাকানিচুবানি খাওয়াতে শুধুমাত্র বায়ার্ন মিউনিখই পেরেছিল সেদিনটায়। কাতালানদের বিপক্ষে ৮-২ গোলের এক বিরাট জয়ে পৈশাচিক আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মান জায়েন্ট বায়ার্ন মিউনিখ। সেবার একটা আত্মঘাতি গোল সহ মোট নয়বার বল জালে জড়িয়েছিল থমাস মুলার, রবার্ট লেওয়ানডস্কি, কিমিচরা।
এবারের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আজ বাংলাদেশ সময় রাত একটায় গ্রুপ পর্বে ম্যাচে মুখোমুখি হতে চলেছে বায়ার্ন ও বার্সা। ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচকে ঘিরে দারুণ এক বিপাকে পড়েছেন বার্সার ডাচ কোচ কোমেন। তার হাতে মেসি চলে যাওয়া, অ্যাতোয়ান গ্রিজম্যানকে লোনে পাঠানোয় অভাব দেখা দিয়েছে বার্সার আক্রমণ ভাগে।
যেখানেই বাঘের ভয়, সেখানেই রাত্রি হয়, এমন দশা কোচ রোনাল্ড কোমেনের। তাঁর মেসি, গ্রিজমান পরবর্তী স্কোয়াডে আক্রমণ ভাগের ছয় ‘অপশন’ ছিল কোমেনের হাতে। দু:খের বিষয় ক্লাবের আসার শুরু থেকেই ইনজুরিতে ভোগা ডেমবেলে এবারেও মাঠের বাইরে ওই একই কারণে। আগেই তার সাথে যোগ দিয়েছিলেন আনসু ফাতি, সার্জিও আগুয়েরো।
নতুন করে সেই তালিকায় নিজের নাম লেখালেন ব্র্যাথওয়েট। তিনি হাটুর গুরুতর ইনজুরিতে ভুগছেন। তবুও তিনি চেষ্টা করছিলেন ইনজুরি সাড়িয়ে তুলতে এবং আজকের ম্যাচে অংশ নিতে। কিন্তু গেলো রবিবারের অনুশীলনে তার ইনজুরি আবার মাথাচাড়া দিয়ে জেগে ওঠে। বেশকিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে ডাক্তাররা জানান তার এই হাটুর সমস্যার একমাত্র সমাধান অস্ত্রোপচার, যার ফলস্বরূপ ব্র্যাথওয়েটকে তিন-চার মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে।
এমতবস্থায় কাতালান কোচ রোনাল্ড কোমেনের কাছে আর অপশন রয়েছে দু’টি – মেমফিস ডিপাই ও ডি জং। বলাবাহুল্য মেমফিস ডিপাই দলে আসার পর থেকেই বেশ ভাল পারফর্ম করে যাচ্ছেন। যদিও বড় দলের বিপক্ষে তার সামর্থ্য এখনো যাচাই করা সম্ভব হয়নি তবুও তার উপরই ভরসা রাখবেন কোমেন।
কিন্তু চিন্তার কারণ ডি জং। তাকে দলে ভেড়ানোর পেছনে কারণ আক্রমণ ভাগে গভীরতা বাড়ানো। তিনি কখনোই মূল পরিকল্পনার অংশ ছিলেন না। তবে কোমেনের কাছে আর কোন বিকল্প না থাকায় তার ডি জং এর উপর আসতে চলেছে গুরু দায়িত্ব।
৪-৩-৩ ফর্মেশনের পাশাপাশি খানিকটা ট্যাক্টিকাল পরিবর্তন করে কোমেন হয়ত চাইবেন কুতিনহো কিংবা তরুণ ইউসুফ ডেমিরকে খেলাতে। তবে ফিলিপে কোটিনহো দীর্ঘ নয় মাস মাঠের বাইরে থাকায় তাকে খেলানোর সম্ভাবনা কিছুটা কম।
আবার অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে তাকেই খেলিয়ে দিতে পারেন কোচ রোনাল্ড কোমেন। লিগের তিন ম্যাচে চার গোল খাওয়া বার্সার রক্ষণ যেন উভয় সংকটে ফেলে দিয়েছে কোমেনকে৷ রোনাল্ড কোমেন পরিকল্পনার কেমন পরিবর্তন ঘটিয়ে মাঠে কোন একাদশ নিয়ে নামবে তা এখন দেখবার বিষয়।
জার্মান জায়েন্টদেরকে ঘরের মাঠে রুখে দেওয়াই হয়ত মূল পরিকল্পনা হতে চলেছে কাতালানদের। বাকিটা মাঠের খেলায় বোঝা যাবে। হাল না ছেড়ে ভঙ্গুর দলটাকে উৎসাহ দিতে নিশ্চয়ই মাঠে আওয়াজ তুলবেন দর্শক-সমর্থকরা। আর রাত জেগে টিভি সেটের সামনে বসে প্রার্থনা করে যাবে এই উপমহাদেশের পাগলাটে ফ্যানরা।