তোলপার গোটা ইতালিয়ান ক্লাব ফুটবল। চারিদিকে অনিয়মের জোর গুঞ্জন। শাস্তি স্বরুপ দলের পয়েন্ট কর্তনের মত ঘটনাও ঘটেছে ইতালির ঘরোয়া ফুটবলে। সেখানে ফলাও করে সামনে আসছে ইতিহাস সমৃদ্ধ ক্লাব জুভেন্টাসের। আর্থিক তথ্য গোপন করা ও অনিয়ম করা সহ নানা কারণে শাস্তির মুখে পড়েছে ক্লাবটি। নতুন খবর হলো এদফা শাস্তির আওতায় আসতে পারেন খোদ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও।
মূলত ২০১৮ থেকে ২০২১ এই তিন বছরে আর্থিক লেনদেনের সঠিক তথ্য গোপন করবার অভিযোগ উঠেছে জুভেন্টাস সহ ইতালির আরও বেশকিছু ক্লাবের বিপক্ষে। এর প্রেক্ষিতে ২০২১ সালে জুভেন্টাসের তৎকালিন বোর্ড পদত্যাগও করেছিল। কিন্তু গোপনকৃত তথ্যের একটা বিরাট অংশ জুড়েই ছিল কর ফাঁকি দেওয়ার পায়তারা। আর সে বিষয়টি প্রমাণ হওয়ার পর কর্তন হয়েছে জুভেন্টাসের বর্তমান লিগ পয়েন্টের ১৫টি পয়েন্ট।
অবশ্য এখানেই থেমে থাকছে না শাস্তির গণ্ডি। সেটার বিস্তৃতি হতে পারে বহুদূর অবধি। এমনকি বোর্ড কর্তা ছাড়াও নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাবের সাথে যুক্ত থাকা খেলোয়াড়রাও পড়তে পারেন শাস্তির মুখে। সেই তালিকায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও রয়েছেন। তাছাড়া পাওলো দিবালাসহ আরও বেশকিছু খেলোয়াড় মাসখানেকের নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে পারেন বলে জানা গেছে বিভিন্ন মাধ্যমে।
২০১৯ সালে করোনা ভাইরাস আঘাত হানার পর গোটা বিশ্ব সভ্যতাই হুমকির মুখে পড়ে যায়। সেই সময়টাতে বিশ্বের প্রতিটি দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এমন পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের পরিমাণে বেশকিছু রদবদল আনা হয়। ঠিক সেখানটায় কারসাজি করে বসে জুভেন্টাস। তাঁরা খেলোয়াড়দের ১৫ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ উপঢৌকন দেয়। যাতে করে খেলোয়াড়রা তাদের চার মাসের পারিশ্রমিক না পাওয়ার কথা জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
এতে করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার বিষয়টি লুকানোর একটি ফন্দি আঁটে জুভেন্টাস ক্লাব কর্তারা। অথচ সে সময়টায় কেবল একটি মাসের বেতন বঞ্চিত ছিলেন ক্লাবের সেই সময়ের খেলোয়াড়রা। এছাড়া খেলোয়াড়দের ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের তথ্যও চেপে যায় জুভেন্টাস। মূলত কর ফাঁকি দিতেই এতসব আয়োজন ছিল ক্লাবটির।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্লাবটি খুব ভাল অবস্থানে নেই। দলে খেলোয়াড়দের ভেড়ানোর ক্ষেত্রেও বেশকিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে ক্লাবটিকে। তাছাড়া মাঠের পারফরমেন্সেও যাচ্ছেতাই অবস্থা তুরিনের ক্লাবটির। বেশ কয়েক মৌসুম ধরেই শিরোপাহীন সময় পার করতে ওল্ড লেডিরা। এরই মাঝে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছে ক্লাবটির নাম। ক্লাবটির সার্বিক ইমেজে দারুণভাবে প্রভাব ফেলতে পারে এসব কিছুই।
অন্যদিকে নিজের পূর্ণ পারিশ্রমিক পাওয়ার বিষয়টি চেপে যাওয়ার ফলাফল হিসেবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারে ইতালির জাতীয় সকার ফেডারেশন (এফআইজিসি)। সেক্ষেত্রে মাসখানেকের জন্যে ফুটবল থেকে নির্বাসিত থাকতে হতে পারে রোনালদোকে। তবে সেসব কিছুই এখনই ঘটবে না। ইতালির আদালতে এই বিষয়ে সুনানী চলমান। দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্য আর রক্ষে নেই ক্লাব কিংবা খেলোয়াড়দের।