রোনালদো, কেন ও কিভাবে আল নাসের

খুব করে চেয়েছিলেন যে ক্লাবে ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন সেই রিয়াল মাদ্রিদ থেকে কোনো ডাকের। কিন্তু ৩৭ বছরের রোনালদোর প্রতি আগ্রহ দেখায়নি রিয়াল সহ কোনো ইউরোপীয় ক্লাবই।

কথা মোটামুটি পাকাপাকি ছিলো বিশ্বকাপ চলার সময়েই। কিন্তু একটু তাড়াতাড়িই রোনালদো ইউরোপিয়ান ফুটবলকে বিদায় বলে দিচ্ছেন কিনা – সেটা নিয়েই ছিল যত আলোচনা। সব আলোচনার অবসান ঘটিয়ে কাগজে কলমে এবার সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরে যোগ দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

শুক্রবার মাদ্রিদে চুক্তি স্বাক্ষর হয় আল নাসের আর রোনালদোর। রোনালদো থাকতে চেয়েছিলেন ইউরোপেই। খুব করে চেয়েছিলেন যে ক্লাবে ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন সেই রিয়াল মাদ্রিদ থেকে কোনো ডাকের। কিন্তু ৩৭ বছরের রোনালদোর প্রতি আগ্রহ দেখায়নি রিয়াল সহ কোনো ইউরোপীয় ক্লাবই। তাই শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ফুটবলকে বিদায় বলে মরুর দেশেই পাড়ি জমালেন রোনালদো।

সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেয়া সাক্ষাৎকারেই রোনালদোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যে ছাড়ছেন রোনালদো তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় সেই সাক্ষাৎকারের পরেই। তবে রোনালদোর নতুন গন্তব্য কি হতে যাচ্ছে সে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। রোনালদো আর আল নাসেরের মধ্যে আলোচনা শুরু হয় এর পর থেকেই।

পিয়ার্স মরগানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো জানিয়েছিলেন, ইউরোপেই থাকতে চান তিনি, খেলতে চান চ্যাম্পিয়নস লীগ। অপেক্ষায় ছিলেন চ্যাম্পিয়নস লীগ খেলা কোনো ক্লাব থেকে প্রস্তাব পাবার। খুব করে চেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ থেকেই আসুক প্রস্তাব। কিন্তু কোনো ক্লাবই আগ্রহ দেখায়নি রোনালদোর প্রতি।

প্রায় ৪০ দিন ধরে কথা চলছিলো রোনালদো আর নাসেরের মধ্যে। যদিও বিশ্বকাপ চলাকালীন নিজের পরবর্তী গন্তব্য নিয়ে কোনো কথা বলতে চাননি তিনি। কিন্তু রোনালদো বিশ্বকাপ চলার সময়ই জানতেন আল নাসেরই হতে যাচ্ছে তার পরবর্তী ঠিকানা। আল নাসেরের বিশাল অঙ্কের অফার ঝুলছিলো রোনালদোর সামনে।

চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে চাইলেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ওমন বাজে সমাপ্তির পর রোনালদোও কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলেন, শীর্ষ কোনো ইউরোপীয় ক্লাবে যোগ দেয়া অনেকটাই কঠিন তার জন্য। সেটা প্রায় অসম্ভবই বলা যায়।

নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপটাও ভুলে যেতে চাইবেন রোনালদো। একাদশ থেকে বাদ পড়ে দ্বন্দে জড়িয়েছেন কোচের সাথে। তার দল পর্তুগালও মরক্কোর কাছে হেরে বাদ পড়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। দু:স্বপ্নের মত বিশ্বকাপ কাটানোর পর পরই মাদ্রিদে চলে আসেন রোনালদো। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ব্যক্তিগত অনুশীলন এর অনুমতিও চান তিনি।

রিয়ালে অনুশীলনের সময়েই রিয়ালের কাছ থেকে প্রস্তাবের অপেক্ষা করছিলেন রোনালদো। যে ক্লাবকে নিজের সেরা সময়ে সবটা উজাড় করে জিতিয়েছেন সম্ভাব্য সব কিছুই সেই ক্লাব আবার রোনালদোকে দলে পেতে চাইবে এমনটাই হয়তো আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তরুণ খেলোয়াড় দিয়ে ভবিষ্যতে জন্য দল গোছানোর প্রক্রিয়ায় থাকা রিয়াল কোনো আগ্রহই দেখায়নি ৩৭ বছর বয়সী রোনালদোর জন্য।

এমন পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত আল নাসেরের প্রস্তাবেই সাড়া দিতে হলো রোনালদোকে। এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করার সাথে সাথে বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া খেলোয়াড়ও এখন রোনালদো।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...