ফরচুন বরিশাল বনাম রংপুর রাইডার্স – দুই হট ফেভারিট দলের লড়াই নখ কামড়ানো উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শেষপর্যন্ত অবশ্য এক উইকেটে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল। যদিও হাই ভোল্টেজ এই ম্যাচের ফলাফল প্রায় একা হাতে লিখেছিলেন আবু হায়দার রনি, দুর্ধর্ষ এক স্পেলে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডার লন্ডভন্ড করে দিয়েছেন তিনি।
শুরুটা অবশ্য দারুণভাবেই করেছিল বরিশাল। অধিনায়ক তামিমের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে প্রথমেই এগিয়ে গিয়েছিল তাঁরা। কিন্তু সাকিব আল হাসান বোলিংয়ে এসেই তুলে নেন ২০ বলে ৩৩ রান করা তামিমকে। এরপরও আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করেছিলেন কাইল মায়ার্স আর টম ব্যান্টন। দুজনের কল্যাণে মাত্র দশ ওভারেই দলীয় শতক পূর্ণ হয়, বড় রানের পুঁজি তখন কাছের বস্তু মনে হচ্ছিলো।
অথচ আবু হায়দার বল হাতে নিতেই সব বদলে যায় ভোজবাজির মত। নিজের প্রথম ওভারেই গুণে গুণে তিন উইকেট শিকার করেন তিনি। এর আগে নিশামের বলে থেমেছিলেন ওপেনার ব্যান্টন, ফলে ১১৬ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যান মুশফিকরা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি, বাঁ-হাতি এই পেসার ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারেই পেয়ে যান ফাইফারের স্বাদ।
১২৯ রানে স্বীকৃত ব্যাটাররা সবাই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিনিধিরা অসহায় অবস্থায় পতিত হয়। শেষমেশ ম্যাককয় ও সাইফউদ্দিনের ছোটখাটো অবদানে ১৫১ রানের পুঁজি পায় দলটি।
রান তাড়ায় ওপেনার ব্রেন্ডন কিং আরেক প্রান্তে মুমিনুল হককে দর্শক বানিয়ে তান্ডব চালাতে শুরু করেন। কিন্তু মুমিনুল নিজে ব্যর্থ হন, ফেরেন কোন রান না করেই। যদিও সাকিব আর কিংয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতেই ৭৪ রান তোলে রংপুর। তবে ৪৫ রানে উইন্ডিজ ব্যাটার ও ২৯ রান করে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আউট হলে রানের গতি কমে আসে খানিকটা।
এরই মাঝে স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ জমে উঠে, ১১৮ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে বসে টিম রাইডার্স। জয়ের জন্য তখনো ৩৪ রান প্রয়োজন ছিল তাঁদের, বাইশ গজে ছিলেন জিমি নিশাম এবং ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। ১৭ বলে ২৮ রান করে নিশাম অনেকটাই সহজ করে দেন জয়ের সমীকরণ।
কিন্তু তাঁর আউট বরিশালের আশা টিকিয়ে রাখে। শেষদিকে টান টান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল সাগরিকায়, তবে স্নায়ু ধরে রেখে দলের জয় নিশ্চিত করেন শামীম হোসেন আর হাসান মাহমুদ।