Social Media

Light
Dark

রায়ান ‘দ্য রেড ডেভিল’ গিগস

যদি প্রশ্ন করা হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় কে তাহলে উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা গরম হয়ে যাবার কথা। জর্জ বেস্ট, ডেনিশ ল, ববি চার্লটন, মাইকেল ওয়েন, ওয়াইন রুনি, ডেভিড বেকহ্যাম কিংবা সময়ের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো – কাকে ছেড়ে কার নাম বলবেন?

তবে একটা জিনিস জানলে অবাক হতে পারেন যে এদের কেউই কিন্তু তাঁদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রিমিয়ার শিপের মেডেল অর্জন করতে পারেননি, সেটা অর্জন করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরই একজন খেলোয়াড়, তার নাম রায়ান গিগস। দলের হয়ে তিনি ৩৪ টি শিরোপা অর্জন করেছেন।

খুব অল্প বয়সেই তিনি ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগদান করেন কিন্তু তখনও তিনি তার সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেননি। ১৯৮৭ সালে তিনি যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন তখন তার বয়স মাত্র ১৪ বছর। ১৯৯১ সালে সিনিয়র দলে তার ডেবু হয় এবং ক্যারিয়ারের ২৩ টি বছর তিনি একটি ক্লাবেই কাটিয়ে দেন।

দলে যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই তিনি তার কার্যকারিতা দেখানো শুরু করেন। ১৯৯২ আর ১৯৯৩ দুই মৌসুমে তিনি ‘পিএফএ সেরা তরুণ খেলোয়াড়’ এর পুরস্কার জিতে নেন। তিনিই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় যিনি কিনা তার ক্যারিয়ারের প্রথম ২২ টি মৌসুমেই প্রথম একাদশে ছিলেন এবং একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ২১ টি সিজনে গোল করেছেন।

প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের (২৭১) রেকর্ডও গিগসের। এছাড়া তার করা ১১৪ টি গোল প্রিমিয়ারশিপে নিয়মিত স্ট্রাইকার হিসেবে না খেলা খেলোয়াড়দের মাঝে সর্বোচ্চ।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের মাঝে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে (১৫ সেকেন্ড) গোল করার রেকর্ডও গিগসের। এছাড়া উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পর পর ১২ মৌসুমে গোল করা তিনি প্রথম খেলোয়াড়।

এছাড়া তিনি ১৯৯৯ সালের এফ এ কাপে আর্সেনালের বিপক্ষে ৪ জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে যে গোলটা করেছিলেন সেটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শ্রেষ্ঠ গোল হিসেবে দর্শকেরা নির্বাচন করেছেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি ওয়েলসের হয়ে জাতীয় দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। এছাড়া ২০১২ সালের অলিম্পিকে গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এই পর্যন্ত মাত্র ১৮ জন খেলোয়াড় তাদের ক্যারিয়ারে ১০০০ টি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন, রায়ান গিগস তাদের মাঝে একজন।

২০১৩ সালে রায়ান গিগস খেলোয়াড় কাম কোচের দায়িত্ব পান। এই সময়ে মূল কোচ ছিলেন ডেভিড ময়েস। ময়েসের বহিস্কারের পর অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে গিগস চারটি ম্যাচ পরিচালনা করেন।

পরবর্তীতে লুই ফন গাল যখন মূল কোচ হিসেবে আসেন তখন তিনি তার সহকারী কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে হোসে মরিনহো কোচ হিসেবে যোগদান করার পর রায়ান গিগস তার পদ থেকে ইস্তফা দেন।

গিগস তার ২৪ বছরের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ক্যারিয়ারে কখনও লাল কার্ড খাননি, শুধুমাত্র ওয়েলসের হয়ে খেলার সময় তার ক্যারিয়ারে একটা লাল কার্ড রয়েছে। সেটাও সরাসরি না, পরপর দুটো হলুদ কার্ড খাওয়ায় সেটা লাল কার্ডে পরিণত হয়।

বিখ্যাত ইতালিয়ান খেলোয়াড় আলসেন্দ্রো দেল পিয়ারো বলেছিলেন, ‘মাত্র দুইজন খেলোয়াড় ছিলেন যাদের কারণে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়েছিল। একজন হচ্ছেন রবার্তো ব্যাজিও, আরেকজন রায়ান গিগস।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link