বহুল প্রতিক্ষিত ওয়েস্ট সিরিজের জন্য আজ ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ দলের নির্বাচকরা। লম্বা বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা এবং এই সিরিজ দিয়েই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করা। সব কিছু মিলিয়ে নতুন সূচনার দিকে তাকিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। আর নতুন সূচনার দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে সম্ভাবনাময় তিন তরুণকে দলে ডেকে।
প্রথম বারের মতো ওয়ানডে স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী পেসার শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ ও মেহেদী হাসান। তাদেরকে দলে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু।
তিনি বলেন ‘আমরা তিন জন নতুন মুখ দলে নিয়েছি, এটা পরিকল্পনার অংশ। এ সিরিজ থেকেই আমরা নতুন শুরু করছি। ওদের তৈরি করা এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে রেখে কাজ করানোর জন্যই এই তিন জন ‘আনক্যাপড’ খেলোয়াড় রাখা হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচক আগেই জানিয়েছিলেন ২০২৩ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির কথা মাথায় রেখে কোচিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে প্ল্যান দেওয়া হয়েছে তাদের। নির্বাচকদের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে এই সিরিজ থেকেই।
বিশ্বকাপ পরিকল্পনা নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন ‘২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আছে, সেটার একটা পরিকল্পনা আছে। এখন আমরা চিন্তা করছি, ‘সিরিজ বাই সিরিজ’ যাবো। প্রথমেই আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেয়েছি। ঘরের মাঠে আমরা চাই, ভালো ক্রিকেট খেলে সিরিজটা শুরু করতে। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, আমাদের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ শুরু হল এই সিরিজ থেকে।’
২০২৩ বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে বাছাইপর্বে অংশ নিতে হবে বাংলদেশকে। এই সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপের সুপার লিগে অভিষেক হচ্ছে বাংলাদেশের। সুপার লিগের শীর্ষ ৭ দল সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপ। ২০২৩ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা পেতে প্রতিটি পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও দীর্ঘ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে টাইগাররা। তাই ক্রিকেটারদের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ দেখছেন প্রধান নির্বাচক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য একটা ফ্রেশ শুরু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত বড় বিরতি মানে শূন্য থেকে শুরু করা। সে হিসেবে প্লেয়ারদের উপর একটা চাপ অবশ্যই থাকবে, চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হবে। যেহেতু আমরা ঘরের মাঠে খেলছি তাই চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। আমাদের জন্য ঘরের মাঠের এই সিরিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছি। আমাদের জন্য এটাও একটা চাপ হিসেবে কাজ করবে। এসব চিন্তা না করে সবাই মিলে পারফরম করে এই সিরিজটায় আমরা ভালো করতে চাই।’
প্রতিটা সিরিজের জন্য সাধারনতো ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়ে থাকে। কিন্তু আসন্ন সিরিজের জন্য ১৮ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন নির্বাচকরা। করোনা ইস্যুতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জনের দল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক।
তিনি বলেন, ‘এখানে সব ধরনের কম্বিনেশনের সুযোগ রাখা হয়েছে। পেস বোলিং কিংবা স্পিন যখন যেটার দরকার হবে, যে ম্যাচে দরকার হবে তখনি পরিবর্তন করা যাবে। টিমের কম্বিনেশন যথেষ্ট ভালো। ব্যাটিং, বোলিং সব দিক দিয়ে একটা ভারসাম্য রাখা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এই দল আমাদের ভালো একটা সিরিজ উপহার দেবে। নতুন খেলোয়াড়দের জন্য এই প্ল্যাটফর্ম একটা বিরাট ব্যাপার। এ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওরা দলের সিনিয়রদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে দলে যথেষ্ট অবদান রাখতে পারবে বলে আশা করছি।’
বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াড:
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।