১৮ মাসেই শেষ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা!

শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে শাহাদাত হোসেনকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাঁর নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে এখনো প্রায় সাড়ে তিন বছর বাকি থাকলেও আজ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। তাঁর পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে গেল ১৮ মাসেই।

এই পেসার খেলা ৭১-কে জানিয়েছেন তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে চলতি বছরের মার্চেই। কিন্তু সেই মাসেই অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) খেলতে পারেননি দল গুলো আগেই তাদের স্কোয়াড চূড়ান্ত করে ফেলায়।

আরো পড়ুন

তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা তো তখনই তুলে নেওয়া হয়েছে। এনসিএলের আগ দিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিছে। এর আগেই দল গুলো স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছিল। আবার ক্রিকেটে ফেরার পুরো কৃতিত্ব ক্রিকেট বোর্ড ও মিডিয়ার। সুজন ভাই, আকরাম ভাইকে ধন্যবাদ।’

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শাহাদাত হোসেন রাজিব বিসিবির কাছে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে আবেদন করেন। তখন, একটা গুঞ্জন ছিল নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে। শাহাদাত জানিয়েছেন, মার্চেই তাঁর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। যদিও বিসিবি নিজে এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। সংবাদ মাধ্যমেও আসেনি কোনো বিজ্ঞপ্তি। ফলে, হুট করে এই পেসারকে বোলিং করতে দেখাটা ছিল বিস্ময়কর।

তবে, আজ বল হাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে দুই ওভারে ১৬ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন এই পেসার। তার দলও হেরেছে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

উপার্জনের পথ বন্ধ থাকায় ক্যান্সারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার খরচ বহন করতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিসিবির প্রধান নির্বাহী বরাবর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও খেলার আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন এই পেসার। মূলত মাকে বাঁচাতেই আবার ক্রিকেটে ফেরার আকুতি জানিয়েছিলেন শাহাদাত।

তখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও মায়ের অসুস্থতার বিষয়টি আমলে নিয়ে তাঁর শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিসিবি। তখন জানানো হয়েছিল জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) ২২তম আসর দিয়েই আবার মাঠে ফিরবেন এই পেসার।

জানিয়ে রাখা ভালো, ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর জাতীয় লিগে ঢাকা বিভাগের হয়ে খেলা এক ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে সতীর্থ স্পিনার আরাফাত সানিকে বল ঘষে দিতে বলেন শাহাদাত। কিন্তু বল ঘষে দিতে অস্বীকৃতি জানান সানি। এর পরই তাকে চড় থাপ্পড় মারা শুরু করেন এই পেসার।

এমন অপরাধের জন্য ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার সাথে শাহাদাতকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করে বিসিবি। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার ভিতর দুই বছর ছিলো স্থগিতাদেশ নিষেধাজ্ঞা।

ঐ ঘটনার আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এই পেসার। গৃহকর্মীকে মারধর করার অভিযোগে সস্ত্রীক জেলও খাটতে হয়েছে শাহাদতকে। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬ সালে ঐ মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয় তাকে।

২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত শাহাদাত হোসেন দেশের জার্সিতে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৮ ম্যাচে দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭২ উইকেট শিকার করেছেন এই পেসার। এছাড়া ওয়ানডেতে ৪৭ ও টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২৫৮ উইকেট রয়েছে শাহাদাতের ঝুলিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link