ইনজুরি, প্রত্যাবর্তন, রাজত্ব, ফের ইনজুরি একজন পেসারের জীবনচক্র অনেকটা এমনই। পাকিস্তানের বর্তমান সময়ের সেরা পেসার শাহীন শাহ্ আফ্রিদির কথাই ধরুন না। এই ফাস্ট বোলারের এই বছরটাই যাচ্ছে ইনজুরিময়।
গেল আগস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে চোট পেয়েছিলেন। সেই চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকেও ছিটকে গিয়েছিলেন। প্রায় তিনমাস পর দীর্ঘ এক পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে ফিরেছিলেন একদম মোক্ষম সময়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে দলের তাঁকে বড্ড দরকার যে ছিল।
শাহীন আফ্রিদি ফিরলেন, পুরো টুর্নামেন্টে নিজের বোলিং জাদুতে মুগ্ধ করে রাখলেন বিশ্ব ক্রিকেটকে। পাকিস্তান যে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ফাইনাল অবধি পৌঁছে গিয়েছে, তাঁর পেছনে দারুণ অবদানটা কিন্তু এই পেস নেতারও ছিল।
পুরোটা খারাপ হলেও পরে নিজেকে মেলে ধরেন বিশ্বকাপে। পুরো টুর্নামেন্টে এগারোটি উইকেট শিকার করে পাকিস্তানের পক্ষে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট পাওয়া বোলার তিনি। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২২ রানে চার উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪ রানে তিনটি, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ২৪ রানে তিনটি উইকেট।
কিন্তু বিশ্বকাপের ফাইনালের মঞ্চে আবারও সেই চোটের হানা। নিজের তৃতীয় ওভারটা শেষ করতে পারেননি আফ্রিদি। তৃতীয় ওভারের মাত্র এক বল করেই তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আফ্রিদির ইনজুরিকে ম্যাচটির টার্নিং পয়েন্ট হিসবে দেখছেন কেউ কেউ।
মাঠ ছাড়ার আগে ১৩ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট তুলে নিয়েছেন এই পেসার। শেষ খবর আবারও ডান হাঁটুতে চোট পেয়েছেন শাহীন শাহ্ আফ্রিদি। এই মুহূর্তে তাঁর পা ব্রেসে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।
এই চোট আবারও তাঁকে বাইশ গজের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আবারও একটা দীর্ঘ সময় তাঁকে যেতে হবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। আপাতত দেশে ফিরে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তাঁর ইনজুরির ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী ডিসেম্বর–জানুয়ারি পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম টেস্টের জন্য আফ্রিদিকে পাওয়া যাবে না। আগামী মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে তিনি যে থাকতে পারছেন না, তা নিশ্চিত।
যদিও চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের প্রয়োজনে আফ্রিদিকে ইনজুরি থেকে শতভাগ সেরে ওঠার আগেই ডেকে আনা হয়েছে- এমন সমালোচনাও ছিল বাতাসে। তবে সত্য যাই হোক, তিনি যে এই আসরে নিজেকে যে শতভাগ উজাড় করেছেন পারফরম্যান্সে বিষয়টি নিশ্চিত। কিন্তু ফর্মে ফেরার আনন্দটা দ্রুতই দু:স্বপ্নে রূপ নিল।
এই ঘটনা আফ্রিদিকে আবারও ঠেলে দিল অনিশ্চিত এক যাত্রার পথে। দ্য ইনজুরি ইজ ব্যাক অ্যান্ড দ্য মিসফরচুন কন্টিনিউজ ফর আফ্রিদি। আবারও তাঁকে যেতে হচ্ছে নির্বাসনে।