Social Media

Light
Dark

ধারালো শাহীন, কোথায় হারালো!

নামের পাশে তার উইকেট থাকে। স্রেফ অন্তর্জালের পাতায় শাহীন শাহ আফ্রিদির ঠিক পথেই রয়েছেন বলে মনে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সবুজ গালিচায় দুর্ধর্ষ সেই শাহীন যেন অনুপস্থিত। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলেও তার ধারালো বোলিং যেন হাওয়াই মিঠাই।

আয়ারল্যান্ডের পরিবেশ পেসার বান্ধব। সুইং বোলারদের স্বর্গরাজ্যও বলা চলে। আকাশে ছিল মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টিও ঝড়েছে খানিকটা। একেবারে বল হাতে পেসারদের ত্রাস সৃষ্টি করবার আদর্শ পরিবেশ। তেমন এক পরিবেশেও যেন শাহীন ছিলেন সাদামাটা।

সেই চোখে লেগে থাকা ইনসুইং কিংবা আউটসুইং কোথাও যেন একটা উবে গেছে। স্রেফ অভিজ্ঞতার বিচারে তিনি উইকেট বাগিয়ে নিচ্ছেন। তার প্রধান অস্ত্র হয়ে ধরা দিচ্ছে স্লোয়ার বল। অথচ ব্যাটারদের মনের ভেতরে ঝড় তুলে দেওয়ার কথা তার গতি দিয়ে। সুইং দিয়ে বারবার মনে করাবার কথা, ‘এদফা গেলাম বেঁচে’।

কিন্তু আইরিশ ব্যাটারদের মধ্যেও সেই ভয় ধরাতে ব্যর্থ তিনি। তার ওভারে হাতখুলে অনায়াসে ব্যাট চালিয়েছেন লরকান টাকার, কার্টিস ক্যাম্ফাররা। তার এক ওভারে ২১ রান অবধি নিয়েছেন আইরিশ ব্যাটাররা। চিরায়ত শাহীনের একেবারে ভিন্ন চিত্র।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪৯ রান দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান তিনি খরচ করেছেন। মার্ক অ্যাডায়ারকে পিনপয়েন্ট এক ইয়োর্কারে আউট করেছেন। এছাড়া চোখ ধাঁধানো কোন বলে তিনি উইকেট পেয়েছেন সেটা বলবার নেই কোন উপায়। পল স্টার্লিংয়ের উইকেট প্রাপ্তিতে কৃতীত্ব মোহাম্মদ আমিরের প্রাপ্য।

দারুণ এক ক্যাচ লুফে নিয়েছিলেন আমির। এছাড়া শাহীনকে মনে হয়েছে বড্ড বেশি ছন্নছাড়া। কোন প্রকার অতিরিক্ত রান না দিয়েও তিনি রান খরচে প্রায় অর্ধশতক ছুঁয়ে ফেলেছেন। এমন শাহীন নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণ। দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ, এমন সময়ে শাহীনের হারিয়ে যাওয়া পাকিস্তানের কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে নিঃসন্দেহে।

এক্ষেত্রে হয়ত অধিনায়কত্ব নিয়ে শাহীনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ কাজ করেছে প্রভাবক হিসেবে। মানসিকভাবে শাহীন হয়ত খানিকটা বিপর্যস্ত। প্রায় প্রতিটা খেলোয়াড় বিশ্বকাপের মঞ্চে দেশের জন্যে নিজেকে নিঙড়ে দিতে চান। শাহীনও হয়ত তেমন কোন পরিকল্পনার ছক এঁকে রেখেছিলেন। অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা তুলে ধরবেন গগন পানে তেমন স্বপ্ন বুনে রেখেছিলেন।

তাতে আঘাত এসেছে হুট করেই। বেশ রুঢ় কায়দায় তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অধিনায়কের পদ থেকে। তাতে করে মানসিকভাবে ধাক্কা খেয়েছিলেন শাহীন, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই ধাক্কা সামলে উঠে তিনি হয়ত দলের জন্যে সর্বোচ্চ নিবেদন প্রদর্শনের প্রেরণা খুঁজে পাচ্ছেন না। এমনটা চলতে থাকলে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভরাডুবি সুনিশ্চিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link