অবশেষে এক চিলতে স্বস্তি। না স্রেফ জয় পাওয়াই স্বস্তির কারণ নয়। ভারতের বিপক্ষে আরও কিছু ফ্যাক্টর বয়ে নিয়ে এসেছে স্বস্তির কারণ। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান যেন আবারও ফিরেছেন স্বরুপে। ব্যাট হাতে রান পেয়েছেন। দলকে বিপর্যয় থেকে তুলে নিয়ে এসেছেন আগের মত করেই।
খেলেছেন অধিনায়কোচিত এক ইনিংস। ৮০ রানে থামতে হয়েছে তাকে। তবে সেটা বরং দুর্ভাগ্যই। ইনসাইড এডজ হয়ে বল গিয়ে আঘাত করে স্ট্যাম্পে। ক্লান্ত বদনে বিরক্তির সবটুকু গায়ে জড়িয়ে বাইশ গজ ছাড়তে হলো তাকে। তবে প্রথা বদলায়নি। ম্যাচ সেরার পুরষ্কার উঠেছে তাকে।
নিজের ব্যাটিং নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন তিনি। ম্যাচ সেরার পুরষ্কার গ্রহণের পর তিনি বলেন, ‘আমি এবারের এশিয়া কাপে খুব ভাল ব্যাটিং করতে পারিনি। তবে আজকে আমার কাছে সময় ছিল থিতু হওয়ার। আমি যখন প্রথম বাউন্ডারি মারলাম, তা বেশ ভাল অনুভূতি দিয়েছিল।’
সাকিবের ঠিক এমন ভাল অনুভূতিই আসলে দরকার বাংলাদেশের। তিনি ফুরফুরে মেজাজে থাকা মানেই গোটা দল থাকবে উজ্জীবিত। যদিও ভারতের বিপক্ষে এই জয় শিরোপার কাছে নিয়ে যাচ্ছে না বাংলাদেশকে। তবে সাইড বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়াড়দের একটু পরখ করে নেওয়ার সুযোগটা তবু হয়েছে। সেটাই অবশ্য চেয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব।
তিনি বলেন, ‘যারা খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি তাদের আমরা সুযোগ দিয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম স্পিনাররা অবদান রাখবে হয়ত। সৌভাগ্যবশত তারা রেখেছে। অনেকগুলো ইনজুরি আর খেলোয়াড়দের যাওয়া আসা এশিয়া কাপে আমদের সহয়তা করেনি।’
তবে এদিন স্রেফ সাকিবই যে দারুণ খেলেছেন তা কিন্তু নয়। ধারাবাহিকভাবে আস্থার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন তাওহীদ হৃদয়। তিনিও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। দলের সংগ্রহে অবদান রেখেছেন। তবে বিশেষভাবে নজর কেড়েছেন নাসুম আহমেদ। লোয়ার অর্ডারে ৪৫ বলে ৪৪ রানের একটি কার্য্যকর ইনিংস খেলেছেন তিনি। বল হাতেও ছিলে একেবারে মিতব্যায়ী।
অন্যদিকে ব্যাট হাতে শেখ মেহেদী ও তানজিম হাসান সাকিব দূর্দান্তভাবে ব্যাট করেছেন। বল হাতেও তারা দলের জয় সুনিশ্চিত করেছেন। এই ম্যাচের বাড়তি প্রাপ্তি অভিষিক্ত তানজিম সাকিব। ব্যাট হাতে ছোট ক্যামিও ইনিংস খেলার পর বল হাতে শুরুতেই ভারতের দূর্গে আঘাত করেন তিনি। তাছাড়া মেহেদী প্রায় শেষ অবধি হাত ঘুরিয়েছেন। ভারতের রানের চাকায় লাগাম টেনে ধরেছেন, গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও বাগিয়েছেন।
তাদেরও প্রশংসা করেছেন সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, ‘যখন মেহেদী বল করতে আসে, তখন বল করা খুব সহজ ছিল না। তবুও সে শেষের দিকে টানা পাঁচ ওভার করেছে। আমার সাকিবকেও (তানজিম) কৃতীত্ব দেওয়া উচিত।’
দলগত পারফরমেন্সে বাংলাদেশ জয়টা অবশেষে তুলে নিতে পেরেছে। টুর্নামেন্ট শেষ করেছে তৃতীয় অবস্থানে থেকে। এশিয়া কাপ একেবারেই বাজে কেটেছে বলতেই হয়। তবুও সাকিব বিশ্বকাপে ভাল কিছুর আশাই করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের একটা ভাল দল রয়েছে (বিশ্বকাপের জন্য়ে)।’ সুতরাং আশাবাদী সাকিব এই জয়ে যেমন স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন, ঠিক তেমনি একমুঠো আত্মবিশ্বাসও কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।