ক্রান্তিকালেই সাকিবের ডাক আসে

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন এ কেমন কথা - ২০১১ বিশ্বকাপেও তো সাকিব আল হাসান অধিনায়ক ছিল, এখনো সে অধিনায়ক। কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, নেতৃত্বের ভার কখনোই দীর্ঘমেয়াদে পাননি এই অলরাউন্ডার। এমনকি তিনি ক্যাপ্টেন হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ টুকুও পেয়েছেন খুব কম।

কেবল সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারই নন, সাকিব আল হাসানকে বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেট মস্তিষ্কও ভাবা হয়। শুধু বাংলাদেশই নয়, পুরো বিশ্বেই সাকিবের মত ক্ষুরধার মস্তিষ্কের ক্রিকেটার বেশ বিরল। অধিনায়ক হিসেবে তাই সাকিব সেরা পছন্দ; তবে কাকতালীয় হলেও সত্য, ক্যারিয়ারের কোন পর্যায়েই তিনি ঠিকঠাক অধিনায়কত্ব করতে পারেননি।

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন এ কেমন কথা – ২০১১ বিশ্বকাপেও তো সাকিব আল হাসান অধিনায়ক ছিল, এখনো সে অধিনায়ক। কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, নেতৃত্বের ভার কখনোই দীর্ঘমেয়াদে পাননি এই অলরাউন্ডার। এমনকি তিনি ক্যাপ্টেন হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ টুকুও পেয়েছেন খুব কম।

সাকিব আল হাসানের প্রথম টেস্ট ক্যাপ্টেন্সির কথাই ধরা যাক। ২০০৯ সালে উইন্ডিজে সেবার টস করতে নেমেছিলেন মাশরাফি, কিন্তু সেই ম্যাচেই ইনজুরিতে পড়ায় হুট করে তরুণ সাকিবকে করা হয় অধিনায়ক। এরপর অবশ্য সেবার ২-০ তে স্বাগতিকদের উড়িয়ে দিয়েছিল টাইগাররা। পরের বছর কিউইদের বিপক্ষেও ঘটেছিল হুবহু একই ঘটনা।

পরবর্তীতে ২০১১ সালের বিশ্বকাপেও অধিনায়কত্ব করেছিলেন সাকিব। তবে এরপর সাকিবকে বাদ দিয়ে মুশফিকুর রহিমকে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, মুশফিক থেকে আর্মব্যান্ড ফিরে এসেছিল মাশরাফির কাছে।

ছয় বছর পর ২০১৭ সালে মাশরাফি মর্তুজা টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলে প্রথমবারের মত স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অধিনায়ক হন সাকিব আল হাসান। একই বছর সাদা পোশাকেও নেতা বানানো হয় তাঁকে। কিন্তু আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কারণে পুনরায় নেতৃত্ব ছাড়তে হয় সাকিবকে।

কিন্তু নেতৃত্ব ছাড়তে চায়নি নিজের যোগ্য সঙ্গীকে। তাই তো গত বছর অধিনায়কত্বের চেয়ারে বসার সুযোগ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এবারও নানাবিধ বিতর্কের মধ্য দিয়ে মুমিনুল হককে সরিয়ে সাকিবকে টেস্ট ক্যাপ্টেন করা হয়। এর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ উড়াল দিয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।

টেস্টের মত টি-টোয়েন্টিতেও হঠাৎ করেই ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্ব নিতে হয়েছিল সাকিব আল হাসানকে; সেটাও ছিল ২০২২ এশিয়া কাপের কয়েক দিন আগে। আর শেষমেশ চলতি বছরের এশিয়া কাপের দিন বিশেক আগে ওয়ানডে দলের নেতা বনে গেলেন সাকিব।

উপরের ঘটনাগুলো থেকে স্পষ্ট, সাকিব আল হাসান কখনোই ক্যাপ্টেন হওয়ার জন্য যথেষ্ট মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারেননি। আবার দলকে নিজের মত গুছিয়ে বড় টুর্নামেন্টে যাওয়ার সময়টুকুও দেয়া হয়নি তাঁকে। অধিনায়ক সাকিবের পুরো টাইমলাইন-ই এমন, হুটহাট বাঁকে ভরা।

অথচ মাশরাফি মর্তুজার পর বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে নেতৃত্ব দেয়ার কথা সাকিব আল হাসানের। কিন্তু কখনো ভাগ্যের পরিহাসে, কখনো বোর্ড কর্তাদের দূরদৃষ্টির অভাবে সেটা সম্ভব হয়নি। তবু সাকিব চেষ্টা করেছেন, নিজের সর্বস্ব দিয়ে টেনে তুলতে চেয়েছেন ভাঙাচোরা দলকে; পেয়েছেন ছোটখাটো সাফল্যও।

তবে এবার ছোটখাটো সাফল্যে মন ভরার কথা নয় কারোই, ২০২৩ বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের অধীনে বড় কিছু করবে বাংলাদেশ – সবার স্বপ্নটা এমনই। এখন শুধু মাঠে নামার অপেক্ষা, স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...