মানসিক স্বাস্থ্যও যে ঠিক কতটুকুন গুরুত্বপূর্ণ সেটা সম্ভবত টের পাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে বিশেষ ধরণের এক তরল জমা হচ্ছে তার চোখের রেটিনার পেছনের অংশে। দারুণ পীড়া দিচ্ছে তা তাকে। থমকে দিয়েছে তার ক্রিকেটীয় যাত্রা।
বিশ্বকাপের সময়ই চোখের সে সমস্যা ধরে পড়েছিল সাকিবের। চেন্নাইয়ে চোক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে চালিয়ে গেছেন বিশ্বকাপ। তবে তাতে লাভের লাভ কিচ্ছুটি হয়নি। বরং উল্টো তার অস্বস্তি ছড়িয়েছে গোটা দলে। বাংলাদেশ দলের হয়েছে ভরাডুবি।
এরপর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আগে তিনি বাংলাদেশেও নিজের চোখের পরীক্ষা করিয়েছেন। এমনকি মিরপুর ইনডোরে অনুশীলনের সময় চোক্ষু বিশেষজ্ঞকে হাজির করিয়েছিলেন। নিজের সমস্যাটা বোঝানোর জন্যে। সেখান থেকেও আশানুরুপ সমাধান মেলেনি। বাধ্য হয়েই বিপিএলের ঠিক আগ মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নেন সাকিব।
তাতেও আসলে কাজ হয়নি। এদফা তাই বাধ্য হয়ে তাকে যেতে হচ্ছে সিঙ্গাপুরে। সেখান থেকেই মিলবে সাকিবের চিকিৎসার পরবর্তী দিকনির্দেশনা। সাকিব যে রোগে আক্রান্ত তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে, সেন্ট্রাল সেরস কোরিওরেটিনোপ্যাথি বা সিএসসি। সাধারণত এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় তিন ধরণের- লেজার অস্ত্রপচার, ইনজেকশন ও ঔষধ সেবন।
অস্ত্রপচারেও লেগে যেতে পারে অনেকটা সময়। ঠিক সেকারণেই সাকিব ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মেডিকেল দল পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে পরিস্থিতি বিবেচনায়। সিঙ্গাপুর থেকে তাৎক্ষণিক কোন চিকিৎসায় দ্রুত সেরে উঠতে পারলে সে পন্থাই অবলম্বন করা হবে সাকিবের ক্ষেত্রে। কিন্তু তেমনটি না হলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অস্ত্রপচারের সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
সেদিক থেকে আবার মাথায় রাখতেই হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই বছরের জুনে আয়োজিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সে দলে সাকিব নিজেও যেমন থাকতে চাইবেন, তেমনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্টও তাকে রাখতে চাইবে নিশ্চিতরুপে।
সেক্ষেত্রে হয়ত বিপিএল থেকে একেবারের মতই ছিটকে যেতে পারেন সাকিব আল হাসান। তবে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার কারণে বিপিএলের অন্তত দুই-তিন ম্যাচে দেখা যাবে না সাকিবকে। সেটা বরং খানিকটা দুশ্চিন্তার উদ্রেক ঘটাবে রংপুর রাইডার্স শিবিরে।
সাকিব মূলত ব্যাটিংয়ের সময় চোখের সমস্যাটা ঝামেলার সৃষ্টি করে। চোখে জমাট হওয়া সেই তরল দৃষ্টিশক্তিতে ব্যঘাত ঘটায়। আর সে কারণেই ব্যাটিং করতে অসুবিধায় পড়তে হয় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। সে বিষয়টি তিনি মিরপুর ইনডোরেও চিকিৎসককে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। এখন ঠিক সাকিব কোন পথে হাটবেন সেটা সময় গড়ালেই জানা যাবে।