আইপিএল ছেড়ে ডিপিএলে সাকিব

বাংলাদেশের ক্রিকেট মহল বিগত কিছুদিন ধরেই ছিল বেশ সরগরম। দু’ভাগে বিভক্ত বোর্ড আর পুরো গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সমর্থকরা। ইস্যু মূলত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের আইপিএলে যোগদান নিয়েই যত ধোঁয়াশা। তবে শেষ অবধি হয়ত বোর্ড নিজেদের সিদ্ধান্তে থেকেই গেল অনড়। সাকিবও বোর্ডের সেই রায় মেনে নিয়েছেন মাথা পেতে।

রগচটা, খামখেয়ালি সাকিব তাইতো খেলছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচ। আগের রাতে আয়ারল্যান্ডের সাথে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারার পরই সাকিব চলে এসেছেন ঢাকায়। এসেই তিনি চলে গেছেন সাভারে অবস্থিত বিকেএসপি চার নম্বরে মাঠে। সেখানে তিনি মোহামেডানের জার্সি গায়ে খেলতে নেমেছেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে।

অথচ গেল কয়েকটা দিন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সাকিব আল হাসান। সবার ধারণা ছিল তিনি অনাপত্তিপত্র পেয়ে গেছেন। আইরিশদের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচ খেলেই তাঁর পাড়ি জমানোর কথা ভারতে। যোগ দেওয়ার কথা কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরে। কিন্তু অবশেষে সাকিব তবে খানিকটা নমনীয় হয়েছেন। কোন প্রকার বিবাদে না জড়িয়ে তিনি মাঠে নেমেছেন মোহামেডানের হয়ে।

তবে মোহামেডানের জার্সি গায়ে খুব একটা আলো ছড়াতে পারেননি সাকিব। প্রথমে ব্যাট করা মোহামেডানের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ফিরে গেছেন অতি দ্রুতই। নয় বলে পাঁচ রান করেই তিনি ফিরে গেছেন প্যাভিলিয়নে। মোহামেডানের জার্সিতে এই মৌসুমে প্রথমবারের মত খেলতে নেমে আলো ছড়াতে ব্যর্থ তিনি।

কিন্তু সাকিব অনাপত্তিপত্র পেয়ে গেলে হয়ত রাতেই চলে যেতেন ভারতের পাঞ্জাবে। সেখানেই তো তাঁর দল কলকাতা নাইট রাইডার্স খেলবে তাদের প্রথম ম্যাচ। বর্তমানে কলকতা খানিকটা বিপাকেই রয়েছে। দলটিতে নেতৃত্ব সংকট দেখা দিয়েছে। নিতিশ রানাকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পড়িয়ে দেওয়া হয়েছে উপায়ন্তর খুঁজে না পেয়ে। যদিও তিনি ততটা অভিজ্ঞ নন। সেদিক থেকে সাকিব হয়ত তাঁর ফ্রাঞ্চাইজিকে অভিজ্ঞতা দিয়ে সহয়তা করতে পারতেন। আর আইপিএলের মত মঞ্চে দেশীয় কাওকে নেতৃত্ব দিতে দেখার দৃশ্যটা হাতছাড়া করতে নারাজ ছিল সবাই।

তবে সেটা নিশ্চয়ই একটা আক্ষেপ হয়ে রয়ে গেল। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাকিব বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর অধিনায়কত্বে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাই করেছে টাইগাররা। সেখানে ব্যাট-বল হাতেও অবদান ছিল সাকিব আল হাসানের। তাইতো কলকাতাও বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছিল সাকিবকে শুরু থেকে পেতে। যদিও শেষ অবধি তা আর হচ্ছে না। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলেই তবে ছুটি মিলবে সাকিবের।

সাকিব আল হাসানকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বললে নিশ্চয়ই ভুল বলা হয় না। বিশ্ব ক্রিকেটে তিনিই তো বাংলাদেশের নামটি ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেই শুরু লগ্ন থেকে তিনি অলরাউন্ডারদের তালিকায় রাজত্ব করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই দেশ-বিদেশের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট গুলোতে তাঁর ডাক আসে। তিনি বিশ্বের নানান প্রান্তের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

এবারের আইপিলে তিনি সহ আরও দু’জন বাংলাদেশির সুযোগ মিলেছে। সাকিব, লিটন ছাড়াও মুস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন আইপিএলে। সাকিব, লিটন অনাপত্তিপত্র না পেলেও মুস্তাফিজ পেয়ে গেছেন। তিনি ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন। বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল আটটার দিকে একটি চার্টার্ড বিমানে করে তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে গেছে দিল্লি ক্যাপিটালস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link