দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এমতাবস্থায় ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ ব্যাকস্ট্রেস ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়লেন বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকেই। ভারতের ভাগ্যের চাকা একা হাতে ঘুরাতে পারা প্রধান পেসারের ইনজুরি শঙ্কায় ফেলেছে গোটা ম্যানেজমেন্টকে। প্রয়োজন তাই বিকল্প খোঁজা। কিন্তু জাসপ্রীত বুমরাহর হঠাৎ বিকল্প খু্ঁজে নেয়া তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। তবে অন্তত কাজ চালানোর মতো কাউকে লাগবে, জাসপ্রিতের মতো না হলেও কাছাকাছি একজন উপযুক্ত বিকল্প খুঁজে নিয়ে ভারতকে বিশ্বকাপ মিশনে নামতে হবে।
বিশ্বকাপের জন্য জাসপ্রিত বুমরাহর বিকল্প হিসেবে ভারতীয় দলে ডাক পেতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ শামি- এই গুঞ্জনটি বাতাসে সবচেয়ে জোরালো ভেসে বেড়াচ্ছে। পাশাপাশি এই তালিকায় মোহাম্মদ সিরাজ ও দীপক চাহারের নাম শোনা গেলেও, সম্প্রতি ভারতীয় কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য শামির দিকেই নির্দেশ করছে।
প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেন, ‘আমরা বুমরাহর বিকল্প দেখছি। আমাদের কাছে ১৫ অক্টোবর (আইসিসির সময়সীমা) পর্যন্ত সময় আছে। শামি এখন অবধি স্ট্যান্ডবাইতে আছেন, কিন্তু তিনি দুর্ভাগ্যবশত এই দুটি সিরিজে খেলতে পারেনি।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক সিরিজে মোহাম্মদ শামি খেলার সুযোগ পাননি। কারণ মোহাম্মদ শামি কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে একটিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি শামি।
অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন সম্পর্কে পরিচিতি মোহাম্মদ শামিকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। কারণ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়েছিলেন যে অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা আছে, এমন কাউকেই দলে বাছাই করতে চান তিনি। পূর্বে বেশ কয়েকবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় দলের অংশ হিসেবে খেলতে গিয়েছিলেন শামি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁদের বিপক্ষে দুটি টেস্টও জিতেছিলো শামির দল। আবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া ২০১৫ বিশ্বকাপেও ভারতীয় জাতীয় দলের অংশ হিসেবেও খেলেছেন তিনি। তাই সবমিলিয়ে ওই কন্ডিশনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বাকি সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন এই বোলার।
তবুও মোহাম্মদ শামির ফিটনেস প্রসঙ্গে একটা কিন্তু রয়ে গিয়েছে। শামি বিশ্বকাপের মতো মিশনে দলের পেস আক্রমণের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতোটা ফিট তা বিবেচনায় রাখতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
শামির কোভিড রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে জানিয়েছেন দ্রাবিড়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের পর দ্রাবিড় সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘শামি কতটা সেরে উঠছেন, তার জন্য আমরা মেডিক্যাল রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। ১৪-১৫ দিন অপেক্ষার পরে আমি কিছু একটা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারবো।’
বর্তমানে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে ফিটনেস নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শামি। সম্ভবত ফিটনেস বিষয়ক সবুজ সংকেত পেলেই শীঘ্রই এই সিনিয়র পেসারের নাম ঘোষণা করবে বিসিসিআই।
এই মুহুর্তে দুটি শীর্ষ দলের বিরুদ্ধে ছয়টি ম্যাচ মোকাবেলা করার পরে, ভারতের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ডেথ বোলিং। পাওয়ার প্লে তে দারুণ বোলিং করলেও, প্রায় প্রতি ম্যাচেই শেষের ওভারগুলোয় শুরুর ছন্দ ধরে রাখতে পারছেন না ভারতীয় বোলাররা। শেষ দিকে এসে দেদারসে রান বিলিয়ে আসছেন বোলাররা।
আগামী ছয় অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হবে টিম ইন্ডিয়া। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার জন্য ব্রিসবেনে যাওয়ার আগে, তারা অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পার্থে কয়েকটি অনুশীলন ম্যাচও খেলবে। আগামী ২৩ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ভারত তাঁদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। তার আগে বুমরাহ বিষয়ক সিদ্ধান্তে আসলেই কাকে ভরসা করবে টিম ম্যানেজমেন্ট সেটাই দেখার পালা।