দুর্দান্ত শরিফুলে ছত্রখান সিলেট

নতুন বল আর শরিফুল ইসলাম – অনন্য এক গল্প লিখে চলছে সমানতালে। হোক বাংলাদেশের জার্সি, হোক অন্য কোন রংয়ের; নতুন বল হাতে উঠলেই তিনি হয়ে উঠছেন দুর্বার, দুর্দান্ত। তাঁর সুইং আর ভেরিয়েশন থেকে যেমন বাঁচতে পারেনি নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডার তেমনি বাঁচতে পারলো না সিলেট স্ট্রাইকার্সের নাজমুল শান্তরা।

সবমিলিয়ে সিলেটের বিপক্ষে চার ওভার বল করেছেন শরিফুল। নিয়েছেন চার উইকেট আর সেজন্য খরচ করেছেন ২৪ রান। তবে প্রথম স্পেলে তিনি যা করেছেন সেটা চোখে লেগে থাকবে অনেকদিন; পাওয়ার প্লেতেই করেছন তিন ওভার, আর সেসময় আট রানের বিনিময়ে নিয়েছেন তিন উইকেট।

প্রথম ওভারেই তাঁর হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়কত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সেই ওভারে একাধিকবার পরাস্ত হয়েছিলেন শান্ত, যদিও আরেক ওপেনার শামসুর রহমান মোটে এক বল খেলতে পেরেছেন, তাতেই হয়েছেন বোল্ড। ফুল লেন্থের বল লেট সুইং করে উপড়ে দিয়েছিল তাঁর স্ট্যাম্প।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আবারো আক্রমণে আসেন এই বাঁ-হাতি। পিচের প্রান্ত বদলে যাওয়ায় হয়ে উঠেন আরো ক্ষুরধার, জাতীয় দলের দুই সতীর্থ শান্ত ও জাকির হাসানকে পরপর দুই বলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তিনি। মুহূর্তের মাঝে ১৩ রানে তিন উইকেটের দলে পরিণত হয় সিলেট।

ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে কোন উইকেট না পেলেও আঁটসাঁট বোলিং চালিয়ে গিয়েছেন এই তারকা। পাওয়ার প্লের ফিল্ড রেস্ট্রিকশনের মাঝে বল করা স্বত্তেও রান তুলতে পারেনি ব্যাটাররা। অবশ্য এমন দুর্ধর্ষ বোলিং করলে পারার কথাও নয়।

শেষদিকে আবারো বোলিংয়ে এসে বিধ্বংসী হয়ে উঠা আরিফুল ইসলামের উইকেট শিকার করেন তরুণ এই পেসার। দুই বলে দুই ছয় হজম করার ব্যাপারটি বাদ দিলে সেই ওভারেও ভাল করেছিলেন তিনি।

 

২০২৩ সাল জুড়ে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। অফ ফর্মের ভার ঝেড়ে ফেলে তিন ফরম্যাটেই পারফরমার হয়ে উঠেছিলেন। বল হাতে বিদায়ী বছরের বিশ্বসেরা একজন ছিলেন পঞ্চগড়ের এই ক্রিকেটার।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও তাই তাঁর উপর ভরসা রেখেছিল দুর্দান্ত ঢাকা, সেই ভরসার প্রতিদান দিতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব হয়নি এই তরুণের। প্রথম ম্যাচেই করেছিলেন হ্যাটট্রিক, ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সিলেটের বিপক্ষে নিলেন চার উইকেটের স্বাদ। সবমিলিয়ে পাঁচ ম্যাচ খেলে এই বাঁ-হাতি নিয়েছেন দশ উইকেট, টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও এখন তিনিই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link