‘ক্যাপ্টেন্স নক’ বাই শুভাগত হোম

ঠিক যেমন করে একজন অধিনায়কের খেলা উচিৎ, তেমন একটি ইনিংসের উপহার দিলেন শুভাগত হোম। এদিন যেন সাজঘর থেকে ব্রত নিয়েই নেমেছিলেন। দলের জন্যে কিছু একটা করতেই হবে। হোক সেটা একেবারে শেষ সময়ে। তবুও, অধিনায়ক হিসেবে একটা ছাপ ফেলে যাওয়ার প্রচেষ্টা। সে প্রচেষ্টায় ষোল আনা সফল শুভাগত হোম।

গেল আসরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দলটির অধিনায়কত্ব নিয়ে বেশ জলঘোলা হয়েছিল। তবে সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার কোন রকম বিতর্কের ধারেকাছেও যেতে চায়নি ফ্রাঞ্চাইজিটি। তাইতো শুরু থেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শুভাগত হোমকে দায়িত্ব দিয়েছেন দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার। কাজটা ঠিকঠাক করতে মোটা দাগে ব্যর্থই হয়েছেন তিনি। ব্যাট হাতে খুব একটা আলো ছড়াতে পারেননি। দলগতভাবেও শূন্যহাতে টূর্নামেন্ট শেষ করবার অপেক্ষায় চট্টগ্রাম ও শুভাগত।

এমন এক পরিস্থিতিতে শুভাগত হোম ঠিক করলেন যে নিজের সামর্থ্যের একটা প্রমাণ রেখে যাওয়ার প্রয়োজন। সিলেট পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠলেন শুভাগত। ড্রেসিং রুম থেকেই মানসিক প্রস্তুতিটা তিনি নিয়ে এসেছিলেন। বাইশ গজে নেমে নিজের উদ্দেশ্যটা স্বচ্ছ কাচের মত পরিষ্কার করে দেন হোম। থিসারা পেরার তিন বলে ১৪ রান আদায় করেন তিনি। প্রথম বলটিতে চার এরপরের দুইটি বল হাওয়ায় ভেসে আছড়ে পড়ে সীমানার বাইরে।

সিলেট স্ট্রাইকার্সের বোলারদের যেন বুঝিয়ে দিলেন আজ তাঁকে কেউ থামাতে পারবে না। পারেনিও বটে। হোম যখন ব্যাটিং করতে আসেন তখন দলের রান ছিল ৯০ তিন উইকেট হারিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে দলের রান বাড়ানোর পাশাপাশি উইকেট ধরে রাখাটাও ছিল জরুরি। এমন মুহূর্তে পালাটা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম। অন্যদিকে চোখের পলকে ৯৭ রানে পাঁচ উইকেট হয়ে যায় চট্টগ্রামের স্কোর।

তবে তাতে টলেননি শুভাগত হোম। দারুণ সব শটে তিনি রান তুলতে থাকেন নিয়ম করে। দ্রুতগতিতে রান তোলাই তো টি-টোয়েন্টি চাহিদা। সেই চাহিদা মিটিয়ে তিনি সিলেটের বোলারদের স্বস্তির জায়গাটুকু কেড়ে নেন। তিন ছয় ও তিন চারে তিনি ৫৪ রানের দূর্দান্ত এক ইনিংস সাজান। এই ইনিংসের জন্যে তিনি খরচ করেন ২৯টি বল।

দলের পক্ষে শেষদিকে রান তোলেন তিনি। এর আগে ধীর পায়ে চট্টগ্রামের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদি মারুফ। ওপেনিংয়ে নামা মারুফ অর্ধশতকের দেখা পেলেও ২৭ বলে ৩৪ করে ফিরে যান আফিফ। তবে তাতে অবশ্য চট্টগ্রামের আরও একটি পরাজয়ের শঙ্কা এড়ানো যায়নি। কারণ চট্টগ্রামের ব্যাটিং পারফরমেন্স খুব একটা সুবিধার ছিল না পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই।

কিন্তু চট্টগ্রামের বোলারদের লড়াই করবার মত সুযোগটা করে দেন অধিনায়ক হোম। তাঁর ৫৪ রানে ঝড়ো ইনিংসটির সুবাদে চ্যালেঞ্জার্সের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ১৭৪ রানে। শুভাগত হোমের কাছ থেকে এমন একটি ইনিংসের অপেক্ষাই যেন করছিলেন চট্টগ্রামের সমর্থকরা। মারকুটে কিন্তু দায়িত্বশীল এক ইনিংস। সে ইচ্ছেটা পূরণ হয়েছে। তবে বড্ড দেরীতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link