অবশেষে ভারতের জয়ের ধারায় ছেদ পড়েছে; পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে অপরাজিত থাকার পর ফাইনালে এসে পরাজয়ের স্বাদ পেলে স্বাগতিকরা। আর তাতেই ষষ্ঠবারের বিশ্বকাপ জিতলে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিং, বোলিং কোন বিভাগেই অজিদের দাপুটে পারফরম্যান্সের সাথে পেরে উঠেনি দলটি; হেরেছে সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে।
আগে ব্যাট করতে নেমে বরাবরের মতই ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত শর্মা। তবে ওপেনিংয়ের সঙ্গী শুভমান গিলকে এদিন বেশিক্ষণ সাথে পাননি তিনি, মাত্র চার রানেই আউট হয়েছেন এই তরুণ। এরপর অবশ্য বিরাট কোহলিকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন এগিয়ে যেতে থাকেন এই ব্যাটার, কিন্তু ট্রাভিস হেডের দুর্ধর্ষ এক ক্যাচে ৪৭ রানেই থামতে হয় তাঁকে।
ইনফর্ম শ্রেয়াস আইয়ার অবশ্য ফাইনালের চাপ নিতে পারেননি, কামিন্সের বলে কিপারের গ্লাভসবন্দী হন তিনি। যদিও বিরাট ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন; তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। অন্যপ্রান্তে লোকেশ রাহুলও মানিয়ে নেন পিচের সাথে। সবমিলিয়ে ভাল অবস্থাতেই ছিল টিম ইন্ডিয়া, তবে অজি অধিনায়ক কোহলিকে তুলে নিতেই বদলে যায় দৃশ্যপট।
সুরিয়াকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা কেউই পারেননি বলার মত কিছু করতে। ফলে ব্যাটিং ধ্বসের মুখোমুখি হয় স্বাগতিকরা। রাহুল হাফসেঞ্চুরি করলেও ইনিংসের বড় করতে পারেননি, ১০৭ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। ফলে ২৪০ রানের বেশি করতে পারেনি ভারত।
মাঝারি মানের টার্গেট, তবে প্রতিপক্ষে মোহাম্মদ শামি-বুমরাহরা আছেন বলেই অস্ট্রেলিয়ার স্বস্তিতে থাকার সুযোগ ছিল না। অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার; মিচেল মার্শও টিকতে পারেননি বুমরাহর পেসের সামনে। অভিজ্ঞ স্টিভ স্মিথকেও প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয় আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে, সবমিলিয়ে ৪৭ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে অজিরা।
কিন্তু দলকে ভেঙে পড়তে দেননি হেড, তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন মার্নাস লাবুশানে। এই দুই ব্যাটারের ম্যারাথন জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে আসে অজিদের হাতে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালের পর ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালেও সেঞ্চুরি তুলে নেন অজি ওপেনার; ধৈর্যের পরিচয় দেয়া লাবুশানেও পেয়ে যান অর্ধশতক।
শেষপর্যন্ত হেডের ১২০ বলে ১৩৭ রান আর লাবুশানের ৫৮ রানে ভর করে নির্ধারিত লক্ষ্য টপকে যায় অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত প্রথম স্কোয়াডে ছিলেন না একজন, অন্যজন তো খেলতেই পারেননি টুর্নামেন্টের বড় একটা অংশ। অথচ কাকতালীয়ভাবে হলেও এই দুজনেই রচনা করেছেন ইতিহাস। সাত উইকেটের বড় জয়ে বিশ্বকাপ নিজেদের করে নিয়েছে রিকি পন্টিংদের উত্তরসূরীরা।