সোহান বনাম ‘দুই’

সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। স্বাভাবিকভাবেই খেলোয়াড়দের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা সঞ্চার ঘটছে। নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে সবাই যেন বদ্ধপরিকর। তাইতো মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম খেলোয়াড়দের পদচারণায় মুখর। আজ বিশ্বকাপ দলে থাকা তিন ক্রিকেটার ছিলেন অনুশীলনে মগ্ন।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন নুরুল হাসান সোহান। তবে তাঁর মূল দায়িত্বটা থাকবে ব্যাট হাতে। নিজেকে তাই ঝালাই করে নিচ্ছেন সোহান। লোয়ার মিডল অর্ডারে দ্রুতগতিতে রান তোলার কাজটা মূলত সোহানকেই করতে হবে। তাইতো সোহানকে মিরপুর সেন্টার উইকেটে দেখা গেল রুদ্রমূর্তিতে। ব্যাটের সাথে সংযোগটা বেশ শ্রুতিমধুরই যেন হচ্ছিল তাঁর।

তাইতো বড় বড় শট খেলার প্রচেষ্টা করেছেন তিনি অনুশীলনের আদ্যোপান্ত। সোহানের মারকাটারি ব্যাটিং অনুশীলনের বলি হয়েছেন সাইফউদ্দিন ও হাসান মাহমুদ। জাতীয় দলের এই দুই বোলার সহ কারওই যেন রেহাই মেলেনি আজ সোহানের কাছ থেকে। নিজের ব্যাটিংটাকে পোক্ত করে নেওয়ার পাশাপাশি উইকেট কিপিং অনুশীলনটাও সেরে নিয়েছেন সোহান। বেশি ঝড়টা গেল সাইফউদ্দিনের ওপর দিয়ে। একেকটা ছক্কা গিয়ে আছড়ে পড়ছিল মিরপুরের গ্যালারিতে।

উইকেটের পেছনে এই মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা, তা নিয়ে দ্বিমত নেই। তবে সেরাদেরও তো প্রয়োজন হয় অনুশীলনের। বিশ্বকাপের মঞ্চটা তো বেশ বড়। সেখানে তো আর ভুল করবার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। নিজেকে তাই পরিপূর্ণ প্রস্তুত করেই অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের বিমান ধরতে চান সোহান। ইনজুরি কাটিয়ে নিজেকে ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টাই যেন চালাচ্ছেন তিনি অনুশীলনে।

এই ইনজুরির ভয়াল থাবা থেকে বেড়িয়ে আরও একজন নিজেকে মেলে ধরার অপেক্ষা রয়েছেন। তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি এবারের এশিয়া কাপ। সে আক্ষেপ নিশ্চয়ই পোড়ায় তাঁকে। তবে আক্ষেপে পুড়ে কালক্ষেপন করবার বিন্দুমাত্র সময় যে নেই হাতে। হাসান মাহমুদ সে বিষয়েও নিশ্চয়ই বেশ সতর্ক। তাইতো তিনি ঘাম ঝড়াচ্ছেন মিরপুর সেন্ট্রাল উইকেটে।

প্রথমে নিজের প্রধান অস্ত্র বোলিংটাকে শাণ দিলেন। এরপর ব্যাট হাতে নেমে গেলেন। টেল এন্ডারদেরকেও যাতে ভরসা করতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট সেটারই এক প্রয়াস। ইনজুরির বাঁধা কাটিয়ে আবারও মাঠে ফেরা এই দুই ক্রিকেটারকে সঙ্গ দিয়েছেন আরেক ক্রিকেটার সাইফউদ্দিন। তিনিও বেশ একটা লম্বা সময় ধরে ছিলেন না জাতীয় দলে। ফিরে এশিয়া কাপের এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তবে আলো কাড়তে পারেননি।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পেসবান্ধব উইকেটের কথা মাথায় রেখে সাইফউদ্দিন সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বকাপ দলে। একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার দলের ভারসাম্য রক্ষা করতে বেশ ভাল ভূমিকাই রাখবেন তিনি। তবে তাঁকে পারফরম করেই দলে জায়গা করে নিতে হবে। সে জন্য অবশ্য অনুশীলনের বিকল্প নেই। সাইফও তাই পিছিয়ে নেই। তিনিও পরিশ্রম করছেন। ব্যাটিং-বোলিং সব অনুশীলনই তিনি করছেন।

নিজেকে পূর্ণ প্রস্তুত করেই তবে হাজির করতে চাইছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিটা ক্রিকেটারের নিশ্চয়ই খানিকটা চাপে রয়েছেন। প্রতিটা খেলোয়াড় নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে চাইবেন। তবে সময় বলে দেবে অনুশীলন ঠিকঠাক কাজে আসল কি না। মাঠের ক্রিকেট আর অনুশীলনের ফারাকটা আকাশ-পাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link