ঘরোয়া ক্রিকেটে রান পান না, এ দল কিংবা গা গরমে ম্যাচেও রান পান না – তবু কেন যেন টিম ম্যানেজম্যান্ট বিশেষ করে হেডকোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের সব আকর্ষণ সৌম্য সরকারকে ঘিরে। সৌম্য অবশ্য প্রতিবারই ব্যর্থতার পরিচয় দেন, আর ভুল প্রমাণ করেন তাঁর উপর আস্থা রাখা মানুষদের।
বিশ্বকাপ দলে ব্যাকআপ ওপেনার এবং সাত নম্বর ব্যাটারের অভাব – সৌম্য সরকারকে খেলানো যায় দুই জায়গাতেই। তাই হয়তো প্রসেসের বাইরে গিয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজে সুযোগ দেয়া হয়েছে অফ ফর্মের সৌম্যকে, কিন্তু তিনি পারেননি চমক জাগানিয়া কিছু করতে, পারেননি ‘স্পেশাল কল’ এর মর্যাদা রাখতে। উল্টো হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে।
পুরো দেশের মনোযোগ যখন সৌম্য সরকারের দিকে, তখন তাঁর নিজের মন বোধহয় অন্য কোথাও ছিল। তাই হয়তো ইশ সোদির বল সোজা ব্যাটে ডিফেন্স করতে গিয়ে বোলারের হাতেই সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি; আউট হওয়ার পর এই ব্যাটারের প্রতিক্রিয়া দেখেই বোঝা যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার মত নূন্যতম আত্মবিশ্বাসটুকুও নেই।
শূণ্য রানে আউট হয়ে সৌম্য সরকার যেমন হতাশ করেছেন ভক্ত-সমর্থকদের তেমনি কুড়িয়ে পাওয়া সুযোগ হারিয়েছেন নিশ্চিতভাবেই। এবার অন্তত তাঁকে নিয়ে পরিকল্পনা করবে না টিম বাংলাদেশ, করলে অবশ্য সেটা হবে একগুঁয়েমির দৃষ্টান্ত।
পেস বোলিং অলরাউন্ডার, ফিনিশার কত পরিচয়েই জাতীয় দলে ঢোকার রাস্তা দেখিয়ে দেয়া হয়েছিল সৌম্য সরকারকে। কিন্তু তাঁর পারফরম্যান্স দেখলে মনে হয় যেন লাল-সবুজের জার্সি থেকে দূরে থাকার পণ করেছেন; এমনকি পারফর্ম করার নিবেদন টুকুও চোখে পড়ে সৌম্যের মাঝে।
বয়সের কোটা ত্রিশ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এই বামহাতিকে রাখা হয়েছিল ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলে। উদ্দেশ্যটা একই ছিল, বিশ্বকাপ আর এশিয়া কাপের আগে সৌম্যকে ফর্মে ফেরানো। কিন্তু বয়স ভিত্তিক সেই টুর্নামেন্টে বলার মত কিছু করতে পারেননি তিনি, ফলে জায়গা হয়নি মূল এশিয়া কাপেও।
যদিও বিসিবির রাডারে রয়ে গিয়েছিলেন ঠিকই; আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার আগে বাংলা টাইগার্সের হয়ে খেলেছিলেন এশিয়ান গেমস স্কোয়াডের বিপক্ষে। সেখানেও আহামরি পারফর্ম করা হয়নি তাঁর। তবু ভাগ্য তাঁকে সুযোগ দিয়েছিল নতুন করে শুরু করার, সেটাও আর পারলেন কই।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে সৌম্য সরকার ছিলেন বাংলাদেশ দলের এক্স ফ্যাক্টর। ভবিষ্যত বাংলাদেশের কান্ডারি ভাবা হতো তাঁকে, অথচ বছর খানেক পরেই পথ হারিয়েছেন তিনি। আর ফেরা হলো না তাঁর। গত প্রায় এক দশকে বারবার সুযোগ পেলেও কাজে লাগানো হয়নি কখনো, ঠিক এবারের মতই।