যেদিন সৌম্য সরকার ব্যাটিংয়ে ছন্দে থাকেন, সেদিন সবাই তাঁকিয়ে দেখেন। তাঁর মধ্যে প্রতিশ্রতি বা প্রতিভার কোনো কমতি নেই – বরং সেই তুলনায় পারফরম্যান্সের ভাঁটা পড়ে যায় প্রায়ই, অকারণেই। বাংলাদেশে যত প্রতিভাবান ব্যাটারই এসেছেন, প্রায় সবাই-ই কালক্রমে আক্ষেপ বাড়িয়েছেন। সৌম্য সরকার তাদের মাঝে ওপরের দিকেই থাকবেন।
তিনি নিজের দিনে কি করতে পারেন – লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে অপরাজিত ১৫৩ রানের ইনিংসটা হয়তো সে কথাটাই মনে করিয়ে দিল। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে ১১২ বলের ঝাঁ-চকচকে এই ইনিংস যেন ভিনটেজ সেই সৌম্য যিনি এক সময় বিশ্বের নামিদাবি বোলারদের তুলোধুনো করতেন অনায়াসেই।
সৌম্য সরকারের ব্যাট যেন রোদ-মেঘের লুকোচুরি খেলার মতোই—এই হাসে, আবার এই মিলিয়ে যায়। তবে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ইনিংসে ব্যাট হাতে পুরোটা সময় আলো ছড়িয়েছেন। সৌম্যর এমন ব্যাটিংই তো সবাই দেখতে চায়।
সুপার সিক্সের লড়াইয়ে বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে মুখোমুখি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ এবং অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। শুরুতে ব্যাটিংয়ে রূপগঞ্জের দুই ওপেনার সাইফ-তামিমের দারুণ সূচনা। তবে, দিনটা ছিল সৌম্য সরকারের। শুরুটা করলেন প্রপার ওয়ানডে স্টাইলে। দারুণ সব শট দেখে বোঝা যাচ্ছিল বড় ইনিংস খেলতে চলেছেন সৌম্য।
৫৮ বলেই তুলে নেন ফিফটি। এরপরই চড়াও হতে শুরু করেন বোলারদের উপর। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পান ৯২ বলে। তবে এখানেই শেষ করেননি। বিকেএসপিতে রীতিমতো ঝড় তুলেছেন। পরের ২০ বলে করেছেন ৫৩ রান।
সৌম্যের পুরো ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১১২ বলে ১৫৩ রানে অপরাজিত থেকে। ১৭ টি চার এবং ছয়টি ছয়ের সাহায্যে স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩৬.৬১। এদিন চার-ছয়ের ফোয়ারা দেখেছিল অগ্রণীর বোলাররা। ক্রিজে ছিলেন ১৬১ মিনিট। পুরোটা সময় ডমিনেটিং পারফরম্যান্সে মনে করিয়েছেন সেই পুরোনো সৌম্যের আগ্রাসন। সৌম্যর এই ইনিংসে ভর করেই সুপার লিগের ম্যাচে ১০৩ রানে জিতে যায় লিজেন্ড অব রুপগঞ্জ।