সিরিজ জয়ের জন্য লক্ষ্য বেশি বড় ছিলো না। কিন্তু শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। কিন্তু সব শঙ্কা দূর করে মাহমুদুল হাসান জয় ও তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ড উলভসকে ৮ উইকেটের বড় ব্যাবধানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের যুবারা।
চট্টগ্রামে প্রথম ওয়ানডে পরিত্যক্ত হলেও পরের দুই ম্যাচে দাপুটে জয় পাওয়া বাংলাদেশের সামনে আজ ছিলো সিরিজ জয়ের হাতছানি। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে বোলারদের নৈপুণ্যে মাত্র ১৮৩ রানের লক্ষ্য পেয়েছিলো বাংলাদেশ।
বলা যায়, জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররাই। চারটি উইকেট নেন পেসার সুমন খান। রকিবুল হাসান ও সাইফ হাসান দুটি করে এবং মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ শিকার করেন একটি উইকেট।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তানজিদ হাসান তামিম ও ইয়াসির আলি রাব্বিকে হারিয়ে বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। কিন্তু দলীয় ১০ রানে ২ উইকেট হারানোর পরেই ব্যাট হাতে দৃশ্যপটে আসেন মাহমুদুল হাসান জয় ও তৌহিদ হৃদয়।
দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে শুরুতে দেখে শুনে খেললেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে হাত খুলে খেলতে থাকেন এই দুজন। আইরিশ বোলারদের কোন সুযোগ না দিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৭৬ রান যোগ করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার সময় মাহমুদুল হাসান জয় অপরাজিত ছিলেন ১৩৫ বলে ৮০ রান করে এবং তৌহিদ হৃদয় অপরাজিত ছিলেন ৯৭ বলে ৮৮ রান করে। আয়ারল্যান্ড উলভসের হয়ে দুটি উইকেটই শিকার করেন পিটার চেজ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আয়ারল্যান্ড উলভস। দলীয় ১৪ রানে আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডহেনিকে (১১) মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ফিরিয়ে দেওয়ার পর ধ্বংসযজ্ঞ চালান সুমন খান। এই পেসার একে একে ফিরিয়ে দেন জেরেমি ললর (১৬), হ্যারি ট্যাকটর (০) ও কার্টিস ক্যাম্ফারকে (৫)।
৫৪ রানে ৪ উইকেট হারানো আয়ারল্যান্ড উলভস পঞ্চম উইকেটে মার্ক অ্যাডাইর ও লরকান টাকারের ব্যাটে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেস্টা করে। তবে এই দুজনকে বেশী দূর যেতে দেননি রকিবুল হাসান। ৪০ রান করা মার্ক অ্যাডাইরকে ফিরিয়ে দিয়ে ৪৬ রানের জুটি ভাঙার পর লরকান টাকারকেও (২৪) ফিরিয়ে দেন এই স্পিনার।
এর পরের ওভারে গ্যারেথ ডিলানি মকিদুল ইসলাম মুগ্ধর বলে আউট হয়ে গেলে ১১২ রানে ৭ উইকেট হারানো আইরিশদের গুটিয়ে যাওয়া যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিলো তখনই প্রতিরোধ গড়েন রুহান প্রিটোরিয়াস ও গ্রাহাম হিউম। এই দুজন অস্টম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৫৭ রান। প্রিটোরিয়াস ৩৫ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর বাকি দুই উইকেট দ্রুত হারিয়ে ১৮২ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস। ২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন গ্রাহাম হিউম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড উলভস: ১৮২/১০ (ওভার:৪৬.২; ল’লর- ১৬, ডোহানি- ১১, অ্যাডায়ার- ৪০, টেক্টর- ০, ক্যাম্ফার- ৫, টাকার- ২৪, ডেলানি- ৬, প্রিটোরিয়াস- ৩৫, হিউম- ২৯*, হোয়াইট- ২, চেজ- ৬) (মকিদুল- ৯-১-২৯-২, সুমন ৮.২-২-৩১-৪, রকিবুল- ১০-০-৩৬-২, সাইফ- ৫-০-২৫-২)
বাংলাদেশ ইমার্জিং দল: ১৮৩/২ (ওভার: ৪১.৩; তামিম- ২, জয়- ৮০*, রাব্বি- ২, হৃদয়- ৮৮*) (অ্যাডায়ার- ৪-১-৭-০, চেজ- ৮-০-২৯-২, হোয়াইট- ৮-০-৪০-০, প্রিটোরিয়াস- ৪-১-১২-০)
ফলাফল: বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সুমন খান (বাংলাদেশ ইমার্জিং দল)