প্রখর সূর্যের আগ্রাসন

২০১৫ সালের ৭ জুলাই। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টি- টোয়েন্টি ম্যাচে। ফাস্ট বোলার কাইল অ্যাবটের একটি ডেলিভারিটি থার্ড ম্যানের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠানোর কথা মনে আছে কি? সেইদিন এই শট খেলে রীতিমতো ক্রিকেট পাড়ায় সাড়া তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার সৌম্য সরকার।

২০১৫ সালের ৭ জুলাই। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টি- টোয়েন্টি ম্যাচে। ফাস্ট বোলার কাইল অ্যাবটের একটি ডেলিভারিটি থার্ড ম্যানের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠানোর কথা মনে আছে কি? সেইদিন এই শট খেলে রীতিমতো ক্রিকেট পাড়ায় সাড়া তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার সৌম্য সরকার।

সৌম্যর হাঁকানো এই নতুন শটটিকে নাম দেয়া হয়েছিলো ‘পেরিস্কোপ শট’। শটটি মারার সময় সৌম্য সরকার শরীরকে পেছনের দিকে বাঁকিয়ে ব্যাটটিকে বলের গতির সমান্তরালে চালিয়ে তাঁর ইচ্ছেমত বলের গতি ঠিক করেন। যেখানে সময়ের ব্যবহার এবং শারীরিক সামর্থ্য দুটোই অবশ্যম্ভাবী। অনেকের মতে পেরিস্কোপ শটের সাথে নাকি বীরেন্দ্র শেবাগের আপার কাটের কিছুটা মিল রয়েছে।

সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেটার সুরিয়াকুমার যাদবের একটি পেরিস্কোপ ধরনের শট নিয়ে মুগ্ধ বিশ্ববাসী। যে শটটি প্রথমবার বিশ্ব ক্রিকেট চিনেছিল সৌম্য সরকারের মাধ্যমে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে সুরিয়াকুমার দারুণ ব্যাট করেছেন।

যার ফলস্বরূপ একেবারে লাফ দিয়ে আইসিসি টি- টোয়েন্টি রাঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছেন এই ব্যাটার। শীর্ষে থাকা ব্যাটার বাবর আজমের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছেন সুরিয়াকুমার। বাবরের পয়েন্ট ৮১৮ এবং সূর্যকুমারের পয়েন্ট এখন ৮১৬। যেকোন সময়ে বাবরকে টপকে যেতে পারেন এই ব্যাটার।

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সূর্যের মতো ভারতীয় সুর্যেরও প্রখরতা দিনে দিনে বাড়ছে। কালকের ম্যাচটিতে তিনি ৪৪ বলে ৭৬ রানের চমকপ্রদ একটি ইনিংস খেলেন। যা ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যার দরুন পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ভারত ২-১ এ এগিয়ে গেল। সূর্যের  এই ইনিংসের ভূয়সী প্রশংসা করেন খোদ ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

২০১৮-১৯ সালে সূরিয়াকে নিয়ে সমালোচনা ছিল যে তিনি বড় আঘাতের ক্ষেত্রে লেগ সাইডেই খেলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু গেল ম্যাচে দেখা গেল অন্যরকম সূর্যের ভিন্নধর্মী এক শটের। সূর্যকুমার যাদব পাঞ্চ ওভার কভারে ছক্কা মারলেন। শটটি এতোটাই চমকপ্রদ ছিল যে কিংবদন্তি ড্যারেন স্যামিকে বিস্ময়ে ‘মাই গুডনেস’ উচ্চারণ করতে বাধ্য করেছে।

দেখা গেল সুরিয়া তার অবস্থানে কিছুটা খোলামেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে যা সে প্রায়শই করে। পিছনের পা ক্রিজের সমান্তরালে এবং অফ স্টাম্পের প্রায় প্রান্তে রেখে সামনের পা টি পিচের নিচের দিকে নির্দেশ করে রাখলেন। এরপর জোসেফের ডেলিভারি পিচে আঘাত করার ঠিক আগে, সামনের পা কিছুটা উপরে উঠে নিচে চেপে নেন। বলের গতি এবং অবস্থান নিশ্চিত করে দারুণ শটটি খেলেন সুরিয়া।

এই বছরের জুলাই মাসেও ভারত- ইংল্যান্ড সিরিজে তৃতীয় টি- টোয়েন্টি ম্যাচে সুরিয়াকুমার যাদব দারুণ এক সেঞ্চুরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। ৫৫ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সুরিয়া। সেই ম্যাচেও দারুণ কিছু শট খেলেছিলেন তিনি যা ক্রিকেটবোদ্ধাদের মুগ্ধ করেছিল।

এই ডানহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটার তাঁকে নিয়ে সমালোচনার জবাবটা দিচ্ছেন দিন দিন দারুণ এবং নতুন সব দৃষ্টিনন্দিত শট খেলে। জবাব দিচ্ছেন যে তিনি চাইলেই লেগ সাইডের বাহিরেও শট খেলে মাঠ কাঁপিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। সুরিয়াকুমারের ডাকনামটা তো ‘স্কাই’। স্কাই দারুণ সব শট খেলবেন এটাই স্বাভাবিক। ওইযে একটা প্রচলিত বাণী তো আছেই যে, ‘দ্য স্কাই হ্যাজ নো লিমিটস’।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...