সব ফরম্যাট মিলিয়ে টানা দশ ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৩৩ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ম্যাচ জয়ের পর অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানিয়েছেন দশ ম্যাচ পর জয় পাওয়াতে তারা সবাই খুশি। তিনি আশাবাদী পরের ম্যাচে আরো ভালো করবে দল।
তবে প্রথম ইনিংস শেষেও বাংলাদেশের জয়টা নিশ্চিত ছিলো না। ব্যাটসম্যানরা ইনিংস বড় করতে না পারায় শ্রীলঙ্কাকে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। তামিম জানিয়েছেন ব্যাট করার জন্য উইকেট সহজ ছিলো না।
এমন উইকেটেও ৮৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান ও শেষের দিকে আফিফ হোসেন করেন ২২ বলে অপরাজিত ২৭ রান। তাই এই তিন জনের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
তামিম বলেন, ‘আমরা যেভাবে লড়াই করেছি তাতে খুশি। মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক দুর্দান্ত খেলেছেন। আফিফও সত্যিই দারুণ ব্যাটিং করেছে। ব্যাট করা সহজ ছিল না। উইকেট ছিল পেস বান্ধব। হার কোনো মজার বিষয় না। শেষ পর্যন্ত আমরা জিতলাম। আমরা সব ফরম্যাট মিলিয়ে শেষ দশ ম্যাচে হেরেছিলাম। ছেলেরা আসলেই খুশি।
করোনার কারণে মাঠে ঢোকার অনুমতি নেই দর্শকদের। তাই মিরপুরের গ্যালারিতে ছিলোনা কোন গর্জন। তবে তামিম জানেন ঠিকই টিভির পর্দায় তাদের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন দর্শকরা। তামিম জানিয়েছেন দেশের জন্য তাই কঠোর পরিশ্রম করছেন তারা। তামিম আশা প্রকাশ করেছেন পরের ম্যাচে আরো ভালো করবে দল।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি পরের ম্যাচে আরো ভাল করতে পারবো। আমি টসের সময় বলেছিলাম, দেশের প্রতি নিবেদন থেকে সবাই কঠোর পরিশ্রম করে। আমরা জানি আমাদের সবাই কতটা উৎসাহ দেয়। সবাই টেলিভিশনে খেলা দেখছে। আমরা তাদের জন্যই জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি।’
তামিমের সাথে ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহিমও একমত উইকেট সহজ ছিলো না ব্যাটসম্যানদের জন্য। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান তাই প্রশংসা করেছেন বাকি ব্যাটসম্যানদদের। এছাড়া অল্প রানে ম্যাচ জেতার জন্য মুশফিক প্রশংসা করেছেন বোলারদেরও।
তিনি বলেন, ‘ব্যাট করার জন্য সহজ উইকেট ছিল না, আমরা প্রথম দিকে বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়েছিলাম। তবে তামিম সত্যিই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। আমি আমার সময় নিয়েছি এবং রিয়াদও খুব ভাল ব্যাটিং করেছে। এটা দল হিসাবে ভাল পারফরম্যান্স ছিল। আমি আমার শক্তি অনুযায়ী খেলেছি। রান করলাম এবং একটা প্রান্ত নিরাপদ রাখতে চেয়েছি। সাইফউদ্দিন ও আফিফের ফিনিশিং সত্যিই খুব ভাল ছিল। এটি ক্রিকেট খেলা, তাই প্রতিটি বলের দিকে মনোনিবেশ করা কঠিন। মিরাজ অসাধারণ ছিল এবং মুস্তাফিজুর এবং সাইফউদ্দিন ভাল করেছে।’
তবে হারলেও এই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশাল পেরেরা। শেষের দিকে লড়াই করাতে তিনি প্রশংসা করেছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ৬০ বলে ৭৪ রান করেছিলেন এই অলরাউন্ডার। পেরেরা মনে করেন বাংলাদেশ দলের সিনিয়র ক্রিকেটার রয়েছে অনেক। এখানেও পিছিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা।
তিনি বলেন, ‘হারটা ভাল দিক নয়, তবে আমাদের অনেক ইতিবাচক দিক ছিল। বোলাররা ঠিক জায়গাতে বোলিং করেছে। ব্যাটিংয়ে ওয়ানিন্দু দুর্দান্ত করেছে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ন অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার রয়েছে। আমাদের বোলাররা তেমন ছিলেন না, তবে তাদের ২৫ রান কমে আটকিয়ে রাখা ছিল একটি ভাল প্রচেষ্টা। আমাদের ব্যাটিংয়ে আমাদের আরো দায়িত্ব নিয়ে শুরু করা দরকার ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে হাসারাঙ্গা ব্যাটসম্যান হিসাবে কার্যকরী। ১০ ওভার বল করার পরে এটি একটি দুর্দান্ত ইনিংস ছিল। আমাদের ব্যাটসম্যানদের কমপক্ষে ৩০-৩৫ ওভার ব্যাট করতে হত, তাতে আমি অনেকটা হতাশ হয়েছি। হাসরঙ্গা ও উদানা যখন ব্যাটিং করছিল ভেবেছিলাম আমাদের একটা সুযোগ আছে। তবে তারা ভাল বোল করেছিল, আমরা এখান থেকে ফিরে আসব এবং পরের ম্যাচে ভাল করবো।’