বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম ওপেনার তামিম ইকবাল তা নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিল না কখনোই। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের হয়ে লম্বা সময় ওপেন করেছেন। তবে সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাঁর খেলা নিয়ে ছিল নানারকম আলোচনা।
অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছেন না এই ওপেনার। গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেও নিজেকে সড়িয়ে নিয়েছিলেন। তখন থেকেই আলোচনা হচ্ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আদো আর তাঁকে পাওয়া যাবে কিনা। যদিও বিপিএলের প্রথম দুই ম্যাচে টানা হাফ সেঞ্চুরি করায় আবার তাঁকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এরমাঝেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন আর টি-টোয়েন্টি খেলতে চাননা তামিম। ফলে তামিমের এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা যেন ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা। তবে বিসিবি তামিমকে ফিরিয়ে আনতে ছিল মরিয়া। ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যানসহ বোর্ডের অনেকেই তামিমকে টি-টোয়েন্টিতে ফেরানোর জন্য কয়েক দফা বৈঠক করেছেন।
এতকিছুর মাঝেই তামিম চট্টগ্রামে আজ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে তিনি অবশ্য পুরোপুরি অবসরের ঘোষণা দেননি। তিনি চান আপাতত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে নিজেকে সড়িয়ে রাখতে। এই সময়ে নতুনদের সুযোগ দেয়ার কথা জানান তামিম।
তামিম টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল। বোর্ডের সাথেও আম্মার কয়েকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। তবে আমি আগামী ছয় মাস এই ফরম্যাট থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে চাই। এই ছয় মাস আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা খেলব না ও এই ফরম্যাট নিয়ে ভাববোও না।’
তামিমের এই না থাকার সময়টায় নতুনদের সুযোগ দেয়ার কথা বারবার বলেছেন তামিম। তিনি মনে করেন এই ছয় মাসে নতুন যারা খেলবে তাঁরা তামিমের অভাব বোধ করতে দিবেন। এছাড়া নতুনরা যদি জায়গাটা পূরণ করতে পারেন তাহলে আর এই ফরম্যাটে দেখা যাবে না তাঁকে। তিনি বলেন, ‘আমি চাইবো ছয় মাসের মধ্যে আমাদের ওপেনাররা এতটাই ভাল করুক যাতে, আমার কথা মনেই না আসে।’
তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তরুণদের বেশি সুযোগ দেয়া উচিৎ। আমি বিশ্বাস করি ছয় মাসে আমার জায়গায় যারাই খেলবে তাঁরা নিজেদের প্রমাণ করবে। ফলে ছয় মাস পরে আমাকে আর এই ফরম্যাটে প্রয়োজন হবে না। এটা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি। তবে ছয় মাস পরেও যদি আমাকে বিশ্বকাপের মত বড় আসরের আগে দরকার হয়, আর আমি যদি প্রস্তুত থাকি তখন ভেবে দেখবো বিশ্বকাপ খেলব কিনা। তবে, আমি মনে করিনা এই ফরম্যাটে আমাকে আর প্রয়োজন হবে।’
ফলে আপাতত ঘোষণাটা ছয় মাসের জন্য আসলেও তামিম কার্যত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরই নিয়ে নিলেন বলা যায়। এই সময়ে তামিম ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটেই বেশি সময় দিতে চান। এছাড়া বাংলাদেশের হয়ে আরো লম্বা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে চান বলেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে সব ফরম্যাটেই খেলে যাওয়ার কথা বলেছেন চট্টলার এই ওপেনার।
তিনি বলেন, ‘আমার এখন ৩৩ বছর বয়স, আমি মনে করি এখন আমার টেস্ট আর ওয়ানডেতেই বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিৎ। এখন সেটা করে অন্তত আরও চার-পাঁচ বছর জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে চাই।’