মুশফিকের বিপক্ষে তামিমের জয়

আবাহনীর সামনে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। বৃষ্টি আইনে ৩০ রান হেরেছে তারা। তবে হারলেও রানরেটে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে প্রাইম ব্যাংক এবং সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আবাহনী। আর দিনের বাকি দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের অষ্টম রাউন্ডে এসে মুখোমুখি হয়েছিল তারকা সমৃদ্ধ শিরোপা প্রত্যাশী দুই দল আবাহনী লিমিটেড ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। জাতীয় দলের দুই কান্ডারি মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল দুই দলে থাকায় জমজমাট এক লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত ছিল মঞ্চ। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে দেখা যায়নি সেই উত্তাপ।

আবাহনীর সামনে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। বৃষ্টি আইনে ৩০ রান হেরেছে তারা। তবে হারলেও রানরেটে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে প্রাইম ব্যাংক এবং সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আবাহনী। আর দিনের বাকি দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

দিনের প্রথম তিন ম্যাচে রান না হলেও শেষ তিন ম্যাচে রান উৎসব করেছেন ব্যাটসম্যানরা। শেষ তিন ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছেন মুনিম শাহরিয়ার, মিজানুর রহমান, তামিম ইকবাল,  মাসুম খান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে রান উৎসবের ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, এনামুল হক বিজয় এবং সৌম্য সরকার।

১৮৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। দলীয় ১৫ রানে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের প্রথম শিকার হয়ে ফিরে যান রনি তালুকদার। ৪ রান করে রনি ফিরে গেলেও আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে ৫৩ রান যোগ করেন তিনি।

যেখানে বিজয়ের অবদান ছিল মাত্র ১১ রান। বিজয় ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। এরপর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তামিমও। ৪১ বলে ৫৫ রান করে আরাফাত সানির বলে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান এই ওপেনার। তামিমের বিদায়ের পর অমিত মজুমদার ফিরে গেলে ৯৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে প্রাইম ব্যাংক।

এরপর বৃষ্টি বাঁধায় খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। খেলা যখন শুরু হয় তখন প্রাইম ব্যাংককে নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয় ১৯ ওভারে ১৭৪ রান। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন ও নাহিদুল ইসলাম চেষ্টা করলেও সেটা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ১৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রাইম ব্যাংক সংগ্রহ করে ১৪২ রান।

মোহাম্মদ মিঠুন করেন ২৭ বলে ৩৪ রান ও নাহিদুল ইসলাম করেন ১৬ রান। ৬ বলে ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন অলক কাপালী। আবাহনীর পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন তানজিদ হাসান সাকিব ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এছাড়া একটি উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা আবাহনীকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন নাঈম শেখ ও মুনিম শাহরিয়ার। উদ্বোধনী জুটিতে দুই জন যোগ করেন ৪৯ রান। ২৭ বলে ২৯ রান করে শরিফুল ইসলামের প্রথম শিকার হয়ে নাঈম ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। নাঈম আউট হয়ে গেলেও আরেক ওপেনার মুনিম ব্যাট করেছেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত।

দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে ৪৬ রানের জুটি গড়ার পর তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সাথে ৫৪ রানের জুটি গড়েন এই ওপেনার। শান্ত করেন ২১ বলে ৩০ রান ও মুশফিক করেন ১৬ বলে ১৪ রান। ৫০ বলে ৯২ রান করে অপরাজিত থাকেন মুনিম। ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে আবাহনী। দুটি উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম।

বিকেএসপিতে দিনের আরেক ম্যাচে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। তবে জয় সহজে আসলেও শুরুটা ভালো হয়নি গাজী গ্রুপের। খেলাঘরের দেওয়া ১৩৯ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান দুই ওপেনার মেহেদী হাসান ও সৌম্য সরকার।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ইয়াসির আলী ও মুমিনুল হক ফিরে গেলে ৫৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গাজী গ্রুপ। তবে এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি গাজী গ্রুপকে। প্রথমে আকবর আলীকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৪১ রানের জুটি গড়ার পর ষষ্ঠ উইকেটে আরিফুল হককে নিয়ে ৪৩ রানের জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ।

মাহমুদউল্লাহর রিয়াদ অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৫৮ রান করে ও আরিফুল হক অপরাজিত থাকেন ১০ বলে ১৭ রান করে। আর আকবর আলীর ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। খেলাঘরের পক্ষে দুটি উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

দিনের আরেক ম্যােচ শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ১ রানে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। শাইনপুকুরের দেওয়া ১৫১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্রাদার্স ১৮ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান করার পর বৃষ্টি আসে। এরপর আর খেলা শুরু না হলে বৃষ্টি আইনে ব্রাদার্সকে ১ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়।

ব্রাদার্সের হয়ে ৫৬ বলে সর্বোচ্চ ৭৯ রান করে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মিজানুর রহমান। এছাড়া জাহিদুজ্জ্বামান করেন ২৫ রান। শাইনপুকুরের পক্ষে তিনটি উইকেট শিকার করেন তানভির ইসলাম।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান সংগ্রহ করে খেলাঘর। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ  ৫৯ রান করেন মাসুম খান। এছাড়া ২০ রান করেন ফরহাদ হোসেন। গাজী গ্রুপের পক্ষে দুটি উইকেট শিকার করেন মুমিনুল হক।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে শাইনপুকুর। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করে করেন সাব্বির হোসেন ও তৌহিদ হৃদয়।
এছাড়া তানজিদ হাসানের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। ব্রাদার্সের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করেন নাঈম ইসলাম ও মানিক খান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

  • আবাহনী-প্রাইম ব্যাংক

আবাহনী লিমিটেড: ১৮৩/৩ (ওভার: ২০; নাঈম- ২৯, মুনিম- ৯২*, শান্ত- ৩০, মুশফিক- ১৪, আফিফ- ১৩*) (৪-০-৩৮-২)

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ১৪২/৬ (ওভার: ১৯; তামিম- ৫৫, বিজয়- ১১, মিথুন- ৩৪, নাহিদুল- ১৬) (তানজিম- ৪-০-৩৫-২, আমিনুল- ৩-০-২০-২)

ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ৩০ রানে জয়ী (বৃষ্টি আইনে)।

  • খেলাঘর-গাজী গ্রুপ

খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি: ১৩৮/৮ (ওভার: ২০; ইমতিয়াজ- ১২, জহুরুল- ১৩, মাসুম- ৫৯, ফরহাদ- ২০) (মুমিনুল- ৩-০-২৭-২)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ১৪৪/৫ (ওভার: ১৮.৩; মুমিনুল- ২২, ইয়াসির- ২৪, মাহমুদউল্লাহ- ৫৮*, আকবর- ১৮, আরিফুল- ১৭*) (মিরাজ- ২.৩-০-২১-২)

ফলাফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৫ উইকেটে জয়ী।

  • শাইনপুকুর-ব্রাদার্স ইউনিয়ন

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ১৫০/৩ (ওভার: ২০; সাব্বির- ৪৪, তানজিদ- ২৯, তৌহিদ- ৪৪*) (নাঈম- ২-০-১৫-১, মানিক- ৪-০-২৭-১)

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ১৩২/৪ (ওভার: ১৮; মিজানুর- ৭৯*, জাহিদ- ২৫*) (তানভির- ৪-০-১৩-৩)

ফলাফল: ব্রাদার্স ইউনিয়ন ১ রানে জয়ী (বৃষ্টি আইনে)।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...