তামিমের অধিনায়কত্ব কি হুমকির মুখে?

তাঁদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকুক আর নাই থাকুক - আবারও তাঁরা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন। কারণটা স্পষ্ট। একজন দলের পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে চেনা কন্ডিশনে হেরেছেন। অন্যদিকে, আরেকজন ‘রহস্যময়’ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলকে এনে দিয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। সেটাও আবার ফরম্যাটটির ইতিহাসেরই অন্যতম সফল দলের বিপক্ষে।

তাঁদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকুক আর নাই থাকুক – আবারও তাঁরা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন। কারণটা স্পষ্ট। একজন দলের পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে চেনা কন্ডিশনে হেরেছেন। অন্যদিকে, আরেকজন ‘রহস্যময়’ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলকে এনে দিয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। সেটাও আবার ফরম্যাটটির ইতিহাসেরই অন্যতম সফল দলের বিপক্ষে।

এই দু’জনের নাম না বললেও বোঝাই যায়। তারা হলেন – তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। প্রথমজন ওয়ানডে ফরম্যাটের অধিনায়ক। দ্বিতীয়জন টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট দলের অধিনায়ক। তামিমের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, সাকিব আল হাসান অধিনায়ক হয়ে ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছেন। আপাতত এই তথ্যটা বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ অধিনায়ক নির্ধারণে বড় একটা নিয়ামক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এমনিতে কাগজে কলমে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসেই সবচেয়ে সফলদের একজন তামিম ইকবাল। এখানে মাশরাফি বিন মুর্তজার পরেই তাঁর অবস্থান। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি ৫৮.১৩ শতাংশ ম্যাচে জয় পেয়েছেন আর তামিম পেয়েছেন ৫৬.৬৬ শতাংশ সফলতা। কিন্তু, এই পরিসংখ্যানে একটা শুভঙ্করের ফাঁকি আছে।

পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ার পর তামিম ২৭ টা ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ টাতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ সফলতার হার প্রায় ৬৩ শতাংশ। কিন্তু, গলদটা আবার এখানেই। এই ১৭ টি জয়ের ১৪টিই এসেছে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে। যাদের থেকে কার্যত ওয়ানডেতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বাকি নয় ম্যাচে জিতেছেন মাত্র তিনটিতে।

হ্যাঁ, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তিনি দলকে ওয়ানডে সিরিজ জিতিয়েছেন। তবে, সামনের বড় আসর যেহেতু ওয়ানডে বিশ্বকাপ সেহেতু নতুন করে কি ভাবতে বাধ্য হচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)? একে তো, ওয়ানডে বিশ্বকাপে বরাবরই ব্যাটার হিসেবে ব্যর্থ তামিম। দ্বিতীয়ত, অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স অনবদ্য। আর বিশ্বকাপ মঞ্চে সাকিব খেলোয়াড় হিসেবে কি করতে পারেন সেটা তো ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মাটিতে তিনি দেখিয়েছেন।

সব মিলিয়ে তামিম ইকবালের অধিনায়কত্ব এখন হুমকির মুখে। আর নতুন কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের বার্তাটাও এখানে পরিস্কার। পারফর্ম না করলে কেউ নামের ভারে দলে থাকতে পারবেন না। সেই সূত্র ধরেই ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়লেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাটার তামিম ইকবালের গেল কিছুদিনের পারফরম্যান্সও কোনো আশার বানী শোনাচ্ছে না।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি রান পাননি। ইনজুরিতে ভারতের বিপক্ষে খেলেননি। গেল আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচে দু’টো ফিফটি করলেও দল হেরেছে বাজেভাবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এর আগের মাসে একটা হাফ সেঞ্চুরি করেন।

বড় দলের বিপক্ষে তাঁর বড় ইনিংস খেলার নজীরটা এখন থেকে এক বছর আগের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁদের মাটিতে ৮৭ রানে ছিলেন অপরাজিত। সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছেন ২০২১ সালের জুলাইয়ে, তাও আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মানে প্রায় বছর দুই হল দলের ওপেনারের কোনো সেঞ্চুরি নেই।

মাস ছয়েক পর অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। একে তো ওয়ানডেই এখন অবধি বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট। আর এবার বিশ্বকাপটা ভারতে অনুষ্ঠিত হবে বলে, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ দলের সুযোগটা বেশি।

আর, বাস্তবতা হল আপাতত তামিমই অধিনায়ক ওয়ানডেতে। বিসিবি তাঁকে ঘিরেই বিশ্বকাপের পরিকল্পনা করছে। যদিও, আয়ারল্যান্ড সিরিজেও ছন্দে ফিরতে না পারলে বিসিবি নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবে। সেরা বিকল্পও প্রস্তুত। আর প্রভাবক হিসেবে খোদ হাতুরুসিংহে তো আছেনই। নিশ্চয়ই, তামিম নিজেও চাপটা টের পাচ্ছেন!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...