‘পারলে বল দিয়ে কিছু করো’

হারারে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবাইকে বিস্মিত করে স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। দলের প্রয়োজনে এমন ইনিংস খেলার পর এই পেসার জানিয়েছেন ব্যাটিংয়ে আরো উন্নতি করে নির্ভরযোগ্য একজন টেলএন্ডার হতে চান তিনি।

তাসকিন যখন ব্যাট করতে নামেন তখন ২৭০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এখান থেকেই নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে গড়েন রেকর্ড ১৯১ রানের জুটি। ১৩৪ বলে ১১ টি চারের সাহায্যে ৭৫ রান আসে তাসকিনের ব্যাট থেকে। এই জুটির কল্যাণেই ৪৬৮ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় দিন শেষে এক ভিডিও বার্তায় তাসকিন জানিয়েছেন নিয়মিত সেট ব্যাটসম্যানদের এভাবে সমর্থন দিতে বড় দলের টেলএন্ডারদের মত আরো ভালো টেলএন্ডার হতে চান তিনি। তিনি মনে করেন ব্যাট হাতে আরো উন্নতি করলে সেটা দলের জন্যই অনেক ভালো হবে।

তাসকিন বলেন, ‘আসলে সব সময় লক্ষ্য থাকে যে একজন ভালো টেলএন্ডার হওয়ার। বড় বড় টেস্ট দলের টেলএন্ডাররা নির্ভরযোগ্য। তো আমিও চাই নির্ভরযোগ্য একজন টেলএন্ডার হতে। যেনো দ্রুত উইকেট গেলে বা সেট ব্যাটসম্যান থাকলে তাকে সাপোর্ট দিতে পারি। উন্নতির তো কোন শেষ নাই। যদি উন্নতি করতি পারি ব্যাটে তাহলে দলের জন্য সমর্থন দিতে পারি।’

শুধু, ব্যাটিং নয় শারীরিক ভাষাতেও তাসকিন ছিলেন আগ্রাসী। তাঁকে ফেরাতে না পেরে হতাশ ছিলেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। এক পর্যায়ে ব্লেসিং মুজারাবানির সাথেও কথা কাটাকাটি হয় তাসকিনের। তাসকিন বলেন, ‘ওরা আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করছিল। বাউন্সার মারার চেষ্টা করছিল। ভালো জায়গায় বল করছিল। আমি সামলাচ্ছিলাম ভালো। বিরক্ত হয়ে বেশ কয়েকবার গালিও দিয়েছে। তৃতীয়বার যখন গালি দিয়েছিল, তখন আমিও তেড়ে গিয়েছিলাম।’

কি জবাব দিয়েছিলেন তাসকিন? তাসকিন জানালেন, ‘তখন বলছিলাম, আমাকে কেন গালি দিচ্ছ, বল দিয়ে পারলে কিছু করো! – এটাই। আর কিছু না।’

তাসকিন যখন উইকেটে আসেন তখন ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেখান থেকে তাসকিনের সমর্থনেই ১৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। তাসকিন জানিয়েছেন তাঁর মূল লক্ষ্যই ছিল মাহমুদউল্লাহকে সমর্থন দেওয়া। আর এই কাজটি বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহজ করে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ নিজেই।

তিনি বলেন, ‘সব সময় বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং অনুশীলন করা হয়। আজ আমার মাথায় ছিল দলের জন্য কিছু করতে হবে। রিয়াদ ভাই স্টাইকে ছিল, টেলএন্ডার হিসাবে আমার মূল লক্ষ্যই ছিল তাকে সমর্থন দেওয়া। সে আমাকে সব সময় কথা বলে বলে খেলাচ্ছিল এবং মূল লক্ষ্য ছিলো স্ট্যাম্পের বলটা যাতে দেখে খেলা হয়। আমি আমার জোনের বল গুলো যখনই পেয়েছি মারার চেষ্টা করেছি ঐ গুলো। দলের জন্যই খেলেছি।’

বাংলাদেশের ৪৬৮ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রান সংগ্রহ করেছে জিম্বাবুয়ে। তাসকিন জানিয়েছেন ব্যাট করার জন্য উইকেট এখনো সহজ রয়েছে। তাই উইকেট পেতে হলে ধারাবাহিক ভাবে ভালো জায়গাতে বল করে যেতে হবে তাদের। এছাড়া আর কোন বিকল্প দেখছেন না তিনি।

এই পেসার বলেন, ‘উইকেট বেশ ভালো। ধৈর্য্য ধরে ভালো জায়গাতে বল করতে হবে। ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ মনে হচ্ছে। ভালো জায়গায় বোলিং করা ছাড়া আর কোন অপশন নাই। অ্যাটাক অবশ্যই করতে হবে। লুজ বল সহজেই মারা যাচ্ছে। তাই ভালো জায়গাতে বল করে যেতে হবে। আমার মনে হয় এটাই সবচেয়ে ভালো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link