গুজরাট টাইটান্স বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ; জয়ের জন্য শেষ ওভারে কলকাতার প্রয়োজন ছিল ২৯ রান, হাতে মাত্র তিন উইকেট। পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন কলকাতার ভক্ত-সমর্থকেরা। কিন্তু এরপর যা হয়েছে সেটা অবিশ্বাস্য, অতিমানবীয়। বিশতম ওভারের শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছয় হাঁকিয়ে দলকে অসম্ভব এক জয় এনে দেন এক তরুণ।
এতটুকুতে অবশ্য বুঝে ফেলার কথা সেই তরুণের নাম যে রিংকু সিং। তাঁর সংক্ষিপ্ত ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হাইলাইটস সেদিনের সেই ম্যাচ, আরো স্পষ্ট করে বললে শেষ ওভারটা। এরপর থেকেই মূলত পুরো ভারত জুড়ে বিখ্যাত হয়ে যান রিংকু; শুধু ভারতেই নয়, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) খোঁজ রাখেন এমন সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম।
হঠাৎ খ্যাতির চূড়ায় ওঠা রিংকু সিং বলেন, ‘এই পাঁচটা ছয় আমার জীবন বদলে দিয়েছে। এর আগে কিছু মানুষ আমাকে চিনলেও, অধিকাংশ মানুষই চিনতো না। কিন্তু এখন অনেকে আমাকে চেনে, জানে। এটা সত্যি অন্যরকম ভাল লাগার অনুভূতি। সবমিলিয়ে সেটা একটি বিশেষ ইনিংস ছিল এবং সবাই এরপর থেকে আমার সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করেছিল।’
একই সাথে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ফিনিশার হিসেবে রিংকু সিংকে সুযোগ দেয়ার দাবি ওঠে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই সুখবর পাওয়া হয়নি এই বামহাতির। ভারতীয় দল সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেললে তাঁকে থাকতে হচ্ছে বাড়িতেই। অবশ্য নির্বাচকদের ভাবনায় ঠিকই আছেন তিনি, এশিয়ান গেমসের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া সেটারই প্রমাণ দেয়।
সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ থেকে শুরু হয়ে এশিয়ান গেমস চলবে অক্টোবরের আট তারিখ পর্যন্ত। অন্যদিকে, ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে অক্টোবরেই। এজন্যই বিশ্বকাপ পরিকল্পনার বাইরে থাকা উদীয়মান তারকাদের নিয়েই এশিয়ান গেমসে প্রতিযোগিতা করবে টিম ইন্ডিয়া। প্রথমদিকে এই টুর্নামেন্টের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকলেও সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ঘোষণা দিয়েছে ম্যাচগুলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অংশ হিসেবে ধরা হবে।
তাই তো এশিয়ান গেমসের স্কোয়াডে থাকা সবারই অভিষেক হতে যাচ্ছে ভারত জাতীয় দলে। মঞ্চটা ছোট হলেও আকাশী-নীল জার্সির আবেদন একটুও কমেনি ক্রিকেটারদের কাছে। রিংকু সিং আর তাঁর পরিবারও উচ্ছ্বসিত এ ব্যাপারে।
এই ব্যাটার বলেন, ‘আমার পরিবার খুব খুশি ছিল। তারা সব সময় বলতো ভারতের হয়ে খেলো, আমরা তোমাকে জাতীয় দলে দেখতে চাই। আমি যখন দলে ডাক পেয়েছিলাম তখন সবাই খুশিতে নেচেছিল।’
গত মৌসুমে আইপিএলে ১৪ ম্যাচ খেলে প্রায় ৬০ গড়ে ৪৭৪ রান করেছিলেন রিংকু সিং। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সপ্তম অবস্থানে ছিলেন তিনি। এশিয়ান গেমসেও নিজের এমন পারফরম্যান্স দেখাতে চাইবেন এই ফিনিশার; বিধ্বংসী ফর্মের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে অদূর ভবিষ্যতে ভারতের মূল দলে নিশ্চিতভাবেই দেখা যাবে তাঁকে।