যেভাবেই হোক, তিনি ফিরলেন

৭ ম্যাচে ১৩ ইনিংসে ব্যাট করে ১৩.৮৩ গড়ে সংগ্রহ ১৬৬ রান। এই ১৩ ইনিংসের মধ্যে ৪টা ‘ডাক’ এবং দুই অঙ্কে পৌঁছোতে না পারা ইনিংসের সংখ্যা ১০।

৭ ম্যাচে ১৩ ইনিংসে ব্যাট করে ১৩.৮৩ গড়ে সংগ্রহ ১৬৬ রান। এই ১৩ ইনিংসের মধ্যে ৪টা ‘ডাক’ এবং দুই অঙ্কে পৌঁছোতে না পারা ইনিংসের সংখ্যা ১০।

চলতি বছরে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে এ হল মুমিনুল হক সৌরভের পারফরম্যান্সের ফিরিস্তি। একের পর এক ব্যাটিং ব্যর্থতায় পুরো দলকে উজ্জীবিত করতে না পারার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে মাস ছয়েক আগে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। এমনকি একাদশ থেকে বাদও পড়েন সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। যদিও দুই ম্যাচ বাদেই আজ ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের মধ্য দিয়ে আবারও একাদশে ফিরলেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটার।

এখন প্রশ্ন হল, একাদশ থেকে বাদ পড়ার পর তিনি কী এমন পারফরম্যান্স করেছেন যে দলে টিকে থাকার পাশাপাশি পুনরায় একাদশেও জায়গা করে নিলেন?

গেল জুনে সর্বশেষ টেস্ট খেলা মুমিনুল গত ৬ মাসে মাত্র ৪টা চারদিনের ম্যাচ খেলেছেন। ২৪তম জাতীয় লিগে নিজ বিভাগ চট্টগ্রামের হয়ে ২ ম্যাচে ৪ ইনিংসে ব্যাট করে তাঁর সংগ্রহ ৯২। আর ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ২ ম্যাচে ৪ ইনিংসে রান সংগ্রহ করেন ৪২।

এমন নাজুক পারফরম্যান্সের পর একাদশে জায়গা পাওয়া তো দূরে থাক, মুমিনুলের দলে থাকাটাও এখন যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। তারপরেও তিনি দলে থেকেছেন, একাদশে আজ সুযোগ পেয়েছেন এবং এটাই বাস্তব।

পারফর্ম করে নয় বরং অন্যের ব্যর্থতায় দলে এমনকি একাদশে ঢুকে পড়াটা সম্প্রতি আমাদের জাতীয় দলে একটা নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।সর্বশেষ আমরা সাব্বির, সৌম্য ও শান্তর বেলায় এমনটা দেখেছি। আর আজ দেখলাম মুমিনুলের ক্ষেত্রে।

ঢাকা টেস্টে মুমিনুল জায়গা পেয়েছেন ইয়াসির রাব্বির জায়গায়। পিঠের চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর মিস করা এ ব্যাটার ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে পুনরায় দলে ফেরেন।

কিন্তু, ব্যাট হাতে সে ফেরাটা রাঙাতে পারেননি তিনি। প্রথম বারের মত তিনে ব্যাট করতে নেমে দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর সংগ্রহ কেবল ৯ রান এবং দুবারই আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটু ভঙ্গিতে। মূলত তাঁর ব্যর্থতায়ই কপাল খুলে গেল মুমিনুলের।

এই যে, উল্লেখ করার মত কোনো পারফরম্যান্স ছাড়াই মুমিনুল আবারও একাদশে ফিরলেন, তা তাঁকে কতটুকু সাহায্য করবে আমি সন্দিহান। তিনি যে প্রক্রিয়ায় একাদশে ফিরলেন, সেটাও কোনো ভাল উদাহরণ স্থাপন করে না।

আর আপনার যদি পারফরম্যান্সই না থাকে, তাহলে বাদ পড়ার পর পুনরায় মাঠে ফিরে আত্মবিশ্বাসী ও চাঙ্গা থাকা এবং ভাল করার অনুপ্রেরণা খুঁজে পাওয়া দায়। ক্রিকেটের মত সাইকোলজিক্যাল গেইমে যেগুলোকে এড়িয়ে ভাল খেলা খুব কঠিন।

অথচ বছরটা কী দারুণভাবেই না শুরু করেছিলেন মুমিনুল! সেটা ব্যাটার হিসেবে তো বটেই, অধিনায়ক হিসেবেও। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পাওয়া মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম ইনিংসে অধিনায়ক মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৮ রান। কিন্তু পরেই শুরু হয় রানের সাথে তাঁর ব্যাটের আড়ি। সে আড়ি ভাঙার একটা মোক্ষম সুযোগ পেলেন মুমিনুল।

মুমিনুল যে সুযোগটা কাজে লাগাতে পেরেছেন সেটা বলাই যায়। নয় ইনিংস বাদে কেবল দুই অংকের ঘরেই নাম লেখাননি – পৌঁছে গেছেন হাফ সেঞ্চুরির মাইলফলকেও।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...