মাহি থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনি, ক্যারিয়ারে লম্বা একটা পথ পেরিয়ে এসেছেন ক্যাপ্টেন কুল। ভারতীয় জার্সিতে জিতেছেন সম্ভাব্য ট্রফি; চেন্নাই সুপার কিংসকে জিতিয়েছেন পাঁচ পাঁচটি ট্রফি। আইপিএলের অবিচ্ছেদ্য অধ্যায় তাই তাঁকে বলা যায়, সেই মানুষটাই চলতি আসরের তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথমবার ব্যাট করতে নামলেন বাইশ গজে।
নিজের সম্ভাব্য শেষ টুর্নামেন্টের শুরুটা করলেন ১৬ বলে ৩৭ রানের ক্যামিও খেলে। বাউন্ডারি থেকেই নিয়েছেন ৩৪ রান, স্ট্রাইক রোটেটের ধার ধারেননি এই তারকা। এমনকি কয়েকবার নিশ্চিত সিঙ্গেল ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি; অথচ অন্যপ্রান্তে তখন ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। নিজের ওপর কতটা আত্মবিশ্বাস ছিল তাঁর সেটি তাই স্পষ্ট।
কাঁধ পর্যন্ত ঝাঁকড়া চুল; চোখ মুখে আবেগের কোন চিহ্ন নেই, একেবারে শান্ত; দৃপ্ত পায়ে ডাগ আউট থেকে হেঁটে মাঠের মাঝখান পর্যন্ত আসলেন – পুরো গ্যালারি এতেই মেতে উঠেছিল বুনো উল্লাসে, স্টেডিয়াম তখন ধোনি ধোনি চিৎকারে ফেটে পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে।
এক বছর পর আবারো চিরচেনা আইপিএল, প্রথম বল কি একটু দেখেশুনে খেলবেন মাহি? মোটেই না, পুল শটে সোজা মাঠের বাইরের পাঠালেন বলকে। এক বল পরে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি, এবার এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে মারলেন চার।
খানিক পরে একই অঞ্চল দিয়ে লফটেড ড্রাইভ, এবার ফলাফল ছক্কা। শেষ ওভারে আনরিখ নর্কিয়াও রক্ষা পাননি তাঁর হাত থেকে, হাঁকিয়েছেন দুই চার এবং দুই ছয়। শেষপর্যন্ত অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
দলকে জেতাতে না পারলেও কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয়কে শীতল করেছেন তিনি। সেই সাথে প্রমাণ করেছেন বয়স বাড়লেও তাঁর ব্যাটের ধার এখনো আছে। যেভাবে বাউন্ডারি মেরেছেন তাতে একটুও মনে হয়নি এতটা লম্বা সময় ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন এই কিংবদন্তি।
যদিও পরাজয় সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। দিল্লি ক্যাপিটালসের ছুড়ে দেয়া ১৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭১ রানেই থামতে হয়েছে তাঁর দল চেন্নাইকে। হেরে যাওয়ার দুঃখ অবশ্য ভুলিয়ে দিয়েছেন তিনি নিজেই; বহুদিন পর ক্যাপ্টেন কুলকে স্বরূপে দেখার পর জয়-পরাজয় নিয়ে কেই-বা মাথা ঘামাবে?