‘আই কুইট’ প্রজন্মের রাণী হামিদের গল্পটি জানা ভীষণ প্রয়োজন

৭৪ বছর বয়সী দাবাড়ু রাণী হামিদ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ‘এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ’-এ অংশগ্রহন করেছিল। বেছে বেছে এশিয়ার সেরাদের সেরা দাবাড়ুরাই সেই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে।

রাণী হামিদের শুরুটাই হয়েছিল পরাজয় দিয়ে। এরপরের ম্যাচে তিনি আবার হারেন, হেরে যান তার পরের ম্যাচেও।

দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন নারী চেস মাষ্টার রাণী হামিদ সেই টুর্নামেন্টে এভাবে একের পর এক সবগুলো ম্যাচে হারতে থাকেন। ইভেন্টের শেষে রাণী হামিদের স্কোর ০.০/ ৯, টুর্নামেন্টের ৩৬ জনের তালিকায় রানী হামিদের অবস্থান ৩৫। কিন্তু সেই টুর্নামেন্টে আজও আলোকিত হয়ে আছে মাস্টার রাণী হামিদ-এ।

রাণী হামিদ সবার চেয়ে আলাদা ছিলেন একটি বিষয়ে। তার লড়াকু মানসিকতা। একের পর এক পরাজয়েও তিনি টুর্নামেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেননি।

এক ম্যাচ হেরে গেলে পরের ম্যাচেই তিনি আবার সমান উদ্দীপনায় খেলতে নেমে গেছেন। তিনি লজ্জায় পালিয়ে থাকেননি, হতাশ হননি। পরাজয় তাকে দমাতে পারেনি। এক ম্যাচ হারলে পরের ম্যাচে রানী হামিদ চেষ্টা করে গেছেন নিজের সর্বোচ্চ খেলাটা উপহার দিতে।

পঞ্চাশের শেষ সীমানায় দাঁড়ালেই যখন অধিকাংশ মানুষ হাত পা ঝাড়া দিয়ে অবসর জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠে, সমস্ত কাজ থেকে ছুটি নিয়ে একলা ঘরে আবদ্ধ হয়ে মৃত্যুর দিন গোনে রানী হামিদ সেখানে একের পরেক ম্যাচ খেলে গেছেন। বাংলাদেশের পতাকা হাতে রাণী হামিদ লড়াই করে গেছেন।

রাণী হামিদ ম্যাচ হেরেছেন, বারংবার পরাজিত হয়েছেন, র‍্যাংক টেবিলে প্রতিদিন একটু একটু পিছিয়ে পড়েছেন কিন্তু এক মুহুর্তের জন্যও খেলে বন্ধ করেননি। প্রতিটা ম্যাচ জয়ের আশা নিয়ে তিনি খেলতে নেমেছেন।

৭৪ বছর বয়সী রানী হামিদ মাটি কামড়ে লড়ে গেছেন শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। রাণী হামিদ একটি বারের জন্যও বলেননি ‘আই কুইট’!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link