পুরো বছর জুড়েই রান করেছিলেন শুভমান গিল; ওয়ানডেতে হয়ে উঠেছিলেন ধারাবাহিকতার প্রতীক। বিশ্বকাপেও তাই তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল আকাশসম। কিন্তু হঠাৎ করেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি, জ্বরের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ খেলতেই পারেননি তিনি।
সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরলেও ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন গিল। চার ইনিংস শেষে মাত্র একটি ফিফটি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। সবমিলিয়ে যখন শঙ্কা জেগেছিল তখনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯২ বলে ৯২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি; আর এবার নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি করে পায়ের নিচের মাটি আরো শক্ত করলেন গিল।
তৃতীয় ওভারেই আরিয়ান দত্তকে ৯৫ মিটার এক ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের আগমনী বার্তা দেন এই ওপেনার। এরপর হয়ে উঠেন আরো আগ্রাসী, লোগান ভ্যান বিকের এক ওভারেই তুলে নেন ১৬ রান। খানিক পরে পল ভ্যান মিকেরেনের এক ওভারে নেন ১২ রান – ফলে মাত্র ২৬ বলেই ৪৭ রানে পৌঁছে যান তিনি।
পুরো টুর্নামেন্টে প্রথমবার রোহিত শর্মার চেয়ে বেশি বিধ্বংসী মনে হয়েছে এই তরুণকে। এমনকি অন্য ম্যাচের চেয়ে বেশি সাবলীল আর আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। যদিও দুর্দান্ত ব্যাটিং শৈলী খুব বেশি সময় প্রদর্শন করতে পারেননি এই ডানহাতি, ৩২ বলে ৫১ রান করে থামতে হয় তাঁকে। অবশ্য বাউন্ডারি লাইনে তেজা নিদামানুরু ওমন দুর্ধর্ষ ক্যাচ না ধরলে ডাচ বোলারদের আরো শাসন করতে পারতেন।
অভিজ্ঞ শিখর ধাওয়ানকে বাদ দিয়ে কেন টিম ম্যানেজম্যান্ট তাঁর ওপর আস্থা রেখেছে সেটাই বিশ্ব মঞ্চে প্রমাণ করে যাচ্ছেন গিল। আসন্ন দিনগুলোতে তিনিই হবেন ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের সবচেয়ে বড় ভরসা সেই বার্তাই দিয়ে যাচ্ছেন।
তবে অভিষেক বিশ্বকাপে বড় ইনিংস খেলতে না পারার আক্ষেপ হয়তো রয়ে গিয়েছে শুভমান গিলের মাঝে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আট রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন, দুই ম্যাচে অর্ধশতক করার পরপরই আউট হয়েছেন আবার একাধিক ম্যাচে সেট হয়েও রান করতে পারেননি।
ক্যারিয়ারের প্রথম বৈশ্বির আসরে বিশেষ পারফরম্যান্স কি তবে সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনালের জন্য তুলে রেখেছেন এই তারকা? উত্তরটা আর কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো জানা যাবে।
সেটা হোক কিংবা নাই হোক – একটা নিজের ব্যাট দিয়ে একটা ঘোষণা আগাম দিয়ে রেখেছেন তিনি। আর সেটা হল, ভারতের ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যৎ যোগ্য হাতেই আছে।