দ্য স্টাইল অব বিরাট

এই মুহূর্তে ক্রিকেট দুনিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বিরাট কোহলি। এটা নিয়ে বোধহয় কারো মনেই তেমন কোন সংশয় নেই। কিংবা এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে আগ্রাসী ক্রিকেটার কে? সেটাও বোধহয় বিরাট কোহলিই হবেন। মাঠে তাঁর শরীরি ভঙ্গি, আগ্রাসন যেন অনন্য। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএলের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই।

এই লিগেরও অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন কোহলি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর এই অধিনায়ক আইপিএলে এখন অবধি খেলেছেন ২০৬ টি ম্যাচ। সেখানে ৩৭.৩৯ গড়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৬২৪৪ রান। আগ্রাসী ব্যাটিং করে স্ট্রাইকরেট ধরে রেখেছেন ১৩০ এর উপরে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আইপিএলে কতটা সফল এই ব্যাটসম্যান।

যদিও এবারের আসরটা খুব একটা ভালো কাটছে না ভারতের এই অধিনায়কের। নিজের স্বভাবসূলভ ব্যাটিংটা করতে পারছেন না তিনি। এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ৩৬৬ রান করলেও কোহলির আগের সেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংটা খুঁজে পাচ্ছেন না ভক্তরা। বিধ্বংসী সেই ইনিংস গুলো আর আসছে না কোহলির ব্যাট থেকে। বিশ্বকাপের আগে তাই কোহলিকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তেই পারে ভারত।

তবে আইপিএলেও যে তিনি কতটা আগ্রাসী সেটা তাঁর সেঞ্চুরি গুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়। আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক তিনি। এই লিগে এখন অবধি তাঁর ঝুলিতে আছে ৫ টি সেঞ্চুরি। তাঁর চেয়ে একটি বেশি সেঞ্চুরি নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে আছেন ক্রিস গেইল।

আমরা এবার একটু কোহলির সেঞ্চুরিগুলোতে নজর দিতে চাই। আইপিএলে যেই পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছেন তাঁর প্রত্যেকটিতেই পৌছে ছেন বাউন্ডারি মেরে। অর্থাৎ শতরানের মাইলফলক ছোয়ার মুহূর্তেও একইরকম আগ্রাসণ থাকে কোহলির ব্যাটে। নার্ভাস নাইন্টিজ শব্দটা তাঁর কাছে শুধুই একটি ক্রিকেটীয় টার্ম।

আইপিএলে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরিটি এসেছিল গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ৬৩ বলে কোহলির ব্যাট থেকে এসেছিল সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরিটি করতে কোহলি মেরেছিলেন ১১ টি চার ও ১ টি ছয়। নিজের প্রথম সেঞ্চুরিতেও শতরানে পৌছেছিলেন বাউন্ডারি মেরে। যদিও সেই ম্যাচে তাঁর এই সেঞ্চুরির পরেও জয় এনে দিতে পারেননি  ব্যাঙ্গালুরুকে।

কোহলি আইপিএলে তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি করেছিলেন পুনে সুপারজায়ান্টাসের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে আরো বিধ্বংসী ছিলেন তিনি। মাত্র ৫৮ বলে খেলেছিলেন অপরাজিত ১০৮ রানের ইনিংস। সেদিনও বাউন্ডারি মেরেই পৌছেছিলেন সেঞ্চুরির দরজায়। সেদিন অবশ্য জয় নিয়ে ফিরেছিল তাঁর দল।

কোহলি নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরিটিও পেয়েছিলেন গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে। ক্রিস গেইল দ্রুত আউট হয়ে যাবার পর কোহলি ও ডি ভিলিয়ার্স বিধ্বংসী এক জুটি গড়েন। কোহলি মাত্র ৫৫ বলে খেলেন ১০৯ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস। সেখানে ছিল ৫ টি চার ও ১ টি ছয়ের মার। সেদিনও শতরানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন বাউন্ডারি দিয়েই।

ওদিকে কিংস এলিভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ৫০ বলেই খেলেছিলেন ১১৩ রানের ইনিংস। ওই ইনিংসটিতে ছিল ১২ টি চার ও ৮ টি ছয়ের মার। এটি ছিল আইপিএলে তাঁর চতুর্থ সেঞ্চুরি। এবারো কোহলি পৌছেছিলেন নিজের সহজাত ভঙ্গিতেই। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে।

আইপিএলে তাঁর শেষ ও পঞ্চম সেঞ্চুরিটি এসেছিল ২০১৯ সালে। এরপর আর কোন সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। কলকাতা নাইটা রাইডার্সের বিপক্ষে সেদিন সেঞ্চুরিটি করেছিলেন মাত্র ৫৮ বলে। মেরেছিলেন ১২ টি চার ও ৮ টি ছয়। এবারো সেঞ্চুরি এসেছিল বাউন্ডারি দিয়েই। বাউন্ডারি ছাড়া যেনো সেঞ্চুরিই করেন না এই ব্যাটসম্যান।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link