বুড়োদের দল, পান্ডব সিন্ডিকেট – ড্রাফট শেষে ফরচুন বরিশালের দিকে এমন সব ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য ভেসে এসেছিল। অথচ টুর্নামেন্ট শেষে চ্যাম্পিয়ন দল এখন তাঁরা, প্রথমবারের মত বিপিএলের শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে দলটি। আর এই সাফল্যে অসামান্য অবদান রয়েছে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের।
অধিনায়ক তামিমকে নিয়ে বিশেষ কিছু বলার আসলে দরকার নেই। ১৫ ইনিংস খেলে করেছেন ৪৯২ রান, কোন সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ফিফটি হাঁকিয়েছেন তিনটি। এছাড়া আরো অনেকবারই জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন এই বাঁ-হাতি।
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের পুরষ্কারটা তাই তাঁর হাতেই গিয়েছে। সেই সাথে প্রথমবারের মত বিপিএলে টুর্নামেন্টসেরা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। অধিনায়কত্বেও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন এই ওপেনার। সবমিলিয়ে পরিপূর্ণ একটা আসর কাটিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে তৃতীয়বারের মত ফাইনাল খেলা মুশি পেয়েছেন নিজের প্রথম বিপিএল শিরোপা। ব্যক্তিগত সাফল্যেও উজ্জ্বল তিনি। এই আসরের সেরা ব্যাটারদের একজন এই উইকেটরক্ষক, করেছেন ৩৭৯ রান। তাঁর কাঁধে ভর করেই কোয়ালিফায়ারের বাঁধা ডিঙিয়েছিল বরিশাল, যদিও টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই মি. ডিপেন্ডেবল সত্যিকারের ভরসা হয়ে ছিলেন।
এছাড়া মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে এসেছে ২৩৭ রান, সংখ্যাতত্ত্বে তাই তাঁকে খুব একটা এগিয়ে রাখা যাবে না। কিন্তু প্রয়োজনের সময় তিনি ঠিকই জ্বলে উঠেছেন, ‘ইম্প্যাক্টফুল’ পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। লোয়ার মিডল অর্ডারে তাঁর উপস্থিতি নির্ভার করেছে উপরের দিকের ব্যাটারদের।
কাগজ-কলমের হিসেব দূরে থাক; সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে যেভাবে একটা দল হয়ে খেলেছে ফরচুন বরিশাল সেটার কৃতিত্ব এই তিনজনেরই। প্রথম চার ম্যাচের তিনটি হেরে যখন দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল দলটি তখন নতুন করে লড়াইয়ের জ্বালানি জুগিয়েছিলেন তাঁরা। অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে এগিয়ে নিয়েছেন দলকে, পথ দেখিয়েছেন সামনে থেকে।
তাই তো খান সাহেব পুরষ্কারের মঞ্চে ডেকে নিয়েছেন প্রিয় দুই সতীর্থকে, আরাধ্য ট্রফিটা উৎসর্গ করেছেন তাঁদেরকে। কেননা দু’জনের অবদানের কথা তাঁর চেয়ে ভাল কেউই জানে না।
তামিম আর মুশির জন্য আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি এখন অতীত, রিয়াদও সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২২ সালে। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বুড়িয়ে যাওয়া এই তারকাদের নিয়েই দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিনিধিরা একটা ত্রয়ী গড়েছিল। এরপর সেই ত্রয়ীর উত্তাপে পুড়ে গিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, রংপুর রাইডার্সের মত হট ফেভারিট দলগুলো।