২০২৩ সাল, বাবর সাম্রাজ্যের অধ:পতন

অজি দূর্গে পাকিস্তানের এমন অসহায় আত্মসমর্পণের দিন ব্যর্থতার ডুব সাগরে পতিত হয়েছেন দলের সেরা ব্যাটার বাবর আজমও। প্রথম ইনিংসে ২১ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে নামের পাশে মাত্র ১৪ রান যোগ করতে পেরেছেন এ ব্যাটার। 

পার্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬০ রানের বড় হারের সম্মুখীন হয়েছে পাকিস্তান। অজি দূর্গে পাকিস্তানের এমন অসহায় আত্মসমর্পণের দিনে ব্যর্থতার ডুব সাগরে পতিত হয়েছেন দলের সেরা ব্যাটার বাবর আজমও। প্রথম ইনিংসে ২১ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে নামের পাশে মাত্র ১৪ রান যোগ করতে পেরেছেন এ ব্যাটার।

অবশ্য বড় রান না পেলেও ব্যাটার হিসেবে অনন্য এক মাইলফলকে নিজের নাম লিখিয়েছেন বাবর আজম। ছাপিয়ে গিয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক রথী-মহারথীকেও। পার্থ টেস্টের তৃতীয় দিনে দলের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২১ রান ফিরলেও পাকিস্তানের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন বাবর।

আর এ মাইলফলক ছোঁয়ার পথে তিনি খেলেছেন ৩০১ ইনিংস। যেটি পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে কম ইনিংসে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার নতুন রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল জাভেদ মিয়াদাদের। পাকিস্তানের কিংবদন্তি এই ব্যাটার ১৩০০০ রান পেরিয়েছিলেন ৩০৫ ইনিংসে। এ ছাড়া মোহাম্মদ ইউসুফ ৩২২, ইনজামাম-উল-হক ৩৫২ এবং ইউনিস খান ৩৭২ ইনিংসে ১৩০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন।

তবে পাকিস্তানের নতুন নতুন কীর্তি গড়লেও চলতি বছরটা ঠিক ‘বাবরসুলভ’ হয়ে শেষ হচ্ছে না। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর চাপের মুখে নেতৃত্ব ছেড়েছেন। তবে নেতৃত্বের চাপহীন থাকার পরও ঠিক ছন্দে ফিরতে পারছেন না এ ব্যাটার। চলতি বছরে ওয়ানডেতে ২৪ ইনিংসে ৪৬.৩০ গড়ে ১০৬৫ রান করেছেন এ ব্যাটার।

পরিসংখ্যানের মাপকাঠিতে যা দুর্দান্তই বটে। তবে নামটা যখন বাবর, তখন এই চিত্রটা বেশ গড়পড়তা। পরিসংখ্যান বলছে, সর্বশেষ ২০১৮ সালে ওয়ানডেতে পঞ্চাশের নিচে গড়ে ব্যাটিং করেছিলেন বাবর। এরপরের চার বছরে তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল যথাক্রমে, ৬০.৬৭, ১১০.৫০, ৬৭.৫০, ৮৪.৮৮। অথচ এ বছর শেষে এই ফরম্যাটে গড় নেমে গেছে ৪৬.৩০-এ। অর্থাৎ গত বছর যেখানে তিনি প্রায় ৮৫ গড়ে ব্যাটিং করেছিলেন, সেখানে এ বছর তিনি শেষ করছেন প্রায় অর্ধেক গড়ে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে তবুও গড়পড়তা ব্যাটিং করছেন। তবে লাল বলের ক্রিকেটে এ বছর রীতিমত ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছেন বাবর আজম। যদিও ২০২৩ সালে ৪ টি মাত্র টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন এ ব্যাটার। আর সেই ৪ টেস্টে ৭ ইনিংসে তিনি রান করেছেন মাত্র ১৬৩। নেই কোনো সেঞ্চুরি কিংবা হাফ-সেঞ্চুরি। অথচ আগের বছর শেষ করেছিলেন ৪ সেঞ্চুরি ও ৭ হাফসেঞ্চুরিতে। ৬৯.৬৫ গড়ে ২০২২ সালটা রাঙিয়েছিলেন ১১৮৪ রান করে।

অর্থাৎ দারুণ ছন্দে থাকা বাবর খেই হারালেন এই বছরে এসেই। পাকিস্তানের এ ব্যাটিং সেনসেশনের পারফরম্যান্স গ্রাফ নিম্নদিকে ধাবিত হয়েছে এই ২০২৩-এ এসেই। এখান থেকে কি বাবর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন? সময়ই হয়তো তা বলে দিবে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই মুহূর্তে যে বড্ড কঠিন একটা সময়ের মধ্য দিয়ে তিনি যাচ্ছেন, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...