দিন বদলের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হয়ে তিনি বদলে ফেলতে চেয়েছিলেন দেশের ক্রিকেটকে। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই কি তিনি সে পথে হাঁটছেন? নাকি গতানুগতিক পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছেন অস্পষ্ট এক সমাপ্তির দিকে।
ফারুক আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর বেশ বড় এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অকস্মাৎ সরিয়ে দিয়েছেন হেডকোচ চান্ডিকা হাতুরুসিংহকে। এই সিদ্ধান্ত তুলেছে নানামুখী প্রশ্ন। ফারুক আহমেদের সাথে ব্যক্তিগত একটা বিরোধ ছিল হাতুরুসিংহের। সেই বিরোধিতার রাগটাই তিনি তুলেছেন বলে ধারণা অনেকের।
যদিও ফারুক আহমেদ বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন ব্যক্তিগত নয়, দলের স্বার্থে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে চান্ডিকা হাতুরুসিংহকে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? দলের স্বার্থ আসলে কি? বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের স্বার্থ কি আদতে কেউ দেখে?
একজন কোচের সাথে দলের চুক্তি হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। তিনি নিশ্চয়ই সে অবধি দল পরিচালনার একটা ছক একে ফেলেছিলেন। হুট করেই এসেছে নতুন কোচ। তাকে আবার দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত সময়। মাত্র সাড়ে পাঁচ মাসের দায়িত্ব পাওয়া ফিল সিমন্সের কাছ থেকে দারুণ কিছু প্রত্যাশা করাও তো বোকামি।
শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তি কেন আগে দেওয়া হল না? নতুন সভাপতি এসেই কেন সরিয়ে দিলেন হেডকোচকে? এমন প্রশ্ন ওঠা তো স্বাভাবিক। উঠছেও এসব প্রশ্ন। কিন্তু এসবের সঠিক উত্তর কেবল তাদেরই জানা। শুধু যে হেড কোচকে সরিয়ে দলের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলেছে বিসিবি, তা কিন্তু নয়।
সাকিব আল হাসানের বিষয়ে স্পষ্ট কোন পদক্ষেপ নিতে পারছে না ক্রিকেট বোর্ড কিংবা নব নিযুক্ত বোর্ড প্রধান। একবার জানা যাচ্ছে সাকিব খেলবেন, আবার জানা যাচ্ছে তিনি খেলবেন না। যদিও রাজনৈতিক বিষয় এখানে যুক্ত। তবুও বিসিবি-এর নিশ্চয়ই এখতিয়ার রয়েছে রুঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। তেমন সিদ্ধান্ত নিতেও অপারগ নব্য বিসিবি বোর্ড। তাতে করে মাঠের খেলায় ধুঁকতে হচ্ছে দলকে।
তাই তো শঙ্কা দিচ্ছে উঁকি। নতুনের ঝাণ্ডা উড়িয়ে পুরনো পথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে বিসিবি। তাতে করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য নিশ্চয়ই লাভের কিছু নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট দোটানার জীবন নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটবে। দর্শকদের হতে হবে হতাশ। একটা পর্যায়ে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
যতই খেলোয়াড়রা বলুক না কেন, দলের বাইরে, মাঠের বাইরে ঘটে যাওয়া প্রতিটা ঘটনাই খেলোয়াড়দের প্রভাবিত করে। যার প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সে। বাংলাদেশের পারফরমেন্সেও তেমন দৃশ্যই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসবের শেষ কোথায়, কেউ কি বলতে পারেন?