হাতে সময় বাকি ছয় মাস। এরপরই শুরু হবে আরও একটি বিশ্বকাপের ডামাডোল। যুক্তরাষ্ট্র্য ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। র্যাংকিংয়ের অবস্থানের কল্যাণেই সরাসরি বাংলাদেশ দল অংশ নেবে সেই বিশ্বকাপে।
যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশের তেমন প্রত্যাশা থাকে না। কেননা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বাংলাদেশ দল মোটেও ধারাবাহিক নয়। র্যাংকিংয়ে দলের অবস্থান নবম স্থানে। স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার চাদর ঘিরে ধরছে না বাংলাদেশকে। তাও আবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ঠিক ভরাডুবির পরই দর্শকদের খানিকটা অনীহা জন্ম নিতে শুরু করেছে।
তবে দর্শকদের অনীহা থাকলেও তো মুখ ফিরিয়ে নিতে পারছে না বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও তেমন একটা তোড়জোড় নজরে আসছে না। বিগত বিশ্বকাপের ব্যর্থতার সুরতহাল করতেই ব্যস্ত গোটা ক্রিকেট বোর্ড। তবে এর মাঝেই অন্তত প্রস্তুতি নেওয়া উচিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের।
বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের হাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ রয়েছে ১১টি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে তিনটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কাকে ঘরের মাঠে আতিথিয়েতা দেবে তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্যে। তবে সেটা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের পর।
এরপর বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের আসবে জিম্বাবুয়ে। তাদের বিপক্ষে ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে টাইগাররা। এই হচ্ছে বাংলাদেশের দল গঠনের সম্ভাব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবার সুযোগ। তাছাড়া বিপিএলকে নিশ্চয়ই ভাবনায় রাখছেন নির্বাচকরা।
তবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান যে অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন। সেটা খানিকটা দুশ্চিন্তার উদ্রেক ঘটাতে পারে নিশ্চয়ই। ইনজুরির কারণে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেলতে পারছেন না সাকিব। এরপর আবার নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যস্ত তিনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ যদিও নির্বাচনের পরই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, তবুও সাকিবের পূর্ণ মনোযোগ বিপিএলে থাকা নিয়ে সংশয় হওয়াও স্বাভাবিক।
এমন পরিস্থিতিতে দল নিয়ে ঠিক কি ভাবছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট সেটা বলাও মুশকিল। তাছাড়া বাংলাদশের টি-টোয়েন্টি দলটাও যে একেবারে গোছানো তেমনটি নয়। অন্যদিকে দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সংযুক্তির সম্ভাবনা ঠিক কতটুকু তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।
তবে বাংলাদেশ দলের উচিত নিজেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দলের একটা হিল্লে করা। দল কাদেরকে বিবেচনায় রাখছে, কারা থাকছেন না আলোচনায় সেটাও খানিকটা স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত। অন্তত খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে দলের সুযোগ করে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে সহয়তা করবে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট অবশ্য অনেকটাই মোমেন্টামের খেলার। নির্দিষ্ট সময়ে ফর্মে থাকা খেলোয়াড় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন যেকোন সময়ে। সেদিক বিবেচনায় বিপিএলে পারফরম করাদেরও সুযোগ হয়ত দিতে চাইবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। সেক্ষেত্রে অবশ্য একটা দিক নজরে রাখা প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা খেলোয়াড়দেরই প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। একেবারে তরুণ কাওকে বিশ্বকাপের মঞ্চে ঠেলে দিলে, তা হতে পারে সেই খেলোয়াড়ের জন্যে হুমকি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই হয়ত এসবের একটি রুপরেখা তৈরি করে ফেলতে চাইবে সময় থাকতেই। নতুবা আরও এক ভরাডুবিতে ক্রিকেট চলে যাবে তলানিতে।