খেলাধুলার দুনিয়ায় প্রতিভা আর পরিশ্রম থাকার পরও একটা সুযোগের জন্য সংগ্রাম করার চেয়ে হতাশাজনক আর কিছু হতে পারে না। তবে, এমন নজীর দুনিয়া জুড়েই বিস্তর পাওয়া যায়, পাওয়া যায় ভারতীয় ক্রিকেটেও। বিশ্বের অন্যতম সেরা অধিনায়কদের একজন মহেন্দ্র সিং ধোনির সময়েও এই ঘটনা বেশ কয়েক দফায় ঘটেছে।
ভারতীয় জাতীয় দলে খেলার সামর্থ্য থাকার পরও তাঁরা টিকতে পারেননি। তেমনই কয়েকজনকে নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। একটা বিষয় এখানে বলে রাখা জরুরী যে, সবগুলো ক্ষেত্রে যে কেবল ধোনিরই ভূমিকা ছিল, তেমন কিন্তু না। বরং পারফরম্যান্স ও টিম কম্বিনেশন-সহ নানা কারণেই তাঁরা বাদ পড়েছেন।
- রবিন উথাপ্পা
এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ভারতীয় দলে কখনো নিয়মিত হতে পারেননি ধোনির ধারাবাহিকতার কারণে। উত্থাপ্পা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভারতের বড় নাম। কিন্তু, জাতীয় দলের হয়ে তাঁর বলার মত অর্জন নেই।
৪৬ টি ওয়ানডে আর ১৩ টি টি-টোয়েন্টি খেলতে পারেন তিনি। যদিও, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএলে) তিনি বিস্তর রান করে গেছেন। সেই পারফরম্যান্সের সুবাদে ফিরলেও পারেননি স্থায়ী হতে।
- ধাওয়াল কুলকার্নি
প্রতিভা যতই তাঁর অঢেল হোক না কোন, পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় ছিল ততটাই ঘাটতি। যদিও, ঘরোয়া ক্রিকেটে তার বিধ্বংসী রূপ অন্যরকম পূর্বাভাসই দিয়েছিল। ১২ ওয়ানডে আর দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি।
১২ ওয়ানডেতে ১৯ উইকেট – ধোনির টিম ম্যানেজমেন্ট হয়তো আরেকটু সুযোগ দিতে পারতো ধাওয়ালকে! তাই, অনেকটা অকালেই হারিয়ে গেছেন সম্ভাবনাময় এই ক্রিকেটার।
- ওয়াসিম জাফর
ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের মহীরূহ তিনি। রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তার। স্বয়ং শচীন রমেশ টেন্ডুলকারও তার পরিশ্রমে মুগ্ধ ছিলেন। কিন্তু, ধোনির নেতৃত্বে জাতীয় দলে দীর্ঘস্থায়ী হননি ওয়াসিম জাফর।
৩১ টি টেস্ট ও দু’টি ওয়ানডেতে কেবল তিনি সুযোগ পান। এখন মাঠের ক্রিকেট ছেড়ে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন কোচিংয়ের সাথে। তবে, অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে বড় পারফরমার হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল তাঁর মধ্যে।
- মনোজ তিওয়ারি
নিজের সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও কখনো জাতীয় দলে নিয়মিত সুযোগ পাননি মনোজ তিওয়ারি। ১২ টি ওয়ানডে আর দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলে একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি করেন।
পশ্চিমবঙ্গের এই ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় ১৫ হাজারের মত রান করেছেন। ‘ভারতীয় দল কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়’ – টুইটারে ধোনিকে উদ্দেশ্য করে এমন বেফাঁস মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। কালক্রমে আইপিএল দলেও জায়গা হারানো শুরু করেন তিনি।
- নামান ওঝা
একটি করে টেস্ট ও ওয়ানডে, আর মাত্র দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাননি। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজারের ওপরে রান করা একজনের জন্য এই সামান্য সুযোগ যথেষ্ট ছিল না।
অন্তত, তাঁকে আরো কিছুদিন টেস্টে বাজিয়ে দেখা দরকার ছিল। ধোনির নেতৃত্বে কখনোই নামান নিজেকে বিকশিত করতে পারেননি, কারণ তিনিও ধোনির মত উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ছিলেন। আসলে ধোনি থাকায় উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান প্রয়োজনও ছিল না ভারতের। একই কথা, দীনেশ কার্তিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ধোনি থাকায় কার্তিকের ক্যারিয়ারও বিকশিত হয়নি।